×

মুক্তচিন্তা

নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করতে সরকারের অনন্য উদ্যোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২০, ০৮:০১ পিএম

দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের ওপর জোর দিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে কক্সবাজারে উদ্বাস্তু হিসেবে বসবাস করা ৬০০ পরিবারকে আশ্রয়ণকেন্দ্রে পুনর্বাসন করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রথম ধাপে নির্মিত ২০টি ভবনের উদ্বোধন করেন এবং জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারের মাঝে এসব ভবনের চাবি হস্তান্তর করেন। এমন উদ্যোগে কিছু উদ্বাস্তু মানুষের কষ্টের অবসান ঘটল। আমরা এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জনাই। খুরুশকুলে বাঁকখালী নদীর তীরে ২৫৩ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা এ বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণকেন্দ্র। প্রথম ধাপে উদ্বোধন হওয়া ভবনগুলোতে ফ্ল্যাট পেয়েছে ৬০০টি পরিবার। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম ধাপে নির্মিত পাঁচতলা ২০টিসহ মোট ১৩৯ ভবন নির্মাণ করা হবে এ প্রকল্পের আওতায়। প্রতিটি পাঁচতলা ভবনে থাকছে ৪৫৬ বর্গফুট আয়তনের ৩২টি করে ফ্ল্যাট। সব ভবন নির্মিত হলে উদ্বাস্তু জীবনের অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশ ছেড়ে সাজানো পরিপাটি দালানে উঠবে মোট প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পরিবার। ১ হাজার ১ টাকা নামমাত্র মূল্যে এসব ফ্ল্যাট হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি ফ্ল্যাটে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সিলিন্ডারের সুবিধা থাকবে। প্রতিটি ভবনে থাকবে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর বাস্তুহারা এসব মানুষ কক্সবাজারের ফদনার ডেইল, কুতুবদিয়া পাড়া ও সমিতি পাড়ায় মানবেতর জীবন কাটিয়ে আসছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। এটাই দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য দেশের প্রথম আশ্রয়ণ প্রকল্প। এটি বিশ্বের বৃহত্তম জলবায়ু পুনর্বাসন প্রকল্প বলা যায়। ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার পর জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয়ণের এ উদ্যোগ মানবিকতার ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের নজির হয়ে থাকবে। এছাড়া দেশের অসহায় মানুষদের জন্য একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প, গৃহায়ন তহবিল প্রকল্পের বাস্তবায়ন, নিজস্ব ঘরেই ফেরার এক কর্মসূচি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও সরকার বাস্তবায়ন করছে। পাশাপাশি এসব মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা এবং পুনর্বাসিত পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা বিধানসহ তাদের শিক্ষা ও আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানেও সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৮-৯ শতাংশ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। সমাজের দরিদ্র এসব মানুষ কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনার স্বপ্নও দেখতে পারে না। এরূপ অবস্থায় প্রতি বছরই কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমতাবস্থায় সরকার দেশের সব মানুষের জন্য নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। একটি স্থায়ী ও টেকসই ঘর একটি পরিবারকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে ওঠাতে কার্যকরী ভ‚মিকা রাখতে পারে। আশা করছি সরকারের এমন উদ্যোগ নিয়মিত থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App