প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের আড়াই হাজার টাকা পাইয়ে দেয়ার নাম করে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার দুই শতাধিক মানুষের কাছে থেকে এক হাজার থেকে ১২শ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপ্লব (৩২) নামে এক যুবক। বিনিময়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ২৫শ টাকা পাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা। প্রতারণার জাল বিছিয়ে অসহায় মানুষজনকে ঠকিয়ে অতঃপর প্রশাসনের জালে আটকা পড়েছেন ওই প্রতারক যুবক। ঠাঁই হয়েছে কারাগারে।

সহজ সরল অসহায় দরিদ্রদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রতারক বিপ্লব আশ্বাস দিয়েছেন টাকা পাইয়ে দেয়ার। জানিয়েছেন সরকারের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে তিনি নিযুক্ত আছেন এই কাজে। এখানেই থেমে না থেকে অসহায় সেইসব মানুষদের দিয়ে নিজেই করিয়েছেন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। যার পুরোটাই ভুয়া। ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পেমেন্ট রশিদে এবং আরো নানা রকমের নকল কাগজপত্রে এই দুই নম্বরি কাজ চালিয়ে আসছিলেন প্রতারক বিপ্লব।

এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতারক বিপ্লবকে শনিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে ৬ মাস কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত বিপ্লব দৌলতপুরে আড়িয়া ইউনিয়নের পারশিতলাই গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে। সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট আজগর আলী ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান পরিচালনা করেন।

এ দিন উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের জয়ভোগা এলাকায় স্থানীয়দের মধ্যে প্রতারণা চালানোর সময় বিপ্লবকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়া হয়। তার কাছ থাকা বিভিন্ন রকম ভুয়া কাগজপত্রসহ ২০-২৫টি জাতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ। বিকেলে সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজগর আলী ঘটনাস্থলে যান এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই প্রতারকের জেল-জরিমানা করেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজগর আলী বলেন, বিপ্লব খুব কৌশল করে স্মার্টলি প্রতারণার মাধ্যমে অসহায়দের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিলেন। গ্রামের সহজ সরল মানুষদের মাঝে বিপ্লব সহজেই প্রতারণার জাল বিছাতে সক্ষম হয়েছেন। এ ধরনের অপরাধ শনাক্তের বিষয়ে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনে বিপ্লকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২ হাজার ৪শ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, দৌলতপুর উপজেলার তালিকায় থাকা সাড়ে ১২ হাজারের মধ্যে ৪ হাজার ৩৪ জন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আড়াই হাজার টাকা করে পেয়েছেন। সাড়ে ৭ হাজার মানুষই এই অর্থ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। বিভিন্ন তথ্য ভুল হওয়া, নিজ নামে সিমকার্ড না থাকাসহ আরো কিছু অসঙ্গতির কারণে যারা টাকা পাননি তাদের তথ্য সংশোধনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর নগদ উপহার থেকে বঞ্চিত এখানকার ৭ হাজার ৩৩৫ জনের নামে এই টাকা পৌঁছে যাবে বলে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে।