×

রাজনীতি

রাষ্ট্রায়ত্ত রেখেই পাটকল আধুনিকায়নের সুপারিশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২০, ০৮:৫৭ পিএম

রাষ্ট্রায়ত্ত রেখেই পাটকল আধুনিকায়নের সুপারিশ

ওয়ার্কার্স পার্টির আয়োজনে সভা।

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) পরিচালনার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে রেখে পাটকলগুলোর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন ও আধুনিকায়নের সুপারিশ করেছেন বক্তারা। দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে লোকসানে পড়া রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ না করার কথাও বলেছেন।

আজ শনিবার (১৮ জুলাই) বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির আয়োজনে ‘রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের আধুনিকায়ন, না ধ্বংস সাধন? পাটখাত সুরক্ষায় ভাবনা ও করণীয়’ ভার্চুয়াল সেমিনারে এই মত আসে।

এতে প্রতিটি রাষ্ট্রের মালিকানায় রেখে বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণের মতো কেন্দ্রীভূত কোনো ব্যবস্থার বদলে প্রতিটি পাটকলকে আলাদা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনার সুপারিশ করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। পাটকলগুলোর লোকসানের পেছনে বিজেএমসির কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি ও দুর্নীতিকে দায়ী করে তিনি বলেন, গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে যে টাকা দিয়ে আমরা শ্রমিকদের বিদায় করছি, তার ধারে কাছে টাকা বরাদ্দ করলেই আমরা আধুনিক যন্ত্রপাতি আনতে পারব। তিনি পিপিপির পরীক্ষা স্থগিত করার কথা বলেন।

ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, সারা বিশ্বে যখন পাটজাত পণ্যের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে, পাটের বহুমুখীকরণের সুযোগ রয়েছে, তখন পাটকল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। কেন্দ্রীভূত বিজেএমসি পদ্ধতির অবসান ঘটিয়ে প্রত্যেকটা পাটকলকে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং পাটকল আধুনীকায়ন করার কথা বলেন তিনি।

অর্থনীতির অধ্যাপক এস এম আকাশ বলেন, ‘পারফরম্যান্স কন্ট্রাক্টের’ ভিত্তিতে পরীক্ষামূলকভাবে পাঁচ বা ১০টা কারখানা চালু করে যদি লাভজনক করা যায়। তাহলে লাভের টাকা দিয়ে পুরনো পাটকল পাল্টে পণ্যের বহুমুখীকরণের উপযোগী নতুন পাটকল করা যাবে। বাংলাদেশে উৎপাদিত পাট পণ্যের ৬০ শতাংশ নিজেদের বাজারে বিক্রি করাসহ চীনের পক্ষ থেকে পাটকলগুলোকে নবায়নের প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এমন জি-টু-জির ভিত্তিতেও পাটকল পরিচালনা করা যেতে যারে। পিপিপির মাধ্যমে সরকারি পাটকলগুলো পরিচালনা করলে দেশের টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন এমএম আকাশ।

সরকারি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রপ্তানি বাজারে ধস নামবে বলে মনে মন্তব্য করেন পাটকল কমিশনের সাবেক সদস্য খালেদ রব। তিনি বলেন, বিজেএমসি ২০১৭-১৮ অর্থকবছরে ৮৬-৮৭ হাজার টন পাট পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তার আগের বছর করেছে ৮৮ হাজার টন। এখন সরকারি পাটকলগুলো উৎপাদন বন্ধ করে দিলে এই পরিমাণ রপ্তানি কোথা থেকে হবে? রপ্তানির বাজার একবার হারালে তখন বিএমআরই (আধুনিকায়ন) করেও কোনো লাভ হবে না।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফাসহ ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা।

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা তার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় পাট শিল্প রক্ষায় পাটশিল্প রক্ষার বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করে সরকারি খাতের পাটকলগুলোর খোলনলচে পালটে ফেলা, অর্ধ শতবর্ষ পুরনো যন্ত্রপাতি সরিয়ে আধুনিক ও সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্বলিত মেশিন প্রতিস্থাপন, মৌসুম শুরুর পূবেই প্রয়োজনীয় অর্থ যোগান, পাট পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রণোদনা দেয়াসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App