×

আন্তর্জাতিক

ফাহিম হত্যায় গ্রেপ্তার কে এই হাসপিল?

Icon

nakib

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২০, ০৯:০০ পিএম

ফাহিম হত্যায় গ্রেপ্তার কে এই হাসপিল?

টেরেস ডেভোন হাসপিল

ফাহিম হত্যায় গ্রেপ্তার কে এই হাসপিল?

টেরেস ডেভোন হাসপিল

ফাহিম হত্যায় গ্রেপ্তার কে এই হাসপিল?

হাসপিল ও ফাহিম

রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা, সাবেক বিনিয়োগকারী তরুণ প্রযুক্তিবিদ ফাহিম সালেহ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত টেরেস ডেভোন হাসপিল আসলে কে? কীভাবেই বা তিনি ফাহিমের সঙ্গে কাজে যুক্ত হয়েছিলেন? কেনই বা ফাহিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন? হাসপিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর এমন প্রশ্ন উঠেছে চারদিক থেকে। ফাহিম হত্যাকাণ্ডের পর সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে হাসপিলকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কোনো অপরাধী গ্রেপ্তার হলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিস্তারিত পরিচয় জানানো হয় না। তাই হাসপিলের বিষয়ে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়নি পুলিশের কাছ থেকে। তবে অভিযুক্ত হাসপিল নিজেকে ‘উদ্যোক্তা’ হিসেবে পরিচয় দিতেন। ফাহিমের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করলেও পরে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ২১ বছর বয়সী তরুণ হাসপিল প্রতারক চরিত্রের ছিলেন। কেননা, তিনি ফাহিমের এক লাখ ডলার চুরি করেছিলেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, ফাহিম তার কাছে আরও অনেক ডলার পেতেন। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, হাসপিল লং আইসল্যান্ড হাইস্কুল থেকে গ্রাজুয়েশন করেছেন। তবে ডেইলি নিউজ বলছে, গ্রাজুয়েশন শেষ করতে পারেননি হাসপিল। ধীরে ধীরে তার মধ্যে প্রতারণার অভ্যাস গড়ে উঠেছিল। তবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত আর কিছু জানাতে চাচ্ছে না পুলিশ। [caption id="attachment_232584" align="aligncenter" width="700"] টেরেস ডেভোন হাসপিল[/caption] অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি আদালতে জানান, হ্যাসপিল তরুণ প্রযুক্তিবিদ ফাহিমের অন্তত ৯০ হাজার মার্কিন ডলার চুরি করেছিলেন। ফাহিম তখন তাকে নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করেছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি। বরং কিস্তিতে অর্থ ফেরত দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এনওয়াইপিডির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান রডনি হ্যারিসন জানিয়েছেন, চুরি করা অর্থের পাশাপাশি হাসপিল আরও বড় অঙ্কের অর্থ ফাহিমের কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তথ্য পাওয়া গেছে, তরুণ মেধাবী প্রযুক্তিবিদ ফাহিমের সঙ্গে হাসপিল কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মূলত একটি প্রতিযোগিতা থেকে। সেটাও ২০০৯ সালের কথা। তখন প্র্যাঙ্ক ডায়াল নামের একটি মজার ওয়েবসাইট তৈরি করেন ফাহিম। সেই ওয়েবসাইটে কাজ করার জন্য ওয়েব ডিজাইনের প্রতিযোগিতায় টিকে গিয়েছিলেন হাসপিল। এরপর তাকে নিজ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেন ফাহিম। এবিসি বলছে, হাসপিল ফাহিমের অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিতে চিফ অব স্টাফ হিসেবেও যোগ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবেও কাজ করছিলেন। ফাহিম মূলত প্রযুক্তি জগতে নিজের পথচলা শুরু করেন ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে। এরপর ধীরে ধীরে নিজেকে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি পাঠাওয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের লোয়ার ইস্ট সাইডে নিজের বিলাসবহুল বাসায় থাকছিলেন ফাহিম। তবে নির্মমভাবে সেই বাসাতেই তাকে খুনের শিকার হতে হয়। স্থানীয় সময় ১৪ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে খুন হন ফাহিম। [caption id="attachment_232585" align="aligncenter" width="700"] টেরেস ডেভোন হাসপিল[/caption] খুন হওয়ার দিন দুপুর দেড়টার দিকে সিসিটিভিতে ফাহিমকে সর্বশেষ দেখা যায়। ওই সময় একটি ব্যাগ হাতে সন্দেহভাজনকেও দেখা যায়। তারা লিফটের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, ফাহিম কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে খুনির দিকে তাকান। এরপর লিফটে দুজন একসঙ্গে উঠে যান। ফাহিম সাত-তলায় নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকতে গেলেই তাকে আক্রমণ করে খুনি। পুলিশ জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে ফাহিমকে কাটা হয়েছে। করাতটি পাশেই পড়ে ছিল। শরীরের বিভিন্ন অংশ একটি ব্যাগে ভরা ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হাসপিলকে ‘সেকেন্ডে ডিগ্রি মার্ডারে’ অভিযুক্ত করা হয়েছে। মেধাবী প্রযুক্তিবিদ ফাহিমের জন্ম ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রামে। তার বাবা সালেহ উদ্দিন বড় হয়েছেন চট্টগ্রামে আর মা নোয়াখালীতে। ফাহিম পড়াশোনা করেছেন ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে আমেরিকার বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে। থাকতেন নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে। পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও নাইজেরিয়া এবং কলম্বিয়ায় এমন আরও দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানির মালিক ছিলেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App