×

সারাদেশ

আক্রোশ থেকেই এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২০, ১১:২২ এএম

আক্রোশ থেকেই এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড

টাঙ্গাইলের মধুপুরে নিহত ওসমান গণির বড় মেয়ের আহাজারি

তছনছ হয়‌নি ঘ‌রের ভিত‌রের কোন আসবাবপত্র, কোন জিনিসপত্র চুরি হয়নি। ঘাতকরা হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হ‌য়ে‌ হত্যাকাণ্ড‌টি ঘটিয়েছে ব‌লে পুলিশের একাধিক সংস্থা ধারণা করছে। শুক্রবার (১৭ জুলাই ) সকালে টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরসভার মাষ্টারপাড়া এলাকা থেকে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

টাঙ্গাইলের সিআইডি পরিদর্শক ইউসুফ আলী জানান, ঘর থেকে খোয়া যায়নি কোনো মালামাল। তছনছ করা হয়নি কোন আসবাবপত্র। হত্যার নৃশংসতা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একাধিক সংস্থার ধারণা পূর্ব কোন আক্রোশ থেকেই এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে।

স্থানীয়রা জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার মধুপুরের ভ্যান-রিকশা ব‌্যবসায়ী ও সুদের কারবারি ওসমান গনি মিয়া গত এক বছর আগে পৌর এলাকার মাষ্টারপাড়ায় ১০ লাখ টাকায় জমি কিনেন। তারপর পাকা দালান তৈরি ক‌রে বসবাস শুরু করেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) থেকে গনি মিয়ার বড় মেয়ে সো‌নিয়া কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। বিষয়টি তাদের স্বজনদের জানালে শুক্রবার সকালে (১৭ জুলাই) বাড়ির মূল ফটক তালাবন্ধ অবস্থায় দেখ‌তে পায়। এসময় ঘ‌রের জানালা দি‌য়ে উঁকি দিলে ওসমান গ‌নির গলাকাটা মরদেহ খা‌টের ওপর দেখ‌তে পায়। গলাকাটা ও ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলার একা‌ধিক সংস্থা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হ‌য়ে তদন্ত শুরু ক‌রে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গনি মিয়ার স্ত্রীর তিন আত্মীয়‌কে পু‌লি‌শি হেফাজ‌তে নেয়া হ‌য়ে‌ছে। এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউ‌কে গ্রেপ্তার কর‌তে পারেনি পুলিশ।

ঘটনাস্থলের আলামত সংগ্রহকারী একাধিক আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ধারণা, হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা পূর্ব পরিচিত ছিল। তারা মূল গেট বা দরজা ভেঙে প্রবেশ করেনি। তারা সেখানে হত্যার আগে থেকে ছিলো, ধস্তাধস্তিও হয়েছে। বুধবার রাতের কোন এক সময় আলাদা আলাদা তিনটি কক্ষে হাত-পা বেঁধে গণি মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী তাজিরন বেগম বুচি (৩৫), ছেলে তাইজুল (১৬) ও আট বছরের সাদিয়াকে হত্যা করে থাকার ঘর ও মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঘাতকরা।

মধুপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরান হোসেন জানান, কয়েকটি সন্দেহকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থা। চার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন স্বজনকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তারা জড়িত না হলে তারা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে চলে যাবে।

টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, দ্রুতই রহস্য উৎঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হ‌বে। তিনটি রুমে চারটা মরদেহ পেয়েছি। এছাড়া একটা রুমে কুড়াল পেয়েছি। মৃতদেহে কুড়ালের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কেউ জানতো না এখানে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। তার আত্মীয়রা যখন খুঁজে পাচ্ছিলো না, তখন তারা তালা ভেঙে ঢুকে দেখে এই অবস্থা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App