×

সারাদেশ

বান্ধবীদের সাহসিকতায় বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা মিমের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২০, ০৮:০১ পিএম

বান্ধবীদের সাহসিকতায় বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা মিমের

মিম ও তার তিন বন্ধবী

তিন বান্ধবীর সাহসী পদক্ষেপে বয়স্ক ডিম ব্যবসায়ীর সাথে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাবাড়ী এলাকার ১৪ বছর বয়সী মিম নামে এক কিশোরী। জানা গেছে, শুক্রবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮ টারদিকে পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাবাড়ী পুলিশি তদন্ত কেন্দ্রে হাজির হয় ১৩ থেকে ১৪ বছরের তিন কিশোরী। তারা হাজির হয়ে পুলিশকে জানায়, হরিনাবাড়ী এলাকার মিম নামে ১৪ বছর বয়সী এক নাবালিকা মেয়েকে জোর করে তার বাবা ও মা রাজশাহীতে নিয়ে যাচ্ছে এক বৃদ্ধের সাথে বিয়ে দিতে। তাকে নেওয়ার জন্য ১টি কার এসেছে রাজশাহী থেকে।

একথা জানার পর হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো: রাকিব হাসান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে রওনা দেন। কিন্তু তার আগেই মিমকে নিয়ে তার বাবা ও মা কারযোগে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে ড্রাইভারের নাম্বার সংগ্রহ করে কৌশলে গাড়ী ফেরত আনতে বলে পুলিশ। ড্রাইভার বড়দহ ব্রিজ থেকে গাড়ী ফেরত নিয়ে আসে।পরবর্তীতে মিমের মুখে বিস্তারিত শুনে পুলিশ।

রাজশাহীর জনৈক জলিল একজন বয়স্ক লোক। তার ২ জন বউ ও সন্তান আছে। তিনি খারাপ প্রকৃতির লোক। তিনি মিমের সাথে খারাপ আচরণ করে। তাকে বিয়েও করতে চায়। বিয়ে করে ভারতে নিয়ে যাবে এমন প্রলোভনও দেয়। মিম জানায়, তার মা ও বাবাকে ওই বুড়া অনেক টাকা দিয়েছে, আরো দিবে বলে এবং তার ভাইকে চাকরি দিতে চেয়েছে। মিমের কথা বিস্তারিত শুনে মিমকে তার চাচার জিম্মায় দেয়া হয়। এছাড়া তার বাবা-মাকে নিষেধ করা হয় জোর করে যেন রাজশাহীতে মিমকে না নিয়ে যাওয়া হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়।

মিম অভিযোগ করে জানায়, গত ৩ মাস ধরে রাজশাহীর জনৈক জলিল নামে এক লোকের (ডিম ব্যবসায়ী) ভাড়া বাসায় মিমের বাবা ও মা থাকত। মিমের বাবা ডিম বিক্রি সহায়তা করত। তার মা অন্যান্য কর্মচারীদের রান্না করত। রান্নার পর বাটিতে করে মিমকে দিয়ে খাবার জলিলের রুমে দিয়ে আসত। জলিলের রুমে যাওয়ার সুযোগে মিমের সাথে বিভিন্ন সময় খারাপ আচরণসহ অস্বাভাবিক ব্যবহার করত। জলিলের ব্যবহার সম্পর্কে মিম তার বাবা ও মাকে বলার সাহস পায় নাই। গত ৮/১০ দিন আগে মিম তার বাবা ও মাসহ গ্রামে আসলে সেখানে তার বান্ধবীসহ চাচীদের বিষয়টি খুলে বলে।

শুক্রবার সকাল ৭ টায় কার গাড়ি তাকে নেওয়ার জন্য আসলে মিম রাজশাহীতে যেতে চায় না। কিন্তু মিমের বাবা ও মা অধিক টাকা ও বেতনের লোভে মিমকে জোর করে গাড়িতে করে নিয়ে যেতে ধরে। এ সময় স্থানীয় লোকজনসহ মিমের আত্নীয়স্বজন ও বান্ধবীরা মিমের বাবা ও মাকে সেখানে নিয়ে যেতে নিষেধ করে। কিন্তু মিমের বাবা ও মা কারও কথা না শুনে গাড়িতে করে মিমকে নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এমন পরিস্থিতিতে মিমের ৩ বান্ধবী ওই সময় হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ তাদের গাড়ি ফেরত নিয়ে আসে। এভাবেই তিন বন্ধবীর সাহসী পদক্ষেপে ওই ডিম ব্যাবসায়ীর সাথে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পায় মিম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App