গেল এপ্রিল মাসের শেষ দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে মা, দুই মেয়ে ও প্রতিবন্ধী ছেলেকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। খুনিরা তাদের হত্যা করে ফেলে রেখে গিয়েছিল। পরদিন ঘটনা জানাজানি হয়।

ঠিক একইরকম ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরা আবাসিক এলাকার (মাস্টারবাড়ি) একটি বাড়িতে। কয়েকদিন আগে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে বাড়িতে লাশ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।

নিহতরা হলেন, মাস্টারবাড়ির ভ্যান-রিকশা ব্যবসায়ী আব্দুল গনি (৪৫), তার স্ত্রী তাজিরন বেগম ওরফে বুচি (৩৭), ছেলে তাইজুল (১৬) ও মেয়ে সাদিয়া (১০)। গনি মিয়া ছিলেন বাড়ির কর্তা। খুবই সাধারণ একটি পরিবার। এরকম একটি পরিবারের সবাইকে কেন হত্যা করা হলো সে সম্পর্কে কোনো কিছুই বলতে পারছেন না এলাকাবাসী।

প্রাথমিক তদন্তে বিশেষ কোনও ক্লুও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে ঘটনাস্থলে একটি কুড়াল পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডে সেটি ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর ধারণা, দুই-তিন দিন আগে দুর্বৃত্তরা তাদের গলা কেটে হত্যার পর লাশ রেখে গেছে। নিহত চার জনের মধ্যে তিনজনের লাশ খাটের ওপর ও একজনের লাশ মেঝেতে পড়ে ছিল।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, গেল কয়েকদিন ধরেই বাড়িটিতে কোনও সাড়া-শব্দ ছিল না। কারও আসা যাওয়াও চোখে পড়েনি। বাড়ির গেটে তালা ঝুলছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন, বাড়ির লোকজন কোথাও বেড়াতে গেছে। তবে বৃহস্পতিবার থেকেই বাড়ির ভেতর থেকে পচা গন্ধ আসছিল।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে বাবা-মা, ছেলে- মেয়ের লাশ উদ্ধার করে। গলা কেটে ও ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করা হয় তাদের। কী কারণে তারা খুন হয়েছেন এখনও তা জানা যায়নি। সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা গিয়ে বাড়িটি ঘিরে রেখেছেন।

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক কামাল জানান, কিছু দিন আগে আব্দুল গনি মিয়া এখানে একতলা একটি বাড়ি করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তিন-চারদিন ধরে তাদের সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিলো না। বাইরে থেকে বাসার গেট তালাবদ্ধ ছিল।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর জানান, ঘটনাস্থলে একটি কুড়াল পাওয়া গেছে। নিহতদের শরীরে কুড়ালের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। আশা করছি খুব দ্রুতই খুনের কারণ জানা যাবে।

• টাঙ্গাইলে একই পরিবারের চারজনকে গলা কেটে হত্যা