×

জাতীয়

ভার্চুয়াল বৈঠকে আপ্যায়ন বিল ৪৭ লাখ টাকা!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২০, ০৯:১২ এএম

ভার্চুয়াল বৈঠকে আপ্যায়ন বিল ৪৭ লাখ টাকা!

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়

 পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ভার্চুয়াল বৈঠকে ৪৭ লাখ টাকা আপ্যায়ন বিল এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি। যার যার অবস্থান থেকে বৈঠকে অংশ নিলেও বিল থেমে নেই। কেউ আসুক বা না আসুক খরচের খাতায় হিসাব উঠবেই। এসব আয়োজনে অংশ নেয়া ১২০ জনের জন্য ব্যাগ, ফোল্ডার, কলম ও প্যাড বাবদ ব্যয় ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং প্রতিবেদন সরবরাহের নামে আরো ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে বাস্তবায়নাধীন ৭২টি প্রকল্পের প্রভাব মূলায়নের জন্য মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এসব ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি। এর মধ্যে প্রতি প্রকল্পের জন্য একটি করে জাতীয় কর্মশালা এবং টেকনিক্যাল ও স্টিয়ারিং কমিটির দুটি করে ভার্চুয়াল সভা ছিল। পরামর্শক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশে আইএমইডির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব ভার্চুয়াল আয়োজনের মাধ্যমে তিনটি খাতে মোট ২ কোটি ৫ লাখ টাকার ব্যয় দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সব মিলে এসব ভার্চুয়াল আয়োজনের জন্য খাবারে বিল তোলা হয়েছে মোট ৫৭ লাখ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়া স্টেশনারি ও অন্যান্য ব্যয় হিসাবে প্রতিটি ভার্চুয়াল আয়োজনের জন্য ১৫ হাজার টাকা ধরে মোট বিল দেখানো হয়েছে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকার। প্রতিটি ভার্চুয়াল সভায় আইএমইডির ৭৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিশেষজ্ঞসহ মোট ১২০ জন অংশগ্রহণকারী ছিলেন। পরামর্শক কোম্পানিগুলো যে বিল জমা

দিয়েছে তাতে প্রতিটি কর্মশালার ক্ষেত্রে তাদের জন্য ব্যাগ, ফোল্ডার, কলম ও প্যাড বাবদ ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আইএমইডির এক কর্মকর্তা বলেন, প্রত্যেক পরামর্শক কোম্পানি সমান বিল জমা দিয়েছে। অর্থাৎ এ খাতে ৭২টি ওয়ার্কশপের জন্য বিল করা হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা। একইভাবে প্রতিটি কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রতিবেদন সরবরাহ ব্যয় ১৫ হাজার টাকা ধরে সব প্রকল্প মিলে এ খাতে মোট ব্যয় দেখানো হয়েছে আরো ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রতি ওয়ার্কশপের জন্য ৬০ হাজার টাকা ধরে ৭২টি কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের আপ্যায়নে মোট ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বিল করা হয়েছে। এরসঙ্গে টেকনিক্যাল ও স্টিয়ারিং কমিটির দুটি করে ভার্চুয়াল সভায় ব্যয় ধরা হয়েছে আরো ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট একটি প্রকল্পের বিলের হিসাব পর্যালোচনায় দেখা যায়, ওই প্রকল্পের জন্য ২৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা করে বিল উত্তোলন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পাবে সংশ্লিষ্ট আউটসোর্সিং কোম্পানি, বাকি অর্থ আইএমইডির তত্ত্বাবধানে থাকা জাতীয় ওয়ার্কশপ ও স্টিয়ারিং ও টেকনিক্যাল কমিটির সম্মানী ও ব্যয় হিসাবে দেয়া হয়। এই বিলের মধ্যে পরামর্শক কোম্পানি ও অংশগ্রহণকারীদের সম্মানীসহ মোট ২১টি খাত রয়েছে। এরমধ্যে আপ্যায়ন ও ব্যাগ, ফোল্ডার, প্যাড, কলম এবং অংশগ্রহণকারীদের প্রতিবেদন সরবরাহ খাতে ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে একাধিক পরামর্শক কোম্পানির কর্মকর্তা বলেছেন, আইএমইডির নির্দেশনা অনুযায়ী বিল তৈরি করে তারা জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল মন্সুর মো. ফয়জুল্লাহ বলেন, যে হিসাবটা আইএমইডি দেখিয়েছে, সেই পরিমাণ অর্থ প্রভাব মূল্যায়ন প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দ রয়েছে, তার বেশি তারা দাবি করেনি। এছাড়া করোনা ভাইরাসের কারণে জুমে মিটিং করলেও আইএমইডির সম্মেলনকক্ষ থেকেও কয়েকজন অংশ নিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানাতে আইএমইডি সচিবকে নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিবেদনটি দেয়ার পর আমরা বিষয়টি বিশ্লেষণ করে দেখব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App