×

জাতীয়

ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশী, সময়ও বেড়েছে ৮ বছর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২০, ০২:৩৬ পিএম

ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশী, সময়ও বেড়েছে ৮ বছর

রেল লাইন/ফাইল ছবি।

চার দফায় ব্যয় ও মেয়াদ বেড়েছে খুলনা-মংলা পোর্ট রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের। ২০১০ সালে শুরু হয়ে ২০১৩ মেয়াদে ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল প্রকল্পটি। অথচ কয়েক দফায় প্রকল্পের ব্যয় বাড়তে বাড়তে এখন তা ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১২০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১০ তিন দফায় সময় বাড়িয়ে ২০২০ সালে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হবার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি চতুর্থবারের মতো ২০২১ সাল পর্যন্ত এর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রকল্প শেষ হবার মোট সময় বাড়ছে ৮ বছর। প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতীয় এলওসি ঋণ আছে ২ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। সম্প্রতি খুলনা-মংলা পোর্ট রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) নিবিড় পরিবীক্ষণ সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ ব্যাপারে আইএমইডির পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, খুলনা-মংলা পোর্ট রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে আইএমইডি প্রতিবেদন তৈরি করেছি। প্রতিবেদনের কপিও রেলের সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে, যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হয় সে সুপারিশ করা হয়েছে। আইএমইডি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, খুলনা-মংলা পোর্ট রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় লুপ লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য হবে ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ । এছাড়া রূপসা নদীর ওপর হজরত খানজাহান আলী সেতুর দেড় কিলোমিটার দূরে যুক্ত হবে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি শেষ হবার পর সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ছাড়াও রেল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ হবার কারণে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে দেশে-বিদেশি পর্যটক যাতায়াতেও সুবিধা হবে। আইএমইডি’র প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) অনুযায়ী ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৭ শতাংশ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এর মাঝে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৫৪ শতাংশ। কন্সট্রাকশন অব ইমব্যাংকমেন্ট, ট্র্যাক, অল সিভিল ওয়ার্কস, মেজর অ্যান্ড মাইনর ব্রিজ কাজের অগ্রগতিও আশানুরুপ নয়। অন্যদিকে রূপসা সেতুর ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৬৩ শতাংশ।

প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হতে বেশি সময় লাগার প্রধান কারণ জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব, কাজের মাঝামাঝি এসে পরামর্শক পরিবর্তন ইত্যাদি। এছাড়া কিছু জটিল নন টেন্ডার আইটেম যেমন- অত্যাধিক লুজ সয়েল থাকায় ট্রিটমেন্ট, বারবার পাইল ফেইল করায় বেস গ্রাউটিং, প্রকল্পের কাজ করা নির্মান সংস্থা ইরকনের মাধ্যমে একাধিক অনাভিজ্ঞ সাব কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করাও বিলম্বের কারণ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বর্তমানে প্রকল্পের কাজ যে গতিতে চলছে তাতে করে পূর্ব নির্ধারিত ২০২০ সালে এর কাজ সমাপ্ত হবে না। ফলে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময় প্রয়োজন। বর্তমানে কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৬৯ শতাংশ। রেল লাইনের কাজ চলমান। এছাড়া নির্মিতব্য ৮টি স্টেশনের মধ্যে দুটির স্টেশন বিল্ডিং ছাদ পর্যন্ত করা হয়ে গেছে। বাকিগুলোর কাজ চলমান। তবে সরেজমিনে এখনও ট্র্যাক ও সিগন্যালিং নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। প্রকল্পের রেল লাইন নির্মাণ কাজ যথেষ্ট পিছিয়ে আছে। টার্গেট অনুযায়ী দ্রুত কাজ করার তাগিদ দিয়েছে আইএমইডি। এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, প্রকল্পের কাজ চলছে। এটি ভারতীয় এলওসি ঋণে চলমান প্রকল্প। তবে ভ’মি অধিগ্রহনে কিছুটা সমস্যা ছাড়াও নিম্মাঞ্চল হওয়ায় প্রচুর ব্রিজ কালর্ভাটের কাজ করতে হচ্ছে। তবে প্রকল্পটি শেষ হলে মংলা বন্দরের সাথে রেল নেটওয়ার্ক চালু হবে। যার ফলে বাণিজ্যিক সূফল, মালামাল আনা-নেয়া ও কর্মসংস্থান ঘটবে। দ্রুত প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App