×

জাতীয়

প্রতারক সাহেদ নজরে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২০, ০৯:২০ এএম

প্রতারক সাহেদ নজরে

সাহেদ। ফাইল ছবি

প্রতারক মো. সাহেদ করিমের অপকীর্তির শেষ নেই। এমএলএম ব্যবসা দিয়ে তার প্রতারণার হাতেখড়ি। এরপর জেল খেটেছেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে জাল বিস্তৃত করেন দেশজুড়ে। প্রতারণার কাজে তিনি সুন্দরী মহিলাদের ব্যবহার করতেন। আবার ফাঁদ পাততে গিয়ে নিজেই ফাঁদে আটকে বিয়ে করেছেন চারটি। টক অব দ্যা কান্ট্রি প্রতারক সাহেদ গ্রেপ্তার না হওয়ায় প্রশ্নের ডালপালা ছড়াচ্ছে। একাধিক সূত্রের দাবি সাহেদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সংস্থার নজরদারিতে রয়েছেন। যে কোনো সময় তাকে আটক করা হতে পারে। তিনি ঢাকাতেই আছেন। তার স্ত্রী বিটিভির সংবাদ পাঠিকা শাহিদা আরাবি রাম্মির মাধ্যমে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। স্বেচ্ছায় ধরা না দিলে তাকে যে কোনো সময় আটক করার হবে বলে র‌্যাব-পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন। এতদিন সাহেদের টর্চার সেলে নির্যাতনের ভয়ে চুপ থাকা ভুক্তভোগীরাও মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তারা র‌্যাব-পুলিশের কাছে নালিশ জানিয়ে বিচার দাবি করছেন। এতে ২৩টি নয়, এ পর্যন্ত সাহেদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় ৫৫টি মামলার তথ্য পেয়েছে র‌্যাব-পুলিশ। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গতকাল রবিবার সচিবালয়ে বলেছেন, রিজেন্টের সাহেদ করিমের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। না হলে গ্রেপ্তার করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রের দাবি রিজেন্ট হাসপাতালে দুই দফায় অভিযানের সময় সাহেদ প্রশাসনের বেশ কয়েকজনকে ফোন করে সহায়তা চেয়েছিলেন। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। এরপরই মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ করে দেন তিনি। ব্যক্তিগতভাবে যে গাড়ি তিনি ব্যবহার করতেন এখন সেটিও ব্যবহার করছেন না। তার গাড়ি চালকের মোবাইল নম্বরও ট্র্যাক করার চেষ্টা চলছে। সেটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তার স্ত্রীর নম্বর ট্র্যাক করেও খোঁজ মিলেনি। তবে একটি বিশেষ মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যে কোনো সময় তাকে আটক করা হবে। গত শনিবার সাহেদের উত্তরার কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে তার পাসপোর্ট, কম্পিউটারসহ কিছু আলামত জব্দ করেছে। এদিকে সাহেদের শাহিদা আরাবী নামের এক স্ত্রীর পরিচয় জানা গেলেও তার আরো দুই স্ত্রী রয়েছেন। একজনের নাম চৈতি। এছাড়া লিজা ও মার্জিয়া নামে সাহেদের অফিসে দুই নারী কর্মকর্তা আছেন। তাদের একজন তার বিয়ে করা বউ বলেও সন্দেহ কর্মীদের। একাধিক স্ত্রী থাকলেও পরস্পরের কাছে বিষয়টি এতদিন গোপন ছিল। পুলিশকে রিজেন্ট গ্রুপের স্টাফরা জানিয়েছেন, লিজা ও মার্জিয়া ছাড়াও সাদিয়া ও হিরা মণি নামে দুই তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল সাহেদের। পাসওয়ার্ড দেয়া প্রাইভেট রুমে তাদের অবাধ যাতায়াত ছিল। কাজ হাসিল করতে সুন্দরীদের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতেন সাহেদ। সাহেদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষর। লেনদেনের ক্ষেত্রেও তিনি ভিন্ন স্বাক্ষর ব্যবহার করতেন। একেকটি লেনদেন দেখার দায়িত্বে ছিলেন একেকজন সহযোগী। পদ্মা সেতুতে পাথর সরবরাহের কাজের মাধ্যমে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া সাহেদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন অভিযোগের তথ্য পাচ্ছেন পুলিশ ও র‌্যাবের তদন্তকারীরা। ৩২টি মামলার পর তার বিরুদ্ধে আরো ২৩টি জালিয়াতি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। আর্থিক লেনদেনে প্রতারণার শিকার হয়ে মামলা করা ভুক্তভোগীরাই র‌্যাবকে এসব তথ্য দিয়েছেন। এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ৫৫টি মামলার খবর পেয়েছে র‌্যাব-পুলিশ। আরো অনুসন্ধান চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App