×

সারাদেশ

কুয়াকাটায় করোনা রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২০, ০৬:৫৬ পিএম

কুয়াকাটায় করোনা রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড়
কুয়াকাটার ১৪টি আবাসিক হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৩১৫ শ্রমিকের মধ্যে ১৭ জনের করোনা পজেটিভ বেসরকারি হাসপাতালের এমন রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ রোববার আবার এদের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এছাড়া ১৭ শ্রমিক অবস্থান করা আট আবাসিক হোটেল লকডাউন করে দিয়েছে। পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মাণ কাজে যোগদানের জন্য এই শ্রমিকদের ২৭ জুন থেকে কুয়াকাটার বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। হোটেল কর্তৃপক্ষ এসব জানালেও উপজেলা স্বাস্থ্য কিংবা উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কিছুই জানত না বলে দাবি করেছেন। মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান হোটেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পারেন যে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ৩১৫ জন শ্রমিক কুয়াকাটার ১৪টি হোটেলে রাখা হয়েছে। শনিবার সকালে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অফিসিয়াল মেইলে ডাঃ ফরিদা হক মেমোরিয়াল ইব্রাহিম জেনারেল হসপিটাল, কোভিড-১৯ ডায়াগনস্টিক ল্যাব চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, গাজীপুর (([email protected]) ) থেকে একটি মেইল পায়। যেখানে লেখা রয়েছে মিস স্মিতা হিলটন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এন্ড ল্যাব ইনচার্জ। এই মেইলে জানানো হয় কুয়াকাটায় আটটি হোটেলে অবস্থান করা ১৭ শ্রমিক করোনা পজিটিভ। তাঁদের সকলের নাম, হোটেলের নাম পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জনের মেইলেও এটি দেয়া হয়। এখবরটি গণমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। করোনার কারণে প্রায় চারমাস পরে পহেলা জুলাই থেকে কুয়াকাটায় হোটেল-মোটেল খোলার পরে এ খবরে সর্বত্র করোনা শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুরে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রাইভেট হাসপাতালের ওই মেইল প্রত্যাখ্যান করে বলা হয় ওই হাসপাতাল কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোভিড-১৯ পরীক্ষার অনুমোদন রয়েছে কি না তা জানতে হবে। শনিবার রাতে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক এবং উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার কুয়াকাটায় গিয়ে ওই আটটি হোটেল লকডাউন করে দিয়েছেন। এবং রবিবার ফের স্বাস্থ্য বিভাগ ওই ১৭ শ্রমিকের মধ্য থেকে ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। বাকি একজনের নমুনা নেয়া হবে বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের দাবি বেসরকারি ওই হাসপাতালের পজেটিভ রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান হলে ৩১৫ জনের মধ্যে বাকি ২৯৮ জন যারা রয়েছে তারা নেগেটিভ কি না তা কীভাবে নিশ্চিত হলো স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই শ্রমিকদের নমুনা কেন সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হলো না। তবে কালিয়াকৈর গাজীপুরের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরেক রিজেন্ট হাসপাতাল কি না জনমনে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি কলাপাড়ার সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব শরীফ জানান, প্রায় চারমাস বন্ধ থাকার পরে যেখানে পহেলা জুলাই হোটেল-মোটেল করোনা স্বাস্থ্য বিধি মতে চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়। সেখানে ২৭ জুন হোটেলে বহিরাগত শ্রমিক করেনাকালে প্রবেশ করানো ঠিক হয়নি। তবে একাধিক হোটেল মালিক জানিয়েছেন জনৈক মামুন এবং আরিফ নামের দুই ব্যক্তি এসব শ্রমিকদের হোটেলে অবস্থানের কাজ সম্পন্ন করেছে। মহিপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, আটটি হোটেলের সকলকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। বাকি শ্রমিকদের ওপর বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। বর্তমানে গাজীপুরের এই হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের করোনা রিপোর্টের খবরটি এখানে সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, এবিষয়ে আরও অধিকতর তদন্ত চলছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে সবকিছু অবগত করানো হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App