×

রাজধানী

‘এডিস’ এখনো নিয়ন্ত্রণে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২০, ০৮:২২ পিএম

নির্দিষ্ট কোনো মৌসুমে নয় দেশে বছরজুড়েই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। গত বছর রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকলেও চলতি বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনা ভাইরাসের প্রকোপের এই সময়ে কমেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সী অপারশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলো এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) কাছে ২৬৬টি মৃত্যুর তথ্য পাঠানো হয়। ২৪৯টি মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনা করে ১৫৬টি মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

মাস অনুযায়ী হিসাবে দেখা যায়- জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারি মাসে ১৮, মার্চ মাসে ১৭, এপ্রিলে ৫৩, মে’তে ১৯৩, জুনে এক হাজার ৮৮৪ এবং জুলাই মাসে ১৬ হাজার ২৫৩ জন আক্রান্ত হয়। এই সাত মাসে মৃত্যু হয়েছিলো ৪৩ জনের। এর মধ্যে এপ্রিলে ২, জুনে ৬ আর জুলাই মাসে ৩৫ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিলো স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি ছিলো বলে দাবি করেছিলেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৩৩২ জন। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ১৯৯, ফেব্রুয়ারিতে ৪৫, মার্চে ২৭, এপ্রিলে ২৫, মে তে ১০ এবং জুনে ২০, জুলাইয়ের ১২ তারিখ পর্যন্ত ৬ জন। ডেঙ্গু সন্দেহে মৃত্যু পর্যালোচনার জন্য এ পর্যন্ত আইইডিসিআরে একটি নমুনা পাঠানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি যা এখনো পর্যন্ত পর্যালোচনা শেষ করেনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এবার ঢাকার দুই সিটিতেই বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে যার সুফলও আসতে শুরু করেছে।

কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার ভোরের কাগজকে বলেন, গতবছরের তুলনায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায় হলো এডিসের উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করা। তিনদিনের বেশি কোথাও স্বচ্ছ পানি জমতে না দেয়া। এসব বিষয়ে মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন হয়েছে।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, মশক নিধন কার্যক্রমে গত বছরের অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। মশা নিয়ন্ত্রণে চালাচ্ছেন বিভিন্ন কার্যক্রমও। মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত করতে ১২ জন কীটতত্ত্ববিদের একটি দল গঠন করেছেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে গতকাল রবিবার করোনার নিয়মিত বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালিত মৌসুম-পূর্ব এডিস সার্ভে ২০২০ পরবর্তী মনিটরিং কার্যক্রম (২য় পর্যায়) শুরু হয় ৪ জুলাই। যা চলবে ১৪ জুলাই পর্যন্ত। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাথে যৌথভাবে এই সার্ভে পরিচালিত হবে। ২য় পর্যায়ের এডিস মনিটরিং কার্যক্রম ৪ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (১, ২, ৩, ৪, ৫, ৭ ও ১০ নং জোনের) সর্বমোট ৩৯ টি ওয়ার্ডে পরিচালিত হয়। ওই ওয়ার্ডগুলোতে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৪৯টি পারি পর্যবেক্ষণ করে। এর মধ্যে ২৮৭টি (হাউজ ইনডেক্স ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ) বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা ও পিউপার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

তিনি জানান, ৪ থেকে ১১ জুলাই তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনাকালে এডিস মশার লার্ভা ও পিউপার উপস্থিতির ভিত্তিতে বাড়ি, নির্মাণাধীন ভবন ও শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষদেরকে টিমের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক সর্বমোট ৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App