×

সারাদেশ

হু হু করে বাড়ছে পানি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২০, ০৯:৩৯ এএম

হু হু করে বাড়ছে পানি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বাড়ছে পানি, ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যাবস্থা। ছবি: প্রতিনিধি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন দেশের উত্তর ও পূর্ব অঞ্চলের নদ-নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। ফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর-দোকানপাট ও নিম্নাঞ্চল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে দ্বিতীয় দফা বন্যার পাশাপাশি কোথাও কোথাও প্রবল হয়েছে নদীভাঙন। বন্যা ও ভাঙনকবলিত এলাকায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
সিলেট : বৃহস্পতিবার রাত থেকে সিলেটে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। গতকাল শনিবার দিনভর বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নতুন করে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। পানিতে নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে ধানক্ষেত ও অনেক মৎস্য খামার। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার জানান, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট উপজেলায় বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর সিলেট পয়েন্টে বিপদসীমা ছুঁয়েছে শনিবার সন্ধ্যায়। এদিকে আমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদী এখনো ৬ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে। এছাড়াও, সারি, লোভা ধলাই নদীও বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলেও জানান পাউবোর এই কর্মকর্তা। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মাছের খামার ও ধানক্ষেতের ফসল তলিয়ে গিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার পানিবন্দি প্রায় ৫০ হাজার মানুষের জন্য ইতোমধ্যেই ৩৫টি বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য্য। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, এখনো বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া শুরু হয়নি। তবে করোনা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলাও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টার বর্ষণে পানি বেড়েছে সারি নদীতে। উপজেলার নিম্নাঞ্চলের অর্ধলক্ষ মানুষ এখনো পানিবন্দি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে বন্যাকবলিত এলাকাগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিয়নের ৬০টি বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ত্রাণ সহায়তা চেয়ে প্রাথমিকভাবে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে রেকর্ড ১১৭ মিলিমিটার। একই ধারায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে আরো কিছু দিন। এমতাবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে বলেই মন্তব্য করেন তিনি। সুনামগঞ্জ : সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৪ সেমি ওপর প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর ও দোকানপাট। সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার তেঘরিয়া, বড়পাড়া, ষোলঘর, নবীনগর, কাজিরপয়েন্ট, মধ্যবাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পৌরবাসী। শহরের প্রধান প্রধান সড়কে পানি থাকায় সড়কের উপর দিয়েই চলাচল করছে নৌকা। অন্যদিকে জেলা সদর থেকে তাহিরপুর, বিশ^ম্ভরপুর, জামালগঞ্জ ও ছাতক উপজেলায় যোগাযোগের মূল সড়ক পানিতে নিমজ্জিত থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। এছাড়াও হাওরাঞ্চলে পানিতে সৃষ্ট হচ্ছে বিশাল বিশাল টেউ। আর এ ঢেউ আছড়ে পড়ছে হাওরপাড়ের গ্রামের বসতভিটায়। কোথাও কোথাও দেখা দিচ্ছে ভাঙনও। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় ও চেরাপঞ্জিতে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির ফলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, সুনামগঞ্জের চার শতাধিক গ্রামের প্রায় ছয় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলায় বন্যার্তদের জন্য ইতোমধ্যে ৪০০ টন জিআর চাল, নগদ আট লাখ টাকা ও শুষ্ক খাবার পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, বন্যায় ত্রাণের কোনো সংকট হবে না। আরো ত্রাণ সহায়তার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই আরো বেশি করে বিতরণ করা হবে। গাইবান্ধা : ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদীতে হু হু করে বাড়ছে পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রে ২০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং তিস্তায় ৩১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ঘাঘট নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার বাড়লেও বিপদসীমা থেকে এখনো ৩৭৩ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। অন্যদিকে করতোয়া নদীর পানি ১৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদ-নদীর পানি প্রথম দফায় গত ২৬ জুন থেকে বিপদসীমা অতিক্রম করলেও ২ জুলাই থেকে কমতে শুরু করে। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ৯ জুলাই থেকে আবারো পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে ব্রহ্মপত্র, তিস্তা ও যমুনা নদী বেষ্টিত গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২৫৫টি চরে নতুন করে দ্বিতীয় দফা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। প্রথম বন্যার পানি বাড়িঘর থেকে না নামতেই নতুন করে দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দেয়ায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেতরে নতুন রিং বাঁধে ঘেরা ভাষারপাড়া, মধ্য কঞ্চিপাড়া, সৈয়দপুর এলাকার শত শত পরিবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে ১৫ দিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সেখানে বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নারীরা বেশি সমস্যায় রয়েছেন। বাঁধে আশ্রিত বানভাসি মানুষের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে টিউওবয়েল স্থাপন ও অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণের দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে নদ-নদীর ভাঙনে প্রতিদিনই বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারাচ্ছে শত শত পরিবার। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার জানান, গত এক সপ্তাহে তিস্তা নদীর ভাঙনে কাপাসিয়া ইউনিয়নের কালাই সোতারচরের ১০০ পরিবার, উজান বুড়াই গ্রামের ১৫০ পরিবার, পশ্চিম লালচামার এলাকার ৫০টি পরিবার নদী ভাঙনে বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। এ ছাড়া হরিপুর ও শ্রীপুর ইউনিয়নে ব্যাপক তিস্তার ভাঙন শুরু হয়েছে। নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো বিভিন্ন বাঁধ, উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। কেউবা বসতবাড়ি হারিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও দিনাজপুর এলাকায় পাড়ি জমিয়েছেন। লালমনিরহাট : তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার বামতীরে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, তিস্তা নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় উজানের সামান্য ঢলেই তিস্তার দুই তীর প্লাবিত হয়ে লালমনিরহাটে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। শুক্রবার সকাল থেকে উজানে ভারতের পাহাড়ি ঢলের মাত্রা বেড়ে যায়। একইসঙ্গে গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে জেলার ৫ উপজেলার প্রায় ১৫/২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিস্তার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ। চৌকি/খাটের উপর মাচাং বানিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পানিবন্দি পরিবারের মানুষগুলো। কেউ কেউ ঘর-বাড়ি ছেড়ে উঁচু বাঁধ বা পার্শ্ববর্তী গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। খুব কষ্টে পড়েছেন বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও শিশুরা। গবাদি পশু-পাখি নিয়েও চরম বিপাকে পানিবন্দি পরিবারগুলো। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে বন্যা দুর্গত এলাকায়। আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন গ্রামের সাহেদ মিয়া বলেন, দুদিন ধরে পানিবন্দি আছি। গত এক মাস ধরে থেমে থেমে বন্যা হচ্ছে। শুক্রবার দুপুর থেকে চলতি বছরে চতুর্থবারের মতো পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। এবারের পানির বেগ অনেক বেশি। গত বন্যার চেয়ে এ বন্যায় পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যাও অনেক বেশি। তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ব্যারেজ রক্ষার জন্য সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ বন্যা কিছুটা সময় স্থায়ী হতে পারে বলেও জানান তিনি। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, চলমান বন্যায় পানিবন্দি পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নিতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ত্রাণ সহায়তা অনুভব করলে আমরা পৌঁছে দেব। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। টাঙ্গাইল : শুক্রবার রাত থেকে শুরু হয়ে শনিবার ভোর পর্যন্ত প্রবল বর্ষণে জেলার মধুপুর বনাঞ্চলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে চলাচল, বাজারে কৃষিজাত পণ্য বিশেষ করে আনারস ও কলা আনা নেয়ায় স্থানীয়দের বেশ দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। ভেসে গেছে বেশ কিছু মৎস্য খামারির কয়েক লাখ টাকার মাছ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মধুপুর উপজেলার বনাঞ্চলের দোখলা পিকনিক স্পটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ক্ষীর নদীর তীর তলিয়ে গেছে। কোমর পানিতে ডুবে পাশের শোলাকুড়ি, সাইনামারী থেকে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের জলছত্র যাওয়ার রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নওগাঁ : কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আত্রাইয়ের কাসিয়াবাড়ী ব্রিজ দিয়ে পানি প্রবেশ করে রাণীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউপির নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অনেক পুকুরের মাছ। এ ছাড়াও ওই এলাকার আমন চাষি কৃষকদের বীজতলা ডুবে গেছে। এতে করে জনমনে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যে কোনো সময় উপজেলার নিচু ৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ : যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে দ্বিতীয় দফা বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১২ সে.মি. পানি বাড়লেও তা বিপদসীমার ২৮ সে.মি. নিচে রয়েছে। পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী যমুনার পানি আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উজানের পানি বাড়ায় জুন মাসের মাঝামাঝিতে যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করে। জুনের শেষে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৬ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ১ জুলাই স্থিতিশীল থাকার পর ২ জুলাই থেকে কমতে থাকে পানি। টানা ৯দিন পানি কমার পর শুক্রবার থেকে ফের বাড়তে শুরু করেছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, এই মুহূর্তে জেলার ভাণ্ডারে ২৫০ টন চাল, সাড়ে ৫ লাখ টাকা নগদ অর্থ, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা, গো-খাদ্যের জন্য আরো প্রায় ২ লাখ টাকা এবং চাল, ডাল, চিনি ও তেলসহ ৮টি আইটেম সম্বলিত ২০০ শুকনা খাবারের প্যাকেট রয়েছে। রাজবাড়ী : গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানি ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সদর উপজেলার মহেন্দ্রপুর ও পাংশার সেনগ্রাম গেজ স্টেশন পয়েন্টেও পদ্মার পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে। তবে কয়েক দিনের ব্যবধানে ফের পদ্মা নদীর পানি বাড়তে থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. ইউসুফ আলী খান জানান, কয়েকদিন পানি কমার পর আবার বাড়তে শুরু করেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App