বলিউডের অন্যতম নায়িকা কেরিয়ারের শীর্ষে থাকতে থাকতেই আচমকা সিনেমার জগত ছেড়ে চলে যান। একেবারে নিজের মতো জীবনযাপন করছেন তিনি। আশি ও নব্বইয়ের দশকের অন্যতম তারকা ছিলেন তিনি।

সুভাষ ঘাই পরিচালিত হিরো ছবিতে জ্যাকি শ্রফের সঙ্গে তাঁর জুটি ১৯৮৩ সালে ছিল সুপারহিট। তবে বলিউডে মীনাক্ষীর প্রথম ছবি ‘পেইন্টার বাবু’। এই ছবি মুক্তি পেয়েছিল তেলুগু এবং হিন্দি দু’টি ভাষাতেই।

[caption id="attachment_231081" align="aligncenter" width="687"] অভিনেত্রী মীনাক্ষী।[/caption]

‘জুর্ম’, ‘ঘায়েল’, ‘শাহেনশা’, ‘বিজয়’, ‘গঙ্গা যমুনা সরস্বতী’, ‘ঘাতক’ একের পর এক সুপারহিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন মীনাক্ষী। কিন্তু সবচেয়ে বেশি মনে কেড়েছিল অন্য একটি ছবি।

[caption id="attachment_231079" align="aligncenter" width="687"] রাজেশ খন্না, রজনীকান্তের সঙ্গে 'বেওয়াফাই' ছবিতে অভিনয় করেছেন। কাজ করেছেন অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গেও।[/caption]

১৯৯৩ সালের ছবি ‘দামিনী’। সেই ছবিতে মীনাক্ষীর অভিনয়ের কাছে ম্লান হয়ে গিয়েছিলেন ঋষি কপূর, সানি দেওলরাও। একটি মেয়ের ধর্ষণকে ঘিরে প্রতিবাদ। বলিউডে এই ছবি ঝড় তুলে দিয়েছিল দর্শকের মনে।

তামিল পরিবারের মেয়ে মীনাক্ষীর জন্ম হয়েছিল ঝাড়খণ্ডে। ভরতনাট্যম, কুচিপুরী, কত্থক, ওড়িশি প্রতিটি নাচে ছোটবেলা থেকেই দক্ষ তিনি। ‘হিরো’ ছবিতে তাঁর ‘তু মেরা হিরো হ্যায়’ গানটি সে সময় মারাত্মক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল শুধু মাত্র তাঁর নাচের জন্যই।

[caption id="attachment_231092" align="aligncenter" width="687"] দামিনী ছবির দৃশ্যে মীনাক্ষী।[/caption]

‘দামিনী’ ছবিতে তাঁর নাচ আজও সিনেপ্রেমীদের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয়। কিন্তু কেরিয়ারে এত সাফল্যের মধ্যে থাকা নায়িকার জীবনে কি কোনও বিতর্ক আসেনি?

নব্বইয়ের দশকে বলিউড গায়ক কুমার শানুর সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়েছিল। শানু সেই সময় বিবাহিত। বলিউডের একাধিক পত্রপত্রিকা ও দেশের সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছিল দু’জনের সম্পর্কের কথা।

শানুর স্ত্রী রিতা অভিযোগ করেছিলেন, মীনাক্ষীর জন্য তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হতে চলেছে। তাঁকে সমর্থন করেন শানুর ব্যক্তিগত সচিবও। মীনাক্ষীকে দামি উপহার দিতেন শানু, এ কথাও জানিয়েছিলেন রিতা। মীনাক্ষী যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

[caption id="attachment_231093" align="aligncenter" width="687"] সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে 'ইনাম দশ হাজার' ছবিতে তাঁর চুম্বন দৃশ্য নিয়ে সেই সময় বিতর্কও হয়েছিল। সেই ভিডিও ভাইরাল হয় কিছু দিন আগে।[/caption]

প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর শানুর সঙ্গেও নাকি মীনাক্ষীর সম্পর্ক আর আগের মতো ছিল না। কিন্তু তাঁদের আলাপ হয়েছিল কী ভাবে?

মহেশ ভট্টের ‘জুর্ম’ ছবিতে ‘যব কোয়ি বাত বিগর যায়ে‘ গানটি গেয়েছিলেন শানু। সেই গানটি পর্দায় দেখেই মীনাক্ষীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিলেন শানু। তিনি নাকি মীনাক্ষীকে পর্দায় দেখেই প্রেমে পড়েন। বলি মহলের গুঞ্জন, তিন বছর সম্পর্কে ছিলেন তাঁরা। যদিও দু’জনের কেউই এই সম্পর্ক নিয়ে কোনও কথা বলেননি।

শুধু বলিউডের গায়কই নন। বলিউডের এক বিখ্যাত পরিচালকও পাগল ছিলেন মীনাক্ষীর প্রেমে। তিনি রাজকুমার সন্তোষী। মীনাক্ষীকে প্রেম নিবেদনও করেন তিনি। ‘দিল হ্যায় তুমহারা’ নামে একটি ছবিও সন্তোষী ঘোষণা করেছিলেন শুধু মাত্র মীনাক্ষীর প্রেমে পাগল হয়ে।

শুধু প্রেম না, বিয়ের প্রস্তাবও নাকি এসেছিল সন্তোষীর তরফে। মীনাক্ষী যদিও সন্তোষীর প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। সন্তোষীর বক্তব্য ছিল, আসলে মীনাক্ষীর পরিবারই নাকি এ সম্পর্ক চায়নি। এর পরও সন্তোষী পরিচালিত ‘দামিনী’ ছবিতে কাজ করেন মীনাক্ষী। পেশাদার অভিনেত্রীর পরিচয় দিয়েছিলেন, এ কথা বললে ভুল হবে না।

১৯৯৬-এ ‘ঘাতক’ ছবিতে সানি দেওলের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন মীনাক্ষী। ‘ঘাতক’ই তাঁর শেষ ছবি। এর পরেই অভিনয় থেকে সরে গিয়েছিলেন মীনাক্ষী। তার পর থেকে সে ভাবে আর কখনও সংবাদ মাধ্যমের সামনেও আসেননি তিনি। এমনকি বলিউডে কামব্যাকের অফারও নাকি ফিরিয়ে দিয়েছেন একাধিক বার।

মীনাক্ষী বিয়ে করেন হরিশ মাইসোর নামে এক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কারকে। জনৈক সাংবাদিকের সূ্ত্রে তাঁর সঙ্গে আলাপ মীনাক্ষীর। সেই সাংবাদিক ছিলেন হরিশের দাদা। তিনি পাত্র হিসাবে হরিশের নাম প্রস্তাব করেন। তার পর আমেরিকা গিয়ে নিজেই হরিশের সঙ্গে পরিচয় করেছিলেন মীনাক্ষী।

[caption id="attachment_231086" align="aligncenter" width="687"] স্বামী আর দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বর্তমানে আমেরিকাতেই থাকেন মীনাক্ষী। রয়েছে নাচের স্কুলও।[/caption]

চেরিশ ডান্স স্কুল-এ ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যের প্রশিক্ষণ দেন তিনি। ২০১৬ সালে ‘ঘায়েল ওয়ান্স আগেইন’ ছবিতে একটি ছোট চরিত্রে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। তবে ছবির জগতে ফিরতে চান না তিনি। নাচকেই জীবনের সঙ্গী করেছেন।