×

জাতীয়

দর পড়ে যাওয়ার শঙ্কায় খামারিরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২০, ০৪:০২ পিএম

দিন যতই সামনে এগোচ্ছে ততই ঘনিয়ে আসছে কোরবানির ঈদের সময়। আর তাই কোরবানির পশুকে ঘিরে খামারি থেকে শুরু করে গ্রামের হাট-বাজারেও ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। তবে করোনার কারণে পশু কোরবানির হার কমে গেলে দর পড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা। যদিও লোকসানে পশু বিক্রি করতে রাজি নন তারা, তবে অন্তত ব্যয় উসুল হলেও পশুটি ক্রেতার হাতে তুলে দেয়ার চিন্তাও রয়েছে খামারিদের।

খামারিদের মতে, গত চারমাসে পশু লালন-পালনে ব্যয় এতটাই বেড়েছে যে দর নির্ধারণেও হিসেবে গড়মিল লেগে গেছে। সেই হিসেবে পশুর দাম বাড়াটাও স্বাভাবিক।

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হস্তিসুন্ড এলাকার সরদার ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী গিয়াস উদ্দিন সরদার বলেন, করোনার কারণে গত ৪ মাস ধরে গো-খাদ্যের দাম অনেকটাই চড়া রয়েছে। আর সেই খরচ মিলাতে গেলে পশুর দামও কোরবানিতে কিছুটা বাড়বে। তবে সঠিক দর না পেলে লোকসান গুনতে হবে খামারিদের।

তরুণ খামারি সাদ্দাম হোসেন জানান, যে খৈর ৩০ থেকে ৩২ টাকায় কেনা হতো তা এখন কিনতে হচ্ছে ৩৮-৩৯ টাকায়, পরিবহন খরচসহ সাড়ে ৭ শত থেকে ৮ শত টাকার মনপ্রতি ভূট্টা কিনতে হচ্ছে ৯ শত টাকায়, দেড়শত থেকে ২ শত টাকার ভূসি কিনতে হচ্ছে আড়াইশত টাকায়।

তিনি বলেন, করোনায় খামারে পরিচ্ছন্নতা খরচও বেড়েছে দ্বিগুন। আগে যেখানে ১ কেজি জীবাণুনাশকে প্রয়োজন হতো, সেখানে এখন দ্বিগুন লাগছে। আবার পশুকে রোগবালাইমুক্ত রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরিচর্যাকারীদের পেছনেও খরচ বেড়েছে।

খামারের পরিচর্যাকারী মোশারেফ হোসেন বলেন, পশুকে সতেজ ও রোগবালাইমুক্ত রাখতে হলে খামার বা আবাসস্থল অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে করোনার বর্তমান সময়ে খামারে সাধারণ মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি জীবাণুনাশকের ব্যবহারও বেড়েছে।

তবে আশার কথা হচ্ছে, বরিশালে বিগত সময়ের থেকে খামারিদের সংখ্যা বেড়েছে। সেক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে পশুকে মোটাতাজা করার হার কমে গেছে। এখন সবাই প্রাকৃতিক নিয়মে পশু লালন-পালন এবং মোটাতাজা করছেন। এ কারণে তাদের গরুর স্বাস্থ্য যেমন ভালো, আয়ুকালও দীর্ঘস্থায়ী। লোকসান দিয়ে বিক্রি না করে পরের বছরের জন্য অপেক্ষায় রাখতে কোন কষ্ট হবে না বরিশালের খামারিদের। তাতে গরু দেখতে আরো ভালো হবে, পরিস্থিতি ঠিক হলে দামও ভালো পাবেন।

এদিকে বানারীপাড়া উপজেলার বাসিন্দা সুলতান হাওলাদার জানান, কোরবানির জন্য প্রতিবছর একটি গরু নিজেরাই লালন-পালন করেন, সাথে একটি বা দুটি বিক্রির জন্য পালন করেন। এবারের মোট দুটি গরুর মধ্যে নিজেদের ১টি ও বিক্রির জন্য একটি পালন করছেন। কিন্তু গেল ৪ মাসে এ দুটি গরুকে পালনে গুনতে হয়েছে প্রায় দ্বিগুন টাকা। শুধু খাবার নয়, পরিবহন খরচও বেড়েছে। সে হিসেব করলে গরুর যে দাম দাঁড়ায় সেই দামে বিক্রি করা আদৌ সম্ভব হবে কিনা জানেন না তিনি। তার ওপর কোরবানির হার কমে গেলে চাহিদা কমে পশুর দরও পড়ে যাবে বলে জানান তিনি।

যদিও প্রাণিসম্পদ দপ্তর বলছে, কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা কমলেও, স্থানীয় উৎপাদনের থেকে এখনো লক্ষ্যমাত্রা বেশিই রয়েছে। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. কানাইলাল স্বর্ণকার বলেন, লক্ষমাত্রা অনুযায়ী পশু কোরবানি হলে, নিজস্ব উৎপাদনের পর ২০-২৫ শতাংশ পশু বিভাগের বাহির থেকে আনা প্রয়োজন হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App