×

জাতীয়

দেশে করোনার তীব্রতা কমছে, তবে…

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২০, ০৪:৩৬ পিএম

দেশে করোনার তীব্রতা কমছে, তবে…

বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ ও পরীক্ষা

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতার মাত্রা কমছে বলেই মনে করা হচ্ছে। গেল সাতদিন ধরে সংখ্যা বিবেচনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর হার উঠানামা করলেও তীব্র ভয়াবহতার আশঙ্কা কমেছে। গত ৩০ জুন হঠাৎ করেই মৃত্যুর সংখ্যা আগের সব রেডর্ক ভেঙে ৬৪ জনে গিয়ে পৌঁছায়। তবে পরদিন ১ জুলাই দৈনিক মৃত্যু কমে দাঁড়ায় ৪১ জনে। এ প্রবণতার পাঁচদিন পর গেল ৫ জুলাই দৈনিক মৃত্যু বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৫৫ জনে। তবে এরপর আর ৬০ কিংবা অর্ধশতকের ঘর অতিক্রম করেনি। গেল সাতদিনে শনাক্ত কিংবা মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ রেকর্ড অতিক্রম করেনি। এদিকে, জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্র্যাকার বলছে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসতে শুরু করেছে। চলতি জুলাইয়ের ১ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্তের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তারা এ দাবি করে। গত ৬ জুলাই তাদের ট্র্যাকার অনুযায়ী, বাংলাদেশে সংক্রমণের ১৮তম সপ্তাহে এসে আক্রান্ত ও মৃত্যুহার দুটিই নিম্নগামী হয়েছে। এদিকে, টানা তৃতীয়দিনের মতো দেশে করোনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। এর আগেও ৯ ও ১০ জুলাই টানা দুদিন সব বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল চট্টগ্রামে। তবে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, চট্টগ্রামে শনাক্তের হার আগের চেয়ে কমে গেছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বন্দরনগরীর পিসিআর ল্যাবগুলোতে করোনা টেস্টের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে গেছে। সে কারণেই শনাক্তের সংখ্যাও কমেছে। সর্বশেষ ১০ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৭ জন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৪৯ জন রোগী। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৩ হাজার ৪৮৮টি। [caption id="attachment_221198" align="aligncenter" width="700"] করোনা ল্যাব[/caption] এর ১০ দিন আগে গত ৩০ জুন সর্বোচ্চ ৬৪ জন মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল। ওই দিন নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৮২ জন। তবে সেদিন নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ৪২৬টি। পরদিন ১ জুলাই নতুন করে মৃত্যু ৪১ ও শনাক্ত ৩ হাজার ৭৭৫ জন। ওইদিন নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল ১৭ হাজার ৮৭৫টি। অর্থাৎ পরীক্ষা কমে এলেও শনাক্ত বেড়েছে। আবার দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে। এরপর ৩ জুলাই মৃত্যু হয় ৪২ জনের। ওই দিন শনাক্ত হয় ৩ হাজার ১১৪ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ৬৫০টি। পরের দিন ৪ জুলাই ২৯ জনের মৃত্যু হয়। ওই দিন নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ৭২৭ জন, যার মধ্য থেকে শনাক্ত হয় ৩ হাজার ২৮৮ জন। গত ৫ জুলাইয়ের স্বাস্থ্য বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারান ৫৫ জন। এদিন শনাক্ত তিন হাজারের নিচে নেমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৩৮ জন। তবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছি ১৩ হাজার ৯৮৮ জনের। পরের দিন ৬ জুলাই মৃত্যু হয় ৪৪ জনের। এদিন ১৪ হাজার ২৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ৩ হাজার ২০১ জন। গত ৭ জুলাইও মৃত্যু হয় ৫৫ জনের। এদিন শনাক্ত হয় ৩ হাজার ২৭ জন। নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৩ হাজার ১৭৩ জন। পরদিন ৮ জুলাই মৃত্যু হয় ৪৬ জনের। এদিন ১৫ হাজার ৬৭২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৪৭৯ জন। গতকাল ৯ জুলাই মৃত্যু হয় ৪১ জনের। এদিন ১৫ হাজার ৬৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৩৬০ জন। [caption id="attachment_222470" align="aligncenter" width="960"] করোনা রোগীদের পাশে নার্সরা[/caption] গেল ১০ দিনের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ১ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যু ও শানাক্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ রেকর্ড আর অতিক্রম করেনি। যদিও এর মধ্যে পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ানো হয়নি। দৈনিক মৃত্যুর হার কমার সঙ্গে সঙ্গে কমেছে পরীক্ষার সংখ্যাও। তবে পরীক্ষা বাড়ানো হলে মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়বে এমনটা ভাবছেন না অনেকে। তবে শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার খুব একটা কমেছে বলেও মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসেছে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। এপর্যন্ত দেশে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ লাখ ১৮ হাজার ২৭২টি। এর মধ্য থেকে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ জনে। এর মধ্য থেকে মোট মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২৭৫ জনের। এপর্যন্ত দেশে মোট সুস্থ হয়েছেন ৮৬ হাজার ৪০৬ জন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App