নদের পানি যখন খুশি বাড়ছে-কমছে!
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২০, ০৪:২৫ পিএম
ছবি: প্রতিনিধি
ছবি: প্রতিনিধি
ছবি: মাসুদ পারভেজ রুবেল
নৌকাই তার ঘরবাড়ি
নৌকা নিয়ে এ চর ও চর
একটুখানি শুকনা জায়গায় ঘরপাতা
পানি কমছে আর বারছে যখন খুশি আসে আর যায়। ফসলের অনেক ক্ষতি হইছে। সকালে হঠাৎ উইডা দেহি ব্রহ্মপুত্র নদে আবার পানি আইছে। কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চর ইটালুকান্দা গ্রামের দিনমজুর মোগল হোসেন। তিনি জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে দিন মজুরি কাজ করে সংসার চলে তার। করোনা ভাইরাসের কারণে গত তিন মাস কাজকাম নেই। এদিকে আবার বন্যা। ঘরবাড়ি জমি সব তলিয়ে গেছে। রান্না দিনে একবার হয়। বিশুদ্ধ খাবার পানিও নেই। মাঝে মাঝে শুধু লবণ মিশিয়ে ভাত খেতে হয়। পড়েছি অর্থসংকটে।
মোগল হোসেনের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন। সংকট হচ্ছে খাবারের। এমন পরিস্থিতিতে তাকিয়ে আছে সরকারি সহযোগিতার। অসহায় শিশু ও পরিবার নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে ৫ বারের নদী ভাঙা এই পরিবারের। নিজের জমি বলে কিছুই নেই তার। অন্যের ৬ শতাংশ জমি বন্ধক নিয়ে বাড়ি করে আছে। তিনি বলেন, সরকার যদি নদের পাড় ভালো করতো তাহলে আমাদের মনে হয় এমন কষ্ট বারবার হতো না।
[caption id="attachment_230588" align="aligncenter" width="1280"] নৌকা নিয়ে এ চর ও চর। ছবি: মাসুদ পারভেজ রুবেল।[/caption]একই গ্রামের বাহর আলী ১১ জন পরিবার সদস্য সংখ্যা নিয়ে নিজ নৌকায় বসবাস। পেশায় নৌকা চালক। নৌকা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে। ব্রহ্মপুত্র নদে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি হওয়ায় বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। দিন রাত কাটছে নৌকায়। কৃষি জমিও নেই তাদের। সোমবার (৬ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়।
পাশ্ববর্তী গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মো: মগল আলী এর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, পরিবারটা খুব অসহায়। দিন এনে দিন খেতো। করোনার জন্য কাজ নেই ।আবার পানি আসছে। খুব কষ্টে দিন চলছে তাদের। এই দুর্যোগ সময় সরকারের সহযোগিতা পেলে এই পরিবারগুলো খেয়ে পড়ে ভালোভাবে বাঁচতে পারবে।
[caption id="attachment_230589" align="alignnone" width="1280"] একটুখানি শুকনা জায়গায় ঘরপাতা। ছবি: মাসুদ পারভেজ রুবেল।[/caption]ইউপি সদস্য শাজাহান আলী বলেন, আমরা নিজেরাও পানিবন্দী। ব্যক্তিগতভাবে যতটুকু সম্ভব আমার ওয়ার্ডের মানুষদের সহযোগিতা করছি। এখন পর্যন্ত সরকারের কোনো প্রকার সহযোগিতা পাইনি।
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কে এম ফজলুল হক মন্ডল বলেন, যতটুকু সম্ভব খোঁজ খবর নিচ্ছি। এই বন্যায় আমার ইউনিয়নের প্রায় ২২ হাজার মানুষ পানি বন্দী।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান জানান, বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানিতে ডুবে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পর্যায়ক্রমে সহযোগিতা করা হবে।