×

সারাদেশ

তদন্ত না করে অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২০, ১২:০৫ পিএম

তদন্ত না করে অভিযুক্তকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

রাষ্ট্রের তেল বিপণন প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েলের তেল পাচারের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের কোনো শাস্তি হয়নি। এমনকি এ ঘটনা তদন্তে কোনো কমিটিও হয়নি। উল্টো এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ নানাভাবে অপচেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্বার্থান্বেষী এই মহলটি অসাধু চক্রকে বাঁচাতে নানা ধরনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যমুনা অয়েল কোম্পানি পুরো বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে রাজশাহীর রেলওয়ের ডিপোতে তেল পাচারের ঘটনায় ডিপো ইনচার্জসহ ৭ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছে রাজশাহীর রেলওয়ে পুলিশ। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল রাজশাহী রেলওয়ে ডিপো থেকে ৬ হাজার ৯২৫ লিটার ডিজেল পাচারের সময় ডিপো ইনচার্জ আমজাদ হোসেনসহ ৩ জনকে হাতেনাতে আটক করে রাজশাহী রেলওয়ে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তারা এখনো কারাগারে আছেন। ডিজেল পাচারের ঘটনায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ পাকশীর ডিএসই (লোকো) আশীষ কুমার মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম গঠন করে। কমিটি প্রাথমিক তদন্তে যমুনার রাজশাহী ডিপো ইনচার্জ আমজাদ হোসেনকে তেল পাচারের মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু ঘটনার দুই মাস পার হলেও যমুনা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত না করে উল্টো ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে কোম্পানির পার্সোনেল বিভাগের প্রধান ডিজিএম (এইচ আর) মাসুদ করিম ও পরিচালন বিভাগের প্রধান জিএম (অপারেশন্স) কাজী মনজুর রহমানের বিরুদ্ধে। সূত্র জানায়, তেল চুরির মূলহোতা আমজাদ হোসেন এর আগেও যমুনা অয়েল কোম্পানির ২০ লাখ টাকার তেল পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। কোম্পানির চিলমারী ডিপোর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ২০ লাখ টাকার তেল পাচার করেন তিনি। কোম্পানির ম্যানেজার (ফাইন্যান্স) উত্তম কানুনগোকে প্রধান করে গঠিত দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি আমজাদ হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়। কিন্তু রহস্যজনকভাবে আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পুরস্কারমূলক বদলি করা হয়। তাকে প্রথমে বগুড়ার সেলস অফিসে পরে আরো বড় দায়িত্ব দিয়ে রাজশাহীতে গত বছর ২৩ অক্টোবর নিয়ম ভঙ্গ করে যমুনার ডিপো ইনচার্জ হিসেবে বদলি করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, অত্যন্ত গোপনীতায় বদলি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এদিকে রাজশাহী ডিপো ইনচার্জ হিসেবে আমজাদ হোসেনকে বদলির বিষয়ে পরিচালন বিভাগ রহস্যজনকভাবে নীরব থেকে সমর্থন যুগিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিচালন বিভাগের প্রধান জিএম (অপারেশন্স) কাজী মনজুর রহমান এই বদলির বিষয়ে কোনো আপত্তিপত্র দেননি। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার বিকালে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আনসারী ভোরের কাগজকে বলেন, তেল পাচারের ঘটনা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সে এখনো কারাগারে আছে। করোনা সংকট কেটে গেলে আনুষ্ঠানিক তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোম্পানির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (এইচআর) মাসুদ করিম ভোরের কাগজকে বলেন, আমজাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। করোনা সংকট কেটে যাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক তদন্ত কমিটি করা হবে। ২০১৮ সালের তেল চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও আমজাদ হোসেনকে রাজশাহী ডিপো ইনচার্জ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেখানে দায়িত্ব দেয়ার মতো লোক ছিল না বলে আমজাদ হোসেনকে সেখানকার ইনচার্জ করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানির এক কর্মকর্তা বলেন, ডিপো ইনচার্জের মাধ্যমে রাজশাহী রেলওয়ের তেল চুরির ঘটনা পুরো যমুনা পরিবারের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে ও কোম্পানিকে কলঙ্কিত করেছে। এর দায় কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা ও আমজাদ হোসেনকে পুনর্বাসনকারীরা এড়াতে পারেন না। শীর্ষ কর্মকর্তাদের অব্যবস্থাপনায় কোম্পানিকে আজ এই পরিস্থিতিতে দাঁড় করিয়েছে। তাই আমজাদ হোসেনের পাশাপাশি শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App