×

জাতীয়

‘সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড’ চালুর পরামর্শ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২০, ০১:১৬ পিএম

‘সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড’ চালুর পরামর্শ

প্রতীকী ছবি।

কোভিড-১৯ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে বড় সংকট কাল। এই সময়ে মানুষ মানসিক চাপে বেশি ভুগছে। যা সাধারণ মানসিক চাপের চেয়েও বেশি। যিনি আক্রান্ত হচ্ছেন তিনি মৃত্যুর কাছাকাছি যাচ্ছেন। কেউ কাছের মানুষকে হারাচ্ছেন। অপরদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও মানুষ সন্তুষ্ট হতে পারছে না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অনিশ্চয়তার কারণে হতাশা-উদ্বিগ্নতা বেড়ে যাচ্ছে। যা মানসিক চাপ বাড়াচ্ছে। ভবিষ্যতে যা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আর তাই মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে এখনই ‘সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড’ চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন মনোচিকিৎসকরা।

শনিবার (৪ জুলাই) রাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরামের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন অনলাইন আলাপচারিতায় তারা এই পরামর্শ দেন। এতে অংশ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রি অ্যান্ড সাইকোথেরাপি বিভাগের অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ ও জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির মেন্টাল হেলথ বিভাগের প্রকল্প পরিচালক ডা. এম তাসদিক হাসান। সঞ্চালনা করেন বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. জিয়াউদ্দিন হায়দার।

অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার বলেন, আমরা এখন স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের মধ্যে আছি, ছয় মাস পার হয়ে গেলে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের মধ্যে অনেকে চলে আসবে। এখন থেকেই ফার্স্ট এইড চালু করতে পারলে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার কমানো সম্ভব হবে।

ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শিশু-কিশোরদের মানসিক চাপটা বেশি। কারণ বাবা-মায়ের মানসিক চাপ তাদের ভেতরে সংক্রমিত হচ্ছে। যারা সরাসরি সেবা দিচ্ছেন, তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর ঘাটতি আছে। কষ্টকর পোশাক পরে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টার কাজ করছেন। তারপরও সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, স্বীকৃতির অভাব রয়েছে। পরিবারের কেউ সংক্রমিত হলে তারা নিজেদের দায়ী করছেন। তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার দায়িত্ব টিম লিডারদের। মনে রাখতে হবে, কোভিড-১৯ মোটেই একশ মিটারের রেস না, এটা ম্যারথন। আমি নিজে সরাসরি আইসিইউতে গিয়ে কথা বলেছি, চিকিৎসকদের মনোবলে ঘাটতি নেই। তবে প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্তের কারণে মানসিক কষ্ট তৈরি হয়েছে। সেই জায়গায় যেন প্রশাসন সচেতন হয়। নীতিনির্ধারক পর্যায়ে যারা আছেন তাদেরও মানসিকতার পরবির্তন হওয়া জরুরি।

ডা. এম তাসদিক বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, নারী চিকিৎসকদের মানসিক চাপ অনেক বেশি। এটার পেছনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, ও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। তাদের সামজিক সুরক্ষাও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সামাজিক যে কুসংস্কারগুলো দেখা যাচ্ছে, ডাক্তারদের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানেও প্রশ্ন আছে, রাষ্ট্র কেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না? আরেকটি বিষয় ভাবতে হবে, ইতোমধ্যে যারা মানসিক সমস্যায় আছেন, তারা যদি হাসপাতালে যেতে না পারেন তাদের চিকিৎসা পদ্ধতি কী হবে? সব ধরনের প্রতিবন্ধকতাকে বিবেচনায় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। অনেক তথ্য যা এখনো বিজ্ঞানসম্মত না, সেগুলো আমরা বিশ্বাস করছি। যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাবে ফেলছে। তাই এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App