×

জাতীয়

কুরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২০, ১০:৩৬ এএম

কুরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

খামারি

কোরবানির ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে দেশের পশু খামারিদের দুশ্চিন্তা ততই বাড়ছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ না কমায় তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। খামারিরা পশু বাজারে নিতে পারবেন কিনা, বাজারে নিলেও ক্রেতা মিলবে কিনা, ক্রেতা মিললেও দাম সঠিক পাবেন কিনা এসব নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশে মোট পশুর সংখ্যা দুই কোটি ৪০ লাখ। সবমিলিয়ে কুরবানির জন্য এক কোটি ২০ লাখের বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর দেশে কুরবানিযোগ্য প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ পশু প্রস্তুত ছিল। আর গত বছর কুরবানিতে জবাই করা হয়েছিল এক কোটি ছয় লাখ পশু। ১২ লাখ অবিক্রিত ছিল। যা এবার আবার বাজারে উঠবে। বর্তমানে দেশে অসংখ্য গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া এমনকি কিছু উট ও দুম্বার খামারও গড়ে উঠেছে। গ্রামের একজন বিধবা মহিলা বা সাধারণ কৃষক থেকে শুরু করে লাখ লাখ মানুষ গরু, ছাগল, ভেড়া পালন করেন। এখন অনেক শিক্ষিত যুবক ডেইরি ফার্ম ও গরু মোটা তাজাকরণকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। যে কারণে সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বড় বড় গরু, ছাগলের খামার গড়ে উঠেছে। সারাবছর কসাইদের কাছে বিক্রির পাশাপাশি কিছু কিছু স্পেশাল গরু তৈরি করা হয় কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে। খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা নিয়ে তারা এখনো দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারেননি। মূলত কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে সারাবছর গরু লালন-পালনে তারা বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেন। তাই এখন পশু বিক্রি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন দেশের খামারিরা। চুয়াডাঙ্গার খামারি মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা সারাবছর গরু মোটাতাজা করে কুরবানির ঈদের অপেক্ষায় থাকি। বড় ও দেখতে সুন্দর গরুগুলো কুরবানিতে ৩/৪ লাখ টাকায় বিক্রির আশায় ভালো ভালো খাবার খাইয়ে লালন-পালনের পর যদি সেগুলো বিক্রি না হয় তাহলে আমাদের প্রচুর লস হবে। নাটোরের খামারি করিম মিঞা বলেন, আমার খামারের ষাঁড় বাচ্চাগুলোর মধ্যে যেগুলো দেখতে সুন্দর সেগুলো কুরবানির জন্য লালন-পালন করি। বাকিগুলো আগেই বিক্রি করে দেই। এবার তিনি ২৫টি গরু মোটাতাজা করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, এত টাকা বিনিয়োগ করে যদি কুরবানির ঈদে দাম ভালো না পাই তাহলে আমাদের মতো খামারিদের দুঃখের সীমা থাকবে না। গরু পালন করতে গিয়ে অনেক লোন হয়েছে। ধার-দেনা করে কুরবানির আশায় গরু পালন করেছি। করোনার বর্তমান অবস্থায় এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি। এক প্রশ্নের জবাবে করিম মিঞা বলেন, সারাবছর আমরা পরিশ্রম করে গরু পালন করি, কিন্তু আমরা বেশি লাভ করতে পারি না। কয়েক বছর ধরে ঢাকার বড় বড় ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে গরু কিনে অনলাইনে ছবি দিয়ে বিক্রি করে ফায়দা লোটে। তার মধ্যে এবার গো-খাদ্যের দাম অত্যধিক বেড়ে গেছে। এ কারণে গরু পালনে খরচও বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অনেকেই গরুর হাটে আসবে না। তখন বাজার ফ্লপ করবে। এ অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আমার ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা লোকসান হবে। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার বলেন, এ বছরও আমাদের দেশে যে পশু আছে তা কুরবানির জন্য যথেষ্ট। দেশের বাইরে থেকে গরু আনার কোনো প্রয়োজন নেই। গত বছর অমাদের কুরবানিযোগ্য পশু ছিল প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ। এর মধ্যে কুরবানিতে পশু জবাই করা হয়েছিল এক কোটি ছয় লাখ। গত বছরের প্রায় ১২ লাখ পশু অতিরিক্ত ছিল। কুরবানির পশুর কোনো অভাব হবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App