×

শিক্ষা

কারিগরি শিক্ষায় বয়সের সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২০, ০৬:০১ পিএম

কারিগরি শিক্ষায় বয়সের সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান

আইডিইবি

আইডিইবি গভীর উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ করছে যে, ১ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির নীতিমালায় বয়স অবারিত করা এবং গত বছরের ন্যুনতম জিপিএ ৩.৫০ এর পরিবর্তে হ্রাস করে ২.৫০ করার মত আত্মঘাতি ও হটকারী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। যার প্রেক্ষিতে দেশের কারিগরি শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাড়াবে।

শনিবার (৪ জুলাই) আইডিইবি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত ভাচ্যুয়াল সভা থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ১ জুলাই ২০২০ এর হটকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করে ২০১৯ এর বিধিমালা তথা জিপিএ ৩.৫০ ও গনিতে জিপি ৩.০ এবং ২০১৮-২০১৯-২০২০ (৩ বছরের) এর শিক্ষার্থীদের ভর্তির যোগ্যতা নির্ধারণ করে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যথায় দেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও পলিটেকনিক এর ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক সকলে মিলে উক্ত আত্মঘাতি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। যা করোনাকালীন এই দুর্যোগের সময় সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে। বয়স্কদের জন্য সরকারি পলিটেকনিক, টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, জনশক্তি ব্যুরোর আওতাভুক্ত টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে ৬ মাস থেকে ১ বছর ব্যাপী দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে। এছাড়াও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এনটিভিকিউএফ (ঘঞঠছঋ) আওতায় যে কোন বয়সের ব্যক্তি লেভেল-৫ পর্যন্ত দক্ষতা সনদ অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। দেশের স্বার্থে এনটিভিকিউএফ কে আরও জোরদার করা যেতে পারে।

সভা থেকে শিক্ষামন্ত্রীকে ১ জুলাই ২০২০ এর গৃহীত হটকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও ফিল্ডে কাজ করা অংশজনদের মতামতের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের অনুমোদিত ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী ছাত্র ভর্তি এবং প্রয়োজনে স্টাডি ও রিসার্চের মাধ্যমে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সরকার কর্তৃক কোনো স্টাডি ছাড়া ঘোষিত হটকারী নীতিমালা বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ২০১৯ সালের নীতিমালা অনুযায়ী দেশের সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ২০২০ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ছাত্র ভর্তি করার জন্য আইডিইবি'র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভা থেকে আহ্বান জানানো হয়।

উল্লেখ্য ২০১৯ সালে ভর্তি নীতিমালায় ন্যুনতম জিপিএ ৩.৫০ ও গনিতে জিপি ৩.০ এবং ২০১৭-২০১৮-২০১৯ (৩ বছরের) এর শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ ছিল।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তিতে বয়সে বাঁধা তুলে দিলে সরকারি পলিটেকনিক এর শিক্ষার পরিবেশ কুলশিত হবে ও বয়সের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে। অন্যদিক ২০১৯ সালে সরকারি পলিটেকনিকে ৪৯ হাজার আসনের বিপরীতে ৯৮ হাজার আবেদন পরেছিল, তাহলে কি কারণে ৩.৫০ এর পরিবর্তে এ বছর ২.৫০ এ নামানো হলো- তা কারো বোধগম্য নয় এবং তা কারিগরি শিক্ষার মান নিম্নমুখী করার ষড়যন্ত্র।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই বিতর্কিত ও আত্মঘাতি সিদ্ধান্তের কারণে দেশের সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক এবং সর্বস্তরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে এবং যা বর্তমান পরিস্থিতি বিঘ্নিত করতে পারে বলে সমাজের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিগণ মনে করছেন।

প্রধানমন্ত্রী যেখানে কোভিড-১৯ এর মহাসংকট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে পলিটেকনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন একটি অগ্রহনযোগ্য, আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ অংঙ্গনকে অশান্ত করে তুলেছেন যা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্খিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App