×

জাতীয়

করোনা পরীক্ষায় নমুনা জট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২০, ০৯:৪৫ এএম

করোনা পরীক্ষায় নমুনা জট

নমুনা/ফাইল ছবি।

সাড়ে ৪ হাজার নমুনা আনা হচ্ছে ঢাকায় এন্টিবডি ও এন্টিজেন নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে আগামী সপ্তাহেই
অনেক ভোগান্তির পর করোনা পরীক্ষার নমুনা দিতে পারলেও সঠিক সময়ে মিলছে না রিপোর্ট। রিপোর্টের জন্য কমপক্ষে তিন দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনেকের রিপোর্ট মিলছে না ১৫ দিন থেকে এক মাসেও। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত উপসর্গ নেই এমন ব্যক্তি জানতেই পারেন না যে তিনি করোনায় আক্রান্ত কিনা। দীর্ঘ সময় রিপোর্ট না পেলে ওই ব্যক্তির মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। জনস্বাস্থ্যর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২৮ জুন করোনার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট দ্রুত সময়ের মধ্যে দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মনিরুজ্জামান লিংকন এটি দায়ের করেন। জানা যায়, রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ‘ব্যাকলক’ (পরীক্ষার জন্য নমুনা জড়ো হওয়া)। এদিকে খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, চট্টগ্রাম ও ফরিদপুরে সাড়ে চার হাজার নমুনা পরীক্ষার অপেক্ষোয় রয়েছে। ল্যাব স্বল্পতার কারণে তৈরি হয়েছে এই নমুনা জট। এই জট নিরসনে নমুনাগুলোকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) এই দুটি ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সাড়ে চার হাজার নমুনার মধ্যে দুই হাজার নমুনা আনা হচ্ছে চট্টগ্রাম থেকেই। এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্ভুল নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট সরবরাহ করতে ইতোমধ্যেই দুটি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নমুনা সংগ্রহ এবং তা পরিবহন করে ল্যাবে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরীক্ষার নির্ভুল রিপোর্ট নিশ্চিতের ক্ষেত্রে বড় ভ‚মিকা রাখে। এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এছাড়া সর্বোচ্চ তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার লক্ষ্যেও কাজ করছে তারা। এর আগে আরটিপিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি এন্টিবডি ও এন্টিজেন পরীক্ষা চালুর বিষয়টি জানিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। ইতোমধ্যেই এন্টিবডি ও এন্টিজেনবিষয়ক একটি নীতিমালার কাজ চ‚ড়ান্ত হয়েছে। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এই নীতিমালা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, করোনা পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে গঠিত বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ের গঠিত বিভিন্ন কমিটির কাছেও তা জমা দেয়া হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই নীতিমালা অনুমোদন পেতে পারে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল শুক্রবারের বুলেটিনে প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় একটি নতুন ল্যাব যুক্ত হয়ে দেশের মোট ৭১টি ল্যাব চালু হয়েছে। তবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে ৬৭টি ল্যাবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভোরের কাগজকে বলেন, করোনার নমুনা পরীক্ষায় আগের চেয়ে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়েছে। কারণ এখন থেকে রোগীরা ফি দিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আগেও আমাদের দায়িত্বের কোনো ঘাটতি ছিল না। নমুনা সংগ্রহ, পরিবহন ও পরীক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রেই আরো বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে সব এলাকায় ল্যাবের সুবিধা সমানভাবে পৌঁছেনি। ওই সব ল্যাব নমুনা পরীক্ষা করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তাই নমুনা ‘ব্যাকলক’ হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানেই ঢাকায় আনা হচ্ছে বেশ কিছু নমুনা। ব্যাকলকের কারণে নমুনা ঢাকায় আনার বিষয়টি স্বীকার করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগী অধ্যাপক ও কোভিড-১৯ বিষয়ক সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সদস্য সচিব ডা. রিজওয়ানুল করিম ভোরের কাগজকে বলেন, অপ্রয়োজনীয় নমুনা পরীক্ষা বন্ধে আমরা একটি অ্যাপস তৈরি করে দিয়েছি। সেখানে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয় ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার দরকার আছে কিনা। আগে যেহেতু তা মানা হয়নি তাই অনেকেই প্রয়োজন না থাকলেও পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছেন। আর ল্যাবের সুবিধা সমানভাবে না থাকায় কিছু নমুনা জমা হয়েছে। সেগুলোকে ঢাকার দুটি ল্যাবে এনে পরীক্ষা করানো হবে। জমে থাকা ওই নমুনাগুলো পরীক্ষা হয়ে গেলে এই সমস্যার সমাধান হবে। আমরা এখন কত দ্রুত নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে পারব সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। আমরা চাইছি সর্বোচ্চ তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App