×

সারাদেশ

জামালপুরে কমছে বন্যা, বাড়ছে দুর্ভোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২০, ০৩:১০ পিএম

জামালপুরে কমছে বন্যা, বাড়ছে দুর্ভোগ
জামালপুরে যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও কমছে না বন্যা কবলিতদের দূর্ভোগ। জেলা প্রশাসন বন্যা কবলিতদের দূর্ভোগ কমাতে ত্রান বিতরন শুরু করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নেই বলে দাবি করছে জনপ্রতিনিধিরা। তবে জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানিয়েছে পর্যায়ক্রমে ত্রান বিতরন চলছে, আরো ত্রানের জন্য ত্রান ও দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান- শুক্রবার সকালে যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে যদি বন্যা না হয় তবে যমুনার পানি কমতে থাকবে। আর যদি বন্যা হয় তবে যমুনার পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাবে এবং ভয়ঙ্কর আকার ধারন করবে। এছাড়া ব্রম্মপুত্র নদের পানি অব্যাহত থাকলেও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি এবং শাখা নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জেলার ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের পশ্চিম বামনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বন্যার পানিতে বাড়ি-ঘর, ফসলের মাঠ ও রাস্তা ঘাট ডুবে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্রীজ- কালভার্ট এবং বিভিন্ন সড়কের উচু জায়গায় পরিবার পরিজন ও গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বন্যা কবলিতরা। আশ্রিত একজন বন্যা কবলিত মো: আবুল হোসেন মন্ডল জানান- বন্যার পানি আটকে যাওয়ায় তাদের দূর্ভোগ কমছে না। অনেকদিন যাবত বন্যা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত ত্রান পায়নি তারা। দ্রুত ত্রানের দাবি করেন তিনি। একই এলাকার আরেকজন বন্যা কবলিত খুদেজা বেগম জানান- বন্যার পানি বাড়িতে ঢুকে যাওয়ায় ব্রীজে আশ্রয় নিয়েছে তারা। সপ্তাহখানেক যাবত বন্যা কবলিত হলেও কোনো জনপ্রতিনিধি তাদের খবর নেয়নি। কোনো ত্রান বা সাহায্য সহযোগিতা পায়নি তারা। খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছে তারা। চিনাডুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান- তার ইউনিয়নে ৫০ হাজার জনগনের ভেতর ৩৫ হাজার জনগন পানিবন্দি। তিনি এ পর্যন্ত ১৫টন ত্রান বরাদ্দ পেয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এই কারনে তিনি বন্যা কবলিতদের মাঝে প্রয়োজনীয় ত্রান বিতরন করতে পারছে না। তাই তিনি উপজেলা প্রশাসনের কাছে আরো ত্রান বরাদ্দ চেয়েছেন। ত্রানের বিষয়ে জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো: নায়েব আলী জানান- এ পর্যন্ত বন্যা কবলিতদের জন্য ৬০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পর তা পর্যায়ক্রমে সুষ্ঠুভাবে বিতরন করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় ত্রানের পরিমান কম হওয়ায় ত্রান ও দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ে ৭০০ মেট্রিক টন জিআর চাল, নগদ ১৪ লাখ টাকা ও ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এসব পেলে ত্রানের চাহিদা পূরন হবে বলে তিনি আশা করছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়- এ যাবত জেলার ৮টি পৌরসভাসহ ৭ উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়নের ৩১৯টি গ্রাম বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তের মাঝে ৮৫ হাজার ১৯৭ টি পরিবারের ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪২ জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। ২২০ টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৫৯৮৭টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১০ হাজার ১৯১ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এছাড়া ৪৮.৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও ৬.৭৫ পাকা রাস্তা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৫টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ৪টি ব্রীজ কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যা কবলিতদের স্বাস্থ্য সুৃরক্ষার জন্য ৪৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানা যায়। এযাবত পুরো জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ১০জন এবং সাপের কামড়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App