কথাসাহিত্যিক মকবুলা মনজুর আর নেই। শুক্রবার (৩ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসভবনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে দুই মেয়ে ও দুই ছেলেসহ বহু স্বজন-অনুরাগী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ লেখিকা সংঘের সভাপতি দিলারা মেসবাহ জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
মকবুলা মনজুরের জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার মুগবেলাইয়ে। তার বাবার নাম মিজানুর রহমান ও মায়ের নাম মাহমুদা খাতুন। বাবা মিজানুর রহমান লেখালেখি করতেন। তারা সাত ভাই-বোন।
তার তিন ভাই প্রাবন্ধিক ড. মোখলেসুর রহমান, চলচ্চিত্র পরিচালক ইবনে মিজান, প্রাবন্ধিক আজিজ মেহের। তিন বোন জোবেদা খাতুন, অধ্যাপিকা মোসলেমা খাতুন, মুশফিকা আহমেদ। তারা সবাই লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত। কিশোরী বয়সে তিনি নাটকে অভিনয় করতেন। বগুড়া থাকাকালীন তিনি বগুড়ার অ্যাডওয়ার্ড ঘূর্ণায়মাণ রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করেছেন। এছাড়া যুক্ত ছিলেন পটুয়া কামরুল হাসান প্রতিষ্ঠিত মুকুল ফৌজের সঙ্গে।
মকবুলার সাহিত্য চর্চা শুরু হয় আট বছর থেকে। তখন তিনি ছড়া লিখতেন। ১৮ বছর থেকে গদ্য সাহিত্যে অনুরাগী হন। তিনি স্বাধীনতা-উত্তর বাংলা সাহিত্যে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতি, সামাজিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট, নারীবাদী চেতনা নিয়ে তার কলম ধরেন। তিনি তার কালের মন্দিরা উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ওপর অত্যাচারের কাহিনী তুলে ধরেন।
মকবুলা মনজুর রচিত উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে- কালের মন্দিরা, আর এক জীবন, অবসন্ন গান, আত্মজা ও আমরা, প্রেম এক সোনালী নদী, বাউল বাতাস, ছায়াপথে দেখা, সায়াহ্ন যূথিকা, নক্ষত্রের তলে।
সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার শ্রেষ্ঠগ্রন্থ পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।