সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫ টি পাটকলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর আগে শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা বুঝিয়ে দেয়ারও কথা বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এর আগে সকালে গণভবনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর এক বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকেই পাটকলগুলোর উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান তিনি। সংবাদ ব্রিফিং আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।

মুখ্যসচিব বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন ও রিমডেলিংয়ের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হবে। এখানে কাউকে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে না। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করে তাদের অবসরে পাঠানো হচ্ছে। শ্রমিকদের আরো দক্ষ করতে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পরবর্তীতে এ কারখানাগুলো পুনরায় চালু হলে নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

বর্তমানে চাকুরীরত শ্রমিকদের পাশাপাশি অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেয়ার কথা জানিয়ে মূখ্যসচিব বলেন, ২০১৫ মজুরী কাঠামো অনুযায়ী পাওয়া পরিশোধ করা হবে। এই টাকা সরাসরি শ্রমিকদের একাউন্টে দেয়া হবে। যারা অবসরে গেছেন তাদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। যাদের পাওনা ২ লাখ টাকার কম তারা শতভাগ টাকা নগদ পাবেন। বাকিদের পাওনার ৫০ শতাংশ টাকা নগদ দেয়া হবে। বাকি ৫০ শতাংশ পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে দেয়া হবে। মূলত শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য ৫০ শতাংশ পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে দেয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মুখ্যসচিব বলেন, পাটকল শ্রমিকরা এতোদিন ঠিকমতো তাদের পাওনা পেতো না। এখন তাদের সব পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হবে। সঞ্চয়পত্র থেকে যে লাভ আসবে এতে শ্রমিকরা এখন যে অবস্থায় আছেন তার চাইতে বেশি ভালো থাকবেন। শ্রমিকদের পাওনা বুঝিতে দিতে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া জানান, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে থাকা ২৬টি পাটকলের মধ্যে মনোয়ার জুট মিল বাকি ২৫টি মিলে সবগুলোতেই উৎপাদন চালু রয়েছে। এসব পাটকলে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক রয়েছে। ১৯৭২ সালে বিজেএমসি প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৪ বছর লাভ হয়েছে। এর আগের ৪৪ বছর প্রতিষ্ঠানটি লোকসানে ছিল এবং এ পর্যন্ত এই পাটকলগুলোর পুঞ্জিভূত ক্ষতির পরিমাণ ১০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা।