×

সারাদেশ

মধ্যাঞ্চলে বন্যার অবনতি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অপরিবর্তিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২০, ১০:২৫ এএম

কাগজ ডেস্ক : যমুনা, পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্রে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দেশের মধ্যাঞ্চলের জেলা সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, রাজবাড়ী ও জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। অন্যদিকে তিস্তা, ধরলা, ঘাঘট ও সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও সুনামগঞ্জে বন্যার অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে এসব জেলায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে। নিচে এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট সিরাজগঞ্জ : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণের কারণে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে পাঁচ উপজেলার ৩১টি ইউনিয়নের চার হাজার ৯২৪টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ২২টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং চরাঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে ঘরবাড়ি ছেড়ে পানিবন্দি মানুষ বিভিন্ন বাঁধের উপর আশ্রয় নিচ্ছেন। তারা গবাদিপশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। কষ্টের বানে ভাসছেন পানিবন্দি মানুষ। এছাড়া অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর উপজেলায় ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, সিরাজগঞ্জে ১৪ সেন্টিমিটার ও কাজিপুরে ৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুরে যমুনার পানি স্থিতিশীল থাকবে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, বন্যায় সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার ৩১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। ২১৬টি গ্রামের ২৪ হাজার ৯২৪টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ২৮০টি ঘরবাড়ি আংশিক, ২২টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার রাস্তা ও বাঁধ এবং প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ১২৫ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বগুড়া : বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জেলার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদীতে পানি বাড়ার পর বর্তমানে তা স্থিতিশীল রয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৗশলী মো. মাহবুবুর রহমান। এদিকে যমুনা নদীর পানি বাড়ায় সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলের চালুয়াবাড়ী, কর্নিবাড়ী, কুতুবপুর, চন্দনবাইশা, কাজলা, কামালপুর, রহদহ ও সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল এবং পাট, ধানসহ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বাড়ায় নদী তীরবর্তী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আরো জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার হিসাব অনুযায়ী নদীর পানির স্তর ছিল ১৭ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অর্থাৎ গত ১২ ঘণ্টার শেষ হিসাব অনুযায়ী পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। ঈশ্বরদী (পাবনা) : পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীতে হুহু করে বাড়ছে পানি। ইতোমধ্যে উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ও সাঁড়া ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। বুধবার পদ্মা নদীর পানি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পাবনার পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, পদ্মা নদীতে বিপদসীমার পরিমাপ ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। বুধবার এখানে পানির প্রবাহ ১১ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার পরিমাপ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, পদ্মার পানি বাড়তে থাকায় নদী তীরের বেশ কয়েক স্থানে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান শরীফ জানান, নদীর পানি বাড়ছে। তবে এখনো বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি। ইতোমধ্যে ঈশ্বরদীর সাঁড়া, পাকশী, লক্ষ্মীকুণ্ডা এলাকার চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব রায়হান জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী তীরবর্তী এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ ও সহযোগিতা প্রদানের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া গেজ পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার তিনটি পয়েন্টের মধ্যে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া গেজ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮.৯৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই গোয়ালন্দের দুটি ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার পরিবার। জামালপুর : যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি না পেলেও ব্রহ্মপুত্র নদসহ শাখা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জামালপুরে বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে জেলার ছয়টি উপজেলার ১৮৫টি গ্রামের ৩ লাখ ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বুধবার বিকাল ৬টায় যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যমুনা নদীর পানি না বাড়লেও বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ অব্যাহত থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বন্যাকবলিতদের। দুর্ভোগে পড়া বন্যাকবলিতদের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, বানভাসিদের জন্য ৬০ টন চাল ও নগদ ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এসব ত্রাণ পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশঙ্কা পাশর্^বর্তী দেশ ভারতে যদি বন্যা হয় তবে বাংলাদেশে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হবে। এদিকে বুধবার দুুপুরে জেলার ইসলামপুরের হাড়িয়াবাড়িতে বন্যার পানিতে ডুবে আল-আমিন (৭) ও আলফিনা (৬) নামে দুই ভাইবোন নিখোঁজ হওয়ার ৪ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের মরদেহ উদ্ধার করেন। আল-আমিন ও আলফিনা পাথর্শী ইউনিয়নের পশ্চিম হাড়িয়াবাড়ি এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের সন্তান। এছাড়া বুধবার সকালে মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ঘোষেরপাড়া গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে শর্মিলা নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। উলিপুর (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের উলিপুরে ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। পানি কমলেও বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। পানিবন্দি এসব মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। এছাড়াও গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চারণভ‚মি নিমজ্জিত থাকায় ওই সব এলাকায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বানভাসি মানুষজন গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। বন্যাকবলিত এলাকার বীজতলা, পাট, শাক-সবজিক্ষেত নিমজ্জিত রয়েছে। এসব এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়ে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৬১টি ওয়ার্ডে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বুধবার বিকালে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ধরলা নদীর পানি ৩৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌল্লা বলেন, বন্যাকবলিত এসব মানুষের জন্য ২ হাজার ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার তৈরি করা হয়েছে। বুধবার দুটি ইউনিয়নে বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ইউনিয়নগুলোতেও বিতরণ করা হবে। সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কমলেও এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টিপাত হওয়ায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকার বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। শহরের নতুনপাড়া, হাজীপাড়া, কালীপুর, তেঘরিয়া আবাসিক এলাকার বাসাবাড়ি ও সড়কে পানি উঠেছে। এতে করে পৌর এলাকার বাসিন্দারা পড়েছেন চরম বিপাকে। অন্যদিকে নদীর পানি কমলেও বাড়ছে হাওরের পানি। সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওরের পানি বেড়েছে। এই ৫টি উপজেলার বিভিন্ন স্থান নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। দিরাই পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠেছে। বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে জেলাজুড়ে ক্ষতি হয়েছে রাস্তাঘাটের। ঢলের পানিতে ভেসে গেছে জেলার ২ হাজার ৩০০ পুকুরের মাছ। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। এছাড়াও জেলা সদর থেকে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক ও জামালগঞ্জ উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কের বিভিন্ন অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি নামলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ। ডিমলা (নীলফামারী) : নীলফামারীর ডিমলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো পানিবন্দি রয়েছে ৩ হাজার ২৪৫টি পরিবার। গতকাল বুধবার তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও তিস্তা নদীর অভ্যন্তরে চরাঞ্চলের বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করার কারণে ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া বিভাগের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বুধবার তিস্তার নদীর পানি ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মেজবাহুর রহমান মানিক বলেন, মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত উপজেলার বন্যাকবলিত ৬টি ইউনিয়নে বন্যাদুর্গত ও পানিবন্দি ৩ হাজার ২৪৫টি পরিবারের মাঝে ৪৮.৬৭৫ টন চাল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়, বন্যার কারণে বাড়ি ভাঙা ৬৯টি পরিবারের মাঝে নগদ ২ হাজার করে টাকা ও শুকনো খাবার বিতরণ করেন। এ সময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মেজবাহুর রহমান মানিক, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম, স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও প্রতিটি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি সামান্য কমলেও জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২৫৫টি চরের পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত পরিবারগুলো এবং বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পাননি বলে অভিযোগে জানিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ৭৫ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি ৪৭ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ফসলসহ প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে চীনা বাদাম, আউশ ধান ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগ ১০৫ একর উঁচু জমিতে বীজতলা তৈরি করেছে, যা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। সাঘাটা-গাইবান্ধা সড়কের ভাঙ্গামোড় এলাকায় সড়কের গাইডওয়াল ধসে গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাঁধের পশ্চিম পাশের মানুষজন। সংবাদ পেয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন এসে ধসে যাওয়া স্থানে কাঠের পাইলিং দিয়ে গাইডওয়াল রক্ষার চেষ্টা করেন। ফলে ওই এলাকায় সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন অব্যাহত থাকলে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App