×

সারাদেশ

এটাও একটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২০, ১০:০১ পিএম

এটাও একটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র!

ঘাসের জঙ্গলে বর্ষার পানিতে ভুতুড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

দূর থেকে দেখে যে কারো মনে হবে চারপাশে ফসলের ক্ষেত। মাঝখানে ছোট ছোট কয়েকটি পাকা ঘর। যেখানে নিরিবিলি পরিবেশে দেয়া হয় গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা। কিন্তু বাস্তবতা আসলে পুরোটাই ভিন্ন। চারপাশে রয়েছে ঘাসের জঙ্গল, আর মাঝখানের স্থাপনাগুলো দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত। তারওপর বর্ষায় অনেকটা পুকুরে রুপ নিয়েছে চত্ত্বরটি। এই হচ্ছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অবস্থা।

দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থায় পড়ে রয়েছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। গ্রামের মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে। কিন্তু তাতে সংশ্লষ্ট দায়িত্বশীলদের কিছুই আসে যায় না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনের সড়ক (কুষ্টিয়া-প্রাগপুর) দিয়ে অহরহ যাতায়াত করলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালুর ব্যাপারে কারো মাঝেই কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের এই দুর্দশা নতুন নয়। এমন নাজুক অবস্থায় পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে চারপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির যাবতীয় কার্যক্রম। স্বাস্থ্যসেবা তো দূরের কথা সেখানকার কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদেরই দেখা পাওয়া যায় না।

বুধবার (১ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে ভুতের বাড়ি বলে মনে হয়েছে। বাউন্ডারি ওয়ালের ভেতরেই চারপাশে ঘাসের জঙ্গলের সাথে যুক্ত হয়েছে বর্ষার পানিতে জলাবদ্ধতা। এসব ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সেবার জন্য নির্ধারিত ভবনগুলো তালাবদ্ধ দেখা যায়। ফলে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা কোনো রোগীও সেখানে পাওয়া যায়নি। সব মিলিয়ে এটিকে পরিত্যক্ত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বলেই মনে করছেন স্থানীয় লোকজন।

স্থানীয়রা জানালেন, মথুরাপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীরা মাঝে মধ্যে কিছু সময়ের জন্য সেখানে এলেও তারা কোনো স্বাস্থ্যসেবা না দিয়েই ফিরে যান। ইউনিয়নটির মানুষজন বছরের পর বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসলেও তাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।

এদিকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সচল রয়েছে বলে দাবি করলেও বাস্তবতার সাথে তাদের দাবির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা বলছেন, কালেভদ্রে সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা মিললেও মেলেনা চিকিৎসা সেবা। স্বাস্থ্যকর্মীরা এসেই তড়িঘড়ি করে গন্তব্যে ফিরে যান।

নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান জানান, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটির অচলাবস্থা ও জলাবদ্ধতা নিরসনে খুব দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বিত উদ্যোগ পেলে অনেক আগেই এই অচলাবস্থা নিরসন করা যেত বলে মনে করেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App