জীবিত ফিরে আসাদের বিস্ময়কর কাহিনি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২০, ১২:২৯ এএম
জীবিত উদ্ধার হওয়া সুমন ব্যাপারী।
এভাবেই উদ্ধার করা হয়েছিল রেশমাকে।
বর্তমানে রেশমার পরিবার।
মানুষ সাধারণত ৩-৫ মিনিট অক্সিজেন না পেলে জীবিত থাকা অস্ম্ভব হয়ে ওঠে। অক্সিজেনের জন্য মানুষ ছুটে বেড়ার দিক-বীদিক, যেমনটা চলমান করোনাকালেও আমরা দেখছি। আর যদি ঘটে কোনো অলৌকিক ঘটনা তাহলে তো কথাই নেই, অনেক দিন জীবিত থাকারও রয়েছে প্রমাণ।
এবার তুলে ধরছি এমনই একজনের নাম যিনি আজ সোমবার বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চের ভেতর থেকে ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। তার নাম সুমন ব্যাপারী। পেশায় তিনি একজন ফল ব্যবসায়ী। মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাহপুরে তার বাড়ি। সকাল ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা দোতলা মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ঘাটে ভেড়ানোর আগ মুহূর্তে ময়ূর-২ লঞ্চটি ধাক্কা দেয়। ফলে সঙ্গে সঙ্গে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়।
সোমবার রাত ১০টার দিকে ডুবুরিরা যখন টিউবের মাধ্যমে লঞ্চটি ওপরে তোলার চেষ্টা করছিলেন তখন লঞ্চটির একাংশ ওপরে উঠে আসছিল এবং ঠিক তখনই ওই ব্যক্তি লঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসেন। ডুবুরিরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে লাইফ জ্যাকেটে ঢেকে এবং শরীর মেসেজ করে তার শরীর গরম করার চেষ্টা করেন। এরপর সুমন চোখ মেলে তাকান। অলৌকিক ভাবে তার বেঁচে থাকার ঘটনা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। তবে ধারণা, তিনি যেখানে আটকা পড়েছিলেন সেখানে হয়তো সেভাবে পানি প্রবেশ করেনি।
পানির নিচ বেঁচে ফেরার এটিই প্রথম কোনো ঘটনা নয়। এর আগে ২০১৭ সালেও ঘটেছে অলৌকিক এই ঘটনা। সে সময় নদীর নিচ থেকে ২৮ ঘন্টা পর সোহাগ হাওলাদার (৩৫) নামের একজন জীবিত উদ্ধার হন। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবে যাওয়া বালুবাহী বাল্কহেডের ভেতর থেকে তিনি বেঁচে ফিরেন। তিনি ছিলেন ওই বালুবাহী জাহাজের ইঞ্জিন সহকারী। বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুমে পানি প্রবেশ না করায় এবং রুমে অক্সিজেন থাকায় তিনি বেঁচে গেছেন।
[caption id="attachment_228878" align="aligncenter" width="680"] এভাবেই উদ্ধার করা হয়েছিল রেশমাকে।[/caption]জীবিত হয়ে ফিরে আসার রয়েছে আরো বিস্ময়কর ঘটনা। রানাপ্লাজা ধ্বসের কথা হয়তো সবারই মনে আছে। প্রায় হাজারের অধিক মানুষ সেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে এবং অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন। যা আজো ভাবিয়ে ওঠায় সবাইকে। সেই সঙ্গে মনে আছে রেশমা নামের সেই মেয়েটির কথাও। যিনি ১৭ দিন পর বেঁচে ফিরেছেন। সে সময় তাকে নিয়েও হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
[caption id="attachment_228879" align="aligncenter" width="687"] বর্তমানে রেশমার পরিবার।[/caption]প্রকৃতি তার গতিতে চলমান। বিভিন্নভাবে মানুষকে ভাবাতে সাহায্য করে প্রকৃতি। প্রয়োজন মতো প্রকৃতি তার সম্পদ নিয়ে যায় আবার ফিরিয়ও দেও।বর্তমানের করোনাকালও এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। ধ্বংসকারী মানুষ ঘরে ফিরে আসায় আবার আপন রুপে, নিজস্ব শক্তিতে সাজতে শুরু করেছে প্রকৃতি। যা সবকিছু আমাদের কাছে এক বিস্ময়কর ও অলৌকিক ঘটনা।