×

জাতীয়

জেকেজি ছাড়াও আরো অনেক চক্র সক্রিয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২০, ০৯:৫২ এএম

জেকেজি ছাড়াও আরো অনেক চক্র সক্রিয়

আরিফুল চৌধুরী

পরীক্ষা ছাড়াই করোনা শনাক্তের অভিযোগে জোবেদা খাতুন সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার (জেকেজি হেলথকেয়ার) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কয়েক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হওয়ায় উৎকণ্ঠা বেড়েছে জনমনে। বিশেষ করে যারা জেকেজি বা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করোনার নমুনা জমা দিয়েছিলেন, তারা এখন চিন্তিত। এমন দুর্যোগেও টাকার বিনিময়ে রিপোর্ট কেনাবেচার মানসিকতাও ভাবিয়ে তুলেছে অনেককে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে জেকেজির অফিস থেকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল চৌধুরীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ বলছে, অনলাইনে সাইট খুলে বুকিং নিয়ে এরা মানুষের বাসায় গিয়ে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করত। বিনিময়ে পাঁচ হাজার থেকে আট হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হতো। কিন্তু সেই নমুনার কোনো পরীক্ষা ছাড়া এক দিন পরেই মনগড়া রিপোর্ট দেয়া হতো। এছাড়া রাজধানীর মুগদা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা ও নারায়ণগঞ্জে জেকেজি মোট ৪৪ বুথ স্থাপন করে স্যাম্পল সংগ্রহ করত বিনামূল্যে। এটি সেবামূলক কাজ হলেও আড়ালে তারা ভুয়া রিপোর্টের ব্যবসা করত বলে দাবি করে পুলিশ। এদিকে জেকেজির প্রধান গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদের কাছে স্যাম্পল দেয়া সন্দেহভাজন করোনা রোগী ও স্বজনদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। এ জাতীয় অন্য প্রতিষ্ঠানে স্যাম্পল দেয়া লোকজনেরও একই অবস্থা। পুরান ঢাকার খাজে দেওয়ান এলাকার বাসিন্দা আদেল সরদার জানান, তিনি তার এক আত্মীয়ের জন্য বাসায় স্যাম্পল সংগ্রহ করান। পরদিনই তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু এর কয়েক দিনের মধ্যে ওই বাসায় আরো কয়েকজনের শরীরে করোনার লক্ষণ দেখা দেয়, যাদের মধ্যে দুজনের পজিটিভ শনাক্ত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খিলগাঁও সি ব্লকের এক বাসিন্দা জানান, তিনি গত শনিবার জেকেজির মাধ্যমে স্যাম্পল দিয়েছেন। এখনো রিপোর্ট পাননি। আর রিপোর্ট পেলেও এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে মনে সন্দেহ রয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পুলিশ সূত্র জানায়, শুধু পরীক্ষা ছাড়াই সার্টিফিকেট দেয়া হচ্ছে তা নয়। অনেকে ইচ্ছে করেও ভুয়া সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নেগিটিভ সার্টিফিকেট দেয়ার ব্যবসা করে আসছে এক শ্রেণির প্রতারক। আর এ সার্টিফিকেট নিতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিচ্ছেন অনেক অসাধু ব্যক্তি। বিদেশ ফেরত ও বিদেশগামীরা এ সার্টিফিকেট নিচ্ছেন। এতে দেশে এসে কোয়ারেন্টাইনে না থাকা ও সামাজিকভাবে মিশতে অসুবিধা হয় না। আবার বিদেশ পাড়ি জামানোর জন্যও তাদের প্রয়োজন পড়ে নেগেটিভ সার্টিফিকেটের। গত মাসে জাপানের নাগরিকদের নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার পর একটি ফ্লাইটে চারজনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তবে তাদের কাছে নেগেটিভ সনদ ছিল। যেটি বাংলাদেশ থেকে নেয়া। একইভাবে বিশেষ ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে যাওয়া তাদের ১২ নাগরিকের করোনা ধরা পড়েছিল। তারা সবাই বাংলাদেশ থেকে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে গেছেন। গত ৩ জুন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাওয়া পাঁচ বাংলাদেশির শরীরে করোনা ধরা পড়ে। এ রকম আরো অনেক ঘটনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App