×

অর্থনীতি

ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের পাওনা পরিশোধ করবে ডিএসই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২০, ০৮:১৫ পিএম

গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের সব পাওয়া পরিশোধ করবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত যে হিসাব তাতে গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা যাবে। কোনো কারণে এ টাকা দিয়ে সম্ভব না হলে সিডিবিএলে থাকা শেয়ার বিক্রি করে তা পরিশোধ করবে ডিএসই।

রবিবার (২৮ জুন) বিকেলে তাৎক্ষণিক এক অনলাইন জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সানাউল হক।

তিনি জানান, এদিকে তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রবিবার জরুরি পরিচালনা পর্ষদ সভা করেছে ডিএসই। ওই সভায় দ্রুত বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরতের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

২০০৬ সাল থেকে কাজ করা ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠানটির তিনটি শাখা আছে। সবকটি শাখায় তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। বন্ধ করার আগে ওই হাউজটি থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকার শেয়ার কেনা হয়। তবে এর বিনিময়ে ডিএসইকে দেয়া চেক বাউন্স করে। ফলে হাউজটির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ডিএসই। তাদের কাউকে না পেয়ে কেনা শেয়ারগুলো সাময়িকভাবে ফ্রিজ করে রাখে। হাউজটি বন্ধ নিয়ে গত ২৩ জুন থেকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। এর আলোকে ঐক্য পরিষদের বিনিয়োগকারীরা ২৪ জুন সরেজমিনে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের প্রধান কার্যালয় গিয়ে তালা ঝুলছে দেখতে পায়। ওই সময় বহু বিনিয়োগকারী কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে। কিছু কিছু বিনিয়োগকারীকে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ থেকে দেয়া চেকও বাউন্স করেছে। হাউজ থেকে তাদের চেক দেয়া হয়েছে টাকা তোলার জন্য। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে তারা দেখে অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে ডএিসই ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর ৮২ হাজার কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট ফ্রিজ করা হয়েছে। যা বিনিয়োগকারীরা লিঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অন্য যেকোন ব্রোকারেজ হাউজে লেনদেন করতে পারবে। তবে ফ্রিজ করা শেয়ারের বাহিরে যদি পাওনা থাকে, তাহলে ট্রেক বিক্রি করে তা মেটানো হবে। ডিএসইর এই এমডি বলেন, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ একটি পুরাতন প্রতিষ্ঠান। এ হাউজটির আর্থিক হিসাব খারাপ ছিল না। এমনকি মে মাসেও সমন্বিত আর্থিক হিসাবে ঘাটতি ছিল না। তারপরেও অনাকাঙ্খিতভাবে একটি দূর্ঘটনা ঘটে গেছে। যা সমাধানে ডিএসই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। ডিএসই থেকে হাউজটির মালিকরা যেনো বিদেশে যেতে না পারে, সে লক্ষে পল্টন থানায় অভিযোগ করা হয় এবং মালিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করে। এখন তাদের ১০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।

হাউজটিতে বিনিয়োগকারীদের নিট পাওনার পরিমাণ জানতে ওই হাউজের বিনিয়োগকারীদের সবাইকে তাদের তথ্য ডিএসইকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেছেন ডিএসইর এমডি। এক্ষেত্রে তারা যত দ্রুত জানাবে, তত দ্রুত হাউজটিতে বিনিয়োগকারীদের দায়-দেনা জানা যাবে। তারা ডিএসইকে মেইলে বা সরাসরি উপস্থিত হয়ে তাদের পাওনা সর্ম্পক্যে জানাতে পারবেন। পাওনা টাকা নিয়ে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীদের হতাশ না হওয়ার অনুরোধ করেছেন কাজী সানাউল হক।

তিনি বলেন, ট্রেক ও সম্পদ বিক্রি করে পাওনা সমন্বয় করা হবে। এলক্ষ্যে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ওই হাউজের বিনিয়োগকারীরা যখন চেক ডিজঅনার পাচ্ছিল, তখন জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারতাম। তাই ভবিষ্যতে যেকোন হাউজের বিনিয়োগকারীদেরকে এ জাতীয় সমস্যার হলে, তা দ্রুত ডিএসইকে জানানোর অনুরোধ করেছেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসইর এমডি বলেন, আমার কাছে আজকে একটি মেইল এসেছে। তবে সেটা ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের কিনা, তা নিশ্চিত না। মেইলে ডিএসইর কাছে আর্থিক এবং আইনগত সহযোগিতা চেয়েছে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষ। একইসঙ্গে পাওনাদাররা বিভিন্ন হূমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ডিএসইর কিছু করার নেই। তাদেরকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App