×

জাতীয়

করোনা টেস্টে লাগবে ফি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২০, ০৯:২৭ এএম

দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এরপর থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৭ লাখ ১২ হাজার ৯৮টি নমুনা। এর মধ্যে ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জন। মোট নমুনা পরীক্ষার সিংহভাগই হয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নমুনা পরীক্ষার জন্য ফি দিতে হয় সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এই ফি সরকারই নির্ধারণ করে দিয়েছে। বিনামূল্যে হওয়ায় ব্যয়বহুল এই পরীক্ষাটির অনেক অপব্যবহার হচ্ছে। আর তাই এই অপচয় রোধে পরীক্ষাটির জন্য একটি মূল্য নির্ধারণ করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, গত ৩০ মে করোনা নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বৈঠককালে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইসব নির্দেশনার মধ্যে এটি একটি। ইতোমধ্যে করোনা পরীক্ষার জন্য একটি ফি চালুর ব্যবস্থা (অর্থ বিভাগের সম্মতি-সাপেক্ষে) অনুমোদনের প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতাল অনুবিভাগ থেকে পেশ করা হয়েছে। শুরুর দিকে শুধুমাত্র একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানে এই নমুনা পরীক্ষা করা হতো। সেই পরীক্ষা হতো রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ল্যাবে। সংক্রমণ বাড়ায় পর্যায়ক্রমে সরকারি বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলে নমুনা পরীক্ষার কাজটি করে যাচ্ছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, নমুনা পরীক্ষার ল্যাবের তালিকায় আরেকটি নতুন ল্যাব সংযুক্ত হয়েছে। সেটি হলো চট্টগ্রামের বেসরকারি পরীক্ষাগার শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাব প্রাইভেট লিমিটেড। এ নিয়ে মোট ল্যাবের সংখ্যা হয়েছে ৬৭টি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পরীক্ষার ফলে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এছাড়া প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে নমুনা পরীক্ষার অপব্যবহার হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ভোরের কাগজকে বলেন, গত বছর ডেঙ্গুর মৌসুমে সরকার ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য একটি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছিল। এক্ষেত্রেও তেমনটি করা হবে। এই ফি কী পরিমাণ হতে পারে সেই বিষয়টি এখনো নির্ধারণ হয়নি। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই মাহবুব ভোরের কাগজকে বলেন, সব নাগরিকের চিকিৎসা ব্যয় সরকারকেই বহন করতে হবে। দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে এ ধরনের আইনও রয়েছে। সরকার যদি অপচয় রোধের দোহাই দিয়ে বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি বন্ধ করে দেয়, তবে এতে প্রমাণিত হবে যে স্বাস্থ্যখাত বেসরকারিকরণ করে ব্যবসায়ীদের হাতে তা ছেড়ে দেয়া হলো। এতে গরীব মানুষ বিপদে পড়বে। জনগণের সরঙ্গ প্রতারণা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App