×

জাতীয়

করোনার শুরু থেকেই শক্ত অবস্থানে স্থানীয় সরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২০, ০৫:৪৭ পিএম

করোনার শুরু থেকেই শক্ত অবস্থানে স্থানীয় সরকার

আওয়ামী লীগের ওয়েবিনার

করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’-এর সপ্তম পর্ব শনিবার (২৭ জুন) রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পর্বের আলোচ্য বিষয় ‘জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার’ যেখানে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা এই সংকটে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি, স্বাস্থ্যবিধি পালনে উদ্বুদ্ধ করা, জলাবদ্ধতা নিরসন, জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আরও আলোচনা করা হয়, ডেঙ্গু নিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নকল স্বাস্থ্য উপকরণ বন্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় এ পর্বে আলোচক ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান (লিটন), নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু।

ফেসবুক কমেন্টের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি তাদের প্রশ্নগুলো আলোচকদের কাছে তুলে ধরা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ও আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে তাদের ভাবনা ও প্রত্যাশা সরাসরি জানানোর সুযোগ সৃষ্টির জন্যই ‘বিয়োন্ড দ্যা প্যানডেমিক’ নামে আলোচনা অনুষ্ঠান নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে।

আলোচনায় তাজুল ইসলাম এমপি বলেন, সামাজিক পরিবর্তনের জন্য এবং মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য যে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারে সেটা স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা। যদি জনপ্রতিনিধিদের তাদের স্বীয় দায়িত্বটি পালনের জন্য আমরা সক্ষম করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নতি করা অসম্ভব কিছু না। তিনি আরো বলেন, যখন করোনা বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করে তুললো তখন এই জনপ্রতিনিধিরাই গ্রামে গঞ্জে ঘুরে ঘুরে মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়িয়েছে, অসহায় মানুষের মাঝে দিন রাত খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ডেঙ্গু মোকাবেলায় জনসচেতনতা শুরু করলাম, মানুষের বাসা বাড়িতে অফিসে গিয়ে অভিযান চালিয়েছি এবং করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর শহরের নানা জায়গায়, রাস্তাতে জীবাণুনাশক ছিটাতে শুরু করি। বাস ও বাস টার্মিনালগুলোকে জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করতে সর্বদা চেষ্টা করবো, সেই সঙ্গে জনগণকেও সচেতন হতে হবে। তিনি আরো বলেন, সিটি করপোরেশনে পরিচ্ছন্নতা কর্মী যারা আছেন তাদের সুরক্ষার জন্য ৫ হাজার পিপিই দিয়েছি এবং প্রায় ৩০০০ কর্মীর জন্য হেলথ ও লাইফ ইনস্যুরেন্স চালু করার ব্যবস্থা নিয়েছি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা প্রথমেই করোনা মোকাবেলায় ত্রাণ বিতরণ করেছি, জনসচেতনতার জন্য রেকর্ডিং মাইকিং চালু করেছি। আমাদের মহানগর হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেই সেখানে ভেন্টিলেটরসহ ৫ বেডের আইসিইউ বেড স্থাপন করেছি। তিনি আরো বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে এবং মশকের প্রজনন ক্ষেত্রগুলোকে নিধন করার জন্য সকল জলাবদ্ধ লেক ও জলাশয়গুলোকে পরিষ্কার করছি। সেই সঙ্গে তেলাপিয়া মাছ এবং হাস চাষ শুরু করেছি যাতে ডেঙ্গুর লাভা বংশবিস্তার না করতে পারে।

মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, করোনার শুরুতে আমরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়। ক্রমান্বয়ে স্বেচ্ছাসেবীসহ কর্মকর্তারা প্রতিওয়ার্ডে সচেতনামূলক কাজ করা হয়। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পরে শহরে ইতোমধ্যে বেসরকারিভাবে একটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে, যা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে এক যোগে কাজ করবে।

তিনি আরো বলেন, সামনে কোরবানি ঈদে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা আছে কিনা, বা কতটুকু কীভাবে ঠেকানো যাবে তা নিয়ে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগ ও রাজশাহী মেডিকেলের পরিচালকসহ সভা করেছি। কোরবানির হাটে আমরা দুটি করে গেইট রাখবো, ঢুকতে এবং বের হতে আলাদা গেইট ব্যবহার করা হবে। এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে কাজ করবে রাজশাহী সিটি।

মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ সদস্যের টিম করে কাজ করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ হটস্পট হিসেবে ধরা হয়। এর পরে নারায়নগঞ্জে পিসিআর ল্যাবে নিয়মিত টেস্ট করানো হচ্ছে। মার্চের পর থেকে ২৭ টি ওয়ার্ডের ৩৬ জন কাউন্সিলর এর উদ্যোগে করোনা সংক্রমণ রোধে কাজ করা হয়। নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে কাজ করে যাচ্ছে কর্মকর্তারা।

মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা মার্চের শুরু থেকে মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শহরের বিভিন্ন স্থানে আমরা হাত ধোয়া, হ্যান্ড সেনিটাইজার এর ব্যবস্থা করা হয়। এরপরে কর্মহীন মানুষদেরকে প্রতি ওয়ার্ডে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি চালু করা হয়। এখনো পর্যন্ত আমরা ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সহয়তা প্রদান করা হয়। বিভিন্ন নেতাকর্মী ও ব্যক্তি উদ্যোগে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ায় সবাই। ইতিমধ্যে আমরা ময়মনসিং মেডিক্যাল কলেজে কোভিড ইউনিট চালুর প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয় যা শেষ পর্যায়ে।

বরাবরের মতোই সপ্তম পর্বটিও সরাসরি প্রচারিত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ও অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। এছাড়া বিজয় টিভির পর্দায়, সমকাল, ইত্তেফাক, ভোরের কাগজ ও বিডিনিউজের ফেসবুক পেইজে সম্প্রচার হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App