×

রাজধানী

মাদকে যুক্ত হলে পুলিশ থেকে বিদায়: আইজিপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২০, ০৫:২৬ পিএম

মাদকে যুক্ত হলে পুলিশ থেকে বিদায়: আইজিপি

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইজিপি। ছবি: ভোরের কাগজ।

প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত ধনী দেশে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছেন। উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ বাহিনী গড়তে কাজ করছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি পুলিশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিবর্তনের মাধ্যমে পুলিশকে উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশে পরিণত করতে চান।

আইজিপি বলেন, উন্নত দেশের পুলিশ হতে হলে পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে বিট পুলিশি়ংয়ের মাধ্যমে, পুলিশকে মাদকমুক্ত হতে হবে, পুলিশে থেকে মানুষের কাছ থেকে অ‌বৈধ সু‌বিধা নেয়া যাবে না। মানুষের প্রতি নিষ্ঠুরতা নয়, মানবিক আচরণ করতে হবে। জনগণের সেবায় নিয়োজিত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের সার্বিক কল্যাণও নিশ্চিত করা হবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি। আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি তাঁর এ পাঁচ বার্তা সকল স্তরের পুলিশ সদস্যের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

শনিবার (২৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইন্সের নবনির্মিত ব্যারাক ভবন উদ্বোধনের সময় তিনি একথা বলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি ড. মো: মইনুর রহমান চৌধুরী, আবুল খায়ের গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো: আবু সাঈদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, অতিরিক্ত আইজিগণসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

আইজিপি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য ড্রাগ খাবে না, ড্রাগের সাথে কোনভাবেই সম্পর্কযুক্ত থাকবে না। কোন ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত হলে আক্রান্ত অংশ কেটে অপসারণ করা হয়। পুলিশের কোন সদস্য যদি ড্রাগের সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকে তাহলে নির্দয়ভাবে তাকেও বাংলাদেশ পুলিশ থেকে অপসারণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

আইজিপি বলেন, আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তখন পুলিশ এ ভাইরাস প্রতিরোধে সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অ‌পেক্ষা না ক‌রে জনগ‌ণের সুরক্ষায় কাজ শুরু ক‌রে‌ছে। এখন পুলিশের ২ লাখ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী রয়েছে।

করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা মাত্র দুই সপ্তাহে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে ২৫০ বেড থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করেছি। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় একটি উন্নত বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে, স্কুল-কলেজ এবং হোটেল ভাড়া করে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য যেখানে চার সপ্তাহের কম সময়ে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা যায় না, সেখানে মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতলে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে বিভাগীয় হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এর ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং মৃত্যুর হার কমছে। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে জাতীয় পর্যায়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩ ভাগ। পুলিশে মৃত্যুর হার মাত্র দশমিক ৫ ভাগ।

আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল দেশের বিভিন্ন হাসপাতল পরিদর্শন করে করোনা চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে সেরা বলে আখ্যায়িত করেছেন। চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলও করোনা চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসা প্রটোকল ও ব্যবস্থাপনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

প্যানডেমিক পুলিশিং ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তাদের দেশের প্যানডেমিক পুলিশিং গাইডলাইন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন দেশের গাইডলাইন সংগ্রহ করে বাংলাদেশ পুলিশের উপযোগী 'প্যানডেমিক পুলিশিং স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)' তৈরি করেছি। এখন আমাদের একজন পুলিশ কনস্টেবলও জানেন, কিভাবে প্যানডেমিক পুলিশিং করতে হয়।

আইজিপি বলেন, করোনা সংক্রমণ কিভাবে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। জাতীয়ভাবেও এ হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য সবাইকে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পারব।

আইজিপি করোনা আক্রান্ত হয়ে শাহাদাতবরণকারী ফ্রন্টলাইনার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক, পুলিশসহ সকলের আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App