×

ক্রিকেট

দেশের ক্রিকেটে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২০, ০১:৪৩ পিএম

দেশের ক্রিকেটে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি

সাবের হোসেন চৌধুরী। ফাইল ছবি

শুক্রবার ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক সোনালি দিন। বিশ বছর আগে বাংলাদেশ যখন আইসিসির সহযোগী সদস্য থেকে পূর্ণাঙ্গ সদস্য হয়, টেস্ট খেলিয়ে দেশের মর্যাদা পায়- তখন বিসিবির সভাপতি ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমী সাবের হোসেন চৌধুরী। তার সময়েই সাদা জার্সিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল আমিনুল ইসলাম বুলবুলরা। টেস্ট মর্যাদা লাভ করেছিল বাংলাদেশ। ২০ বছর পর দিনটিকে স্মরণ করে ইতিহাস, অর্জন, সফলতা, বিফলতা ও সম্ভাবনা সব ধরনের কথাই বললেন এই ক্রিকেটপ্রেমী।

শুক্রবার রাতে ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের ইউটিউব লাইভে যুক্ত হয়ে সেই টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার গল্প শুনিয়েছেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি মনে করেন, আসলে এ দীর্ঘসময়ে দেশের ক্রিকেটে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। তবে বিশ্বের ১০ নম্বর টেস্ট খেলুড়ে দেশ হতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। এমনি এমনি সেই স্বপ্ন হাতে এসে ধরা দেয়নি। আর সেই স্বপ্ন পূরণের অন্যতম কাণ্ডারী ছিলেন তৎকালীন বিসিবি সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

এ দীর্ঘসময়ের পথচলায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের কতটা উন্নতি ঘটেছে? মাঠ-মাঠের বাইরে ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড কেমন ছিল? সাফল্য-ব্যর্থতার পর্যালোচনা করলে চালচিত্র কী দাঁড়ায়?- এ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বিসিবির সাবেক প্রধান সাবের হোসেন চৌধুরীর মত, আসলে বাংলাদেশের ২০ বছরে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। সেই টেস্ট যাত্রা শুরু থেকে এ প্রায় দুই যুগে তেমন আগানো সম্ভব হয়নি। বরং পরিসংখ্যান ও রেটিং-র‌্যাঙ্কিং হিসেব কষে ব্যাখ্যা করলে, দেখা যাবে অবস্থার অবনতি ঘটেছে। আগের চেয়ে বরং পিছিয়েছে বাংলাদেশ।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আপনি যখন অনেকদিন ধরে কোনো লক্ষ্য সামনে রেখে আগানোর চেষ্টা করেন, সেটা পূরণ হবেই। আর সফলতা আসার দিনটি অন্যরকম এক বিশেষ দিন হয়ে যায়। ২০০০ সালের ২৬ জুন আমার কাছে ঠিক তাই।

বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা প্রাপ্তির দিনটি তার কাছে ফাইনাল পরীক্ষার মতো মনে হয়েছিল বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সেদিন প্রচণ্ড উত্তেজনা ও চাপ নিয়ে মনে একটা মিশ্র অনুভুতির সৃষ্টি করছিল। তবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পুরো পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে নেন সাবের হোসেন চৌধুরী ও তৎকালীন বিসিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল হক।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ওই সময় আমরা সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। ওয়েলিংটন গিয়েছি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কথা বলতে। দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছি, অস্ট্রেলিয়া গিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার বিষয়টি ছিল আইসিসির অন্যতম আলোচিত ইস্যু তখন। এর আগে হয়ে যাওয়া ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সভাতেও বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে কথা হয়েছিল। আমি সেই সভায় উপস্থিত ছিলাম। তারা আমাকে অনেক প্রশ্ন করেছিল। তিন-চার ঘণ্টা ধরে শুধু বাংলাদেশের ওপর নানান বিষয় জানতে চেয়েছিল। সব জবাব ঠিকঠাকভাবেই দিয়েছিলাম। বিশাল একটা মানসিক চাপ আমার ওপর দিয়ে গিয়েছিল সেদিন।

বিসিবির সাবেক সভাপতি বলেন, আমি মনে করি, সেটা আমার জন্য এক ধরনের ওয়ার্মআপ ছিল। ঐ ধরনের পরিবেশে তো আগে ছিলাম না। এটা আমার জন্য খুব ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার প্রসঙ্গে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সমর্থন প্রথম থেকেই ছিল। জিম্বাবুয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী ছিলাম। কেননা, জিম্বাবুয়ে ছিল আমাদের আগে সর্বশেষ টেস্ট মর্যাদা পাওয়া দেশ। শুধু ইংল্যান্ড নিয়ে অন্যরকম চ্যালেঞ্জ ছিল।

টেস্টখেলুড়ে ৯ দেশের অন্তত ৭টির সমর্থন আদায় করে নেয়াই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বলে জানান সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি জানান, ৭ দেশের ভোটের জন্য আগে থেকেই প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলাম।

সাবের হোসেন বলেন, আমাদের টার্গেট ছিল অন্তত ৭টি টেস্ট দল যেন আমাদের পক্ষে থাকে। ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ড নিয়ে টেনশনে ভুগছিলাম। পরে তারাও সমর্থন দিল তখন এটা সর্বসম্মতিক্রমে হয়ে গেল। অসাধারণ অনুভুতি উপভোগ করেছিলাম তখন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App