×

মুক্তচিন্তা

গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কৃষিতে গুরুত্ব দিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২০, ০৭:০০ পিএম

করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। দেশের অর্থনীতি প্রায় স্থবির। শহরাঞ্চলের সব শিল্প কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য এখন বন্ধ। বছরব্যাপী শহরে কাজ করা শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে গ্রামে ফিরে এসেছে। প্রবাসী শ্রমিকরাও কর্মসংস্থান হারিয়ে গ্রামে আসছে। শহর থেকে গ্রামে ফিরে যাওয়া কর্মহীনদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও বিদেশ থেকে আসা শ্রমিকদের গ্রামীণ অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি ইতালিতে ইফাদ সম্মেলনে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূর করতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের জন্য উন্নয়ন-সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ একটি প্রধান বিবেচ্য বিষয় এবং বিশ্বব্যাপী অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা ছাড়া এটি অর্জন করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান খুবই প্রাসঙ্গিক। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে কৃষিতে ভর্তুকি, সহজ শর্তে ঋণসহ কৃষি খাতে বিশাল বরাদ্দে আশার সঞ্চার হয়েছে। আমরা মনে করি, বাজেট বাস্তবায়ন ও ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিপণনে টেকসই বাজার ব্যবস্থা গড়তে পারলে লাভবান হবেন প্রান্তিক কৃষক। করোনার প্রভাব মোকাবিলায় বাজেটে কৃষককে টিকিয়ে রাখতে ২৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কৃষিতে ভর্তুকি, সার-বীজসহ পুনর্বাসন সহায়তা, সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা অব্যাহত থাকলে কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আমাদের জনসংখ্যার প্রায় ৭২ শতাংশ গ্রামাঞ্চলে বসবাস করে এবং ৪৩ শতাংশ কৃষি খাতে শ্রমজীবী হিসেবে কাজ করে; যারা দেশের জিডিপিতে ১৫ শতাংশ অবদান রাখছে। স্মরণকালের মহাদুর্যোগ ও সংকটেও গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণশক্তি কৃষি খাতে এই জনশক্তিকে কাজে লাগতে হবে। আশার খবর দেখছি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। নীরব বিপ্লব ঘটছে গ্রামে গ্রামে। মাঠের আবাদি জমিই কৃষকদের বড় সম্পদ। স্বাচ্ছন্দ্য, অনায়াস উদ্দীপনা, উদ্যম ও শক্তি নিয়ে দিনরাত মাঠে পরিশ্রম করে অর্থনীতির চাকা ঘুরাচ্ছেন কৃষকরা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে করোনার ধাক্কায় কৃষি উৎপাদন বেড়ে গেছে। বহু অনাবাদি জমি এসেছে আবাদের আওতায়। শুধু কৃষক নয়, এর সঙ্গে জড়িতরাও আর্থিকভাবে হচ্ছেন লাভবান। সারাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল মডেল হতে পারে। করোনার এই ক্রান্তিকালে দেশের শিল্প-বাণিজ্যের উৎপাদন স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। এই অবস্থায় কৃষি খাতকে চাঙ্গা করতে পারলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে যাবে। করোনায় কৃষি হতে পারে অর্থনীতি চাঙ্গা করার একমাত্র পথ। কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের ওপর ভিত্তি করে এসএমই খাতকে দাঁড় করানো যেতে পারে। বাজেটে কৃষি খাতের জন্য যে বরাদ্দ রেখেছে সরকার তার ব্যবস্থাপনা যেন ঠিক থাকে, প্রকৃত কৃষক যেন ঋণের সহযোগিতা পান। প্রকল্প বা উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকলে গ্রামীণ অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App