×

সারাদেশ

কুড়িগ্রামে বন্যায় পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২০, ০৮:১৪ পিএম

কুড়িগ্রামে বন্যায় পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ

ফাইল ছবি

কুড়িগ্রামে বন্যায় পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ

ছবি: প্রতিনিধি

কুড়িগ্রাম বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেয়া সময় সীমার আগেই বিপদসীমা অতিক্রম করেছে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বন্যার পানি ভাসিয়ে দিয়েছে নদ-নদী তীরবর্তী গ্রাম ও চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৮ উপজেলার অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

এসব বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে, বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের মৌসুমী ফসল ও সবজি ক্ষেত। এসব অঞ্চলের মানুষ কলাগাছের ভেলা এবং স্থানীয় নৌকায় করে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন।

এদিকে করোনায় কর্মহীন মানুষের মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে বন্যা আর নদী ভাঙন। তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনে এ পর্যন্ত ৩ শতাধিক পরিবারের ভিটা বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, শুক্রবার ( ২৬ জুন) বিকাল ৩টায় চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার, ও ধরলা নদীর পানি ধরলা ব্রীজ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়। তবে তা এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ব্রহ্মপুত্রের প্রত্যন্ত চরাঞ্চল, আসাম সংলগ্ন সীমান্তবর্তী মেকুরের আলগা গ্রামের পানিবন্দি আক্কাস আলী মোবাইল ফোনে জানান, তার গ্রামসহ দই খাওয়ার চর, আইরমারীর চর, গাঙচিলের চর ও মাঝের আলগা চরের প্রায় ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি ২ দিন ধরে পানিতে ডুবে আছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে দেখা দিয়েছে, অনেকে খাবার পানি পাচ্ছে না। কিছু কিছু পরিবারের কাছে চিড়া, মুড়িসহ শুকনো খাবার থাকলেও অধিকাংশের ঘরে তা নাই। এই পরিবারগুলো, চরে চাষ করা কুমড়া সিদ্ধ, মিষ্টি আলু সিদ্ধ খেয়ে দিন পার করছেন। বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্নাবান্না করাও কঠিন হয়ে পড়েছে ।

[caption id="attachment_228195" align="aligncenter" width="700"] ছবি: প্রতিনিধি[/caption]

হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, তার এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন নতুন এলাকায় পনি ঢুকে পড়ায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে, গাবুরজান, কামারটারি, চর গুজিমারী, চর দাগারকুটি, নীলকন্ঠ, কমদমতলা ও অনন্তপুর বাজারের কিছু অংশ।

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের জানান, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার চরাঞ্চলে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। হাতিয়া, সাহেবের আলগা ও থেতরাই, বজরা ও দলদরিয়া এলাকায় বহু ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

উলিপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ৪৮ মেট্রিক টন চাল শুকনা খাবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা ও শিশু খাদ্যের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা এখনো বিলি বন্টন শুরু হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সবক’টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় আগামী ৫ থেকে ৭ দিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, বন্যা মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App