×

রাজধানী

সমুদ্র অর্থনীতির সুফল পেতে বরাদ্দ দেয়া হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২০, ০৭:৫৩ পিএম

সমুদ্র অর্থনীতির সুফল পেতে বরাদ্দ দেয়া হবে

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নন বলেছেন, বাংলাদেশ সম্পদের সম্ভাবনাময় দেশ। আর এ ক্ষেত্রে সমুদ্রের সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। শুধু মাত্র দৃষ্টি ভঙ্গির কাণেই আমরা এই সম্পদকে কাজে লাগাতে পারছি না। ব্লু ইকোনোমিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে উন্নত করতে সরকারের পক্ষ থেকে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) “সেভ আওয়ার সি” শীর্ষক অনুষ্ঠানে সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে বাজেট পরবর্তী এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. কাজী আহসান হাবিব, ডিন, ফিসারিজ ফ্যাকাল্টি, শেরে-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এতে আরো বক্তব্য রাখেন- সেভ আওয়ার সি’র প্রধান বিজ্ঞানী ড. আনিসুজ্জামান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মোজাদ্দেদী আলফেসানী, সমূদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া, গ্রিক টেক ফাউন্ডেশনের সিইও মো. লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং কেপিসি পেপার কাপ ইন্ডাস্ট্রি চেয়ারম্যান কাজী সাজেদুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক।

এম এ মান্নান বলেন, বঙ্গোপসাগরকে আমরা বারবরই কম গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা বরাবরই স্থলের দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের সম্ভাবনার সব থেকে বড় ক্ষেত্র সাগর। আর এই সাগরের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে সর্বপ্রথম দৃষ্টি ভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। উন্নয়নের সুফল পেতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। আর এই উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে ব্যক্তির থেকে প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি আরো বলেন, জিডিপি’র এই ধারা অব্যাহত রাখতে সমূদ্র অর্থনীতির বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে যে ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন, তা করতে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক রয়েছেন বলে জানান।

মূল প্রবন্ধে কাজী আহসান হাবিব বলেন, গত দশ বছরে সামগ্রিকভাবে মাছের উৎপাদন বাড়লেও সাগরের মাছের উৎপাদন বাড়েনি। ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে গুরুত্ব দেয়ার কারনে। সুতরাং সমুদ্রকেও যদি সেইভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়, তাহলে জিডিপিতেও অবদান রাখা সম্ভাব। সমুদ্র সম্পদকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে সমুদ্র অর্থনীতির ৫০ শতাংশ মাছ থেকে আহরন করা সম্ভাব। একই সঙ্গে সমুদ্র জীববৈচিত্র রক্ষা করে সমুদ্র এবং উপকুলীয় পর্যটনকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত মাছ শিকার, কোরাল ধ্বংস, প্লাস্টিক ও কলকারখানার বর্জ্য ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। বঙ্গপোসাগরে শূন্য অক্সিজেন এলাকা তৈরি হয়েছে, তা মোকাবেলা করার জন্য সকল দেশকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।

মোজাদ্দেদী আলফেসানী বলেন, সমুদ্র থেকে প্রতি বছর আট বিলিয়ন টন মাছ আহরণ করা হয়। এছাড়া ১৫ হাজার টন রাসায়নিক উৎপাদনের সামগ্রী আহরণ করা সম্ভব। এমনকি সমুদ্রে শৈবল চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব।

মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সমুদ্র সীমা জয়ের পর থেকে নতুন করে কোনো কিছু করা হয়নি। এটাকে কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনা করা দরকার। শুধু মাত্র সম্পদের কাজে লাগানোর আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সেটাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়েও বিশ্লেষণ করতে হবে।

সাজিদুর রহমান বলেন, প্লাস্টিক শুধুমাত্র আইন করে নিষিদ্ধ করলেই কাজ হবে না। তার বিকল্প ব্যবস্থাও তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। ওয়ান টাইম বা সিঙ্গেল ইউজড প্লাস্টিক ব্যবহার উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা দিলেও তা বাস্তবে পরিণত হয়নি।

আনিসুজ্জামান খান বলেন, প্রত্যেক উন্নয়ন প্রকল্পের আগে পরিবেশের ক্ষতিকারক দিকটি নিয়ে একটি মূল্যায়ন করা হয়। সে ক্ষেত্রে সাগর কেন্দ্রীক উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষতিকারক দিক থাকলেও তা সমাধান করতে হবে। সংরক্ষিত এলাকা রক্ষায় বাজেট বাড়াতে হবে। সমুদ্র অর্থনীতি নামে বাজেটে আলাদা হেড থাকলেও একক বরাদ্দ নেই। সাগরের প্রকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় মেরিন স্পেশাল প্লানিং (এমএসপি) এবং ইএমএস তৈরি করে সকলকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

ফোরকান আহমেদ বলেন, একমাত্র কক্সবাজারকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে পর্যটন দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখা সম্ভব। তবে উন্নয়নের জন্য শুধুমাত্র ফাইল চালাচালির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না। সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে সকলকে কাজ করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App