সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হোটেল মোটেল, রেস্তোরা খোলার অনুমতি দিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম। এর ফলে আবার ফিরবে কুয়াকাটা সৈকতের প্রাণচাঞ্চল্য। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দীর্ঘ চার মাস বন্ধ থাকার পর আবাসিক হোটেল মোটেল রেস্তোোরা ও পর্যটনমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার নির্দেশনায় খুশি ব্যবসায়ীরা।

এ খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় পর্যটকরা অগ্রিম বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন- এমনটাই জানিয়েছে হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

[caption id="attachment_228046" align="aligncenter" width="1259"] সাগরের তীরবর্তি বালুতে লাল কাকরার বিচরণ।[/caption]

কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ১৪টি শর্ত মেনে চলতে হবে আবাসিক হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষকে। যে সকল আবাসিক হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে ব্যবস্থা। আবাসিক হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষ শর্ত মেনে আবাসিক হোটেল পরিচালনা করছে কিনা তা মনিটরিং করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি ভ্রাম্যমান টিম দেখভালের দ্বায়িত্বে থাকবে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

[caption id="attachment_228048" align="aligncenter" width="888"] সমুদ্র তীরে ভ্রমনার্থীরা।[/caption]

হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষ জানান, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দুই জনের কক্ষে একজন পর্যটক থাকতে পারবেন। একটি রুমে একাধিক পর্যটককে থাকতে দেয়া হবে না। ভাড়া পূর্বের নির্ধারিত চার্ট অনুযায়ী পরিশোধ করতে হবে। যেসকল পর্যটকরা স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না তাদেরকে হোটেলে ঢুকতে দেয়া হবে না। অপরদিকে স্বাস্থ্যবিধি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলার জন্য বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল মোটেল, রেস্তোরা মালিক ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিভাবে হোটেলে পর্যটকদের সেবা দিবেন সে বিষয়ে ট্যুরিজম বোর্ড ও হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে প্রশিক্ষন দিয়েছেন।

[caption id="attachment_228049" align="aligncenter" width="738"] কুয়াকাটার হোটেল সমূহ।[/caption]

গত ১৮ই মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত দীর্ঘ চার মাস বন্ধ থাকায় আবাসিক হোটেল মোটেল, রেস্তোরা, পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ট্যুর অপারেটর, ট্যুরিস্ট গাইডসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ঠ প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। এতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ইলিশ পার্ক ইকো রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ও ট্যুরিজম ব্যবসায়ী রুমান ইমতিয়াজ বলেন, করোনা থাকবে দীর্ঘদিন। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই আবাসিক হোটেল মোটেলসহ পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে হবে। তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। আগত পর্যটকদেরও স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসতে হবে। এর ফলে পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্ঠ প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ আবার কর্মমুখী হবে। ফিরে আসবে সু-দিন।

[caption id="attachment_228051" align="aligncenter" width="1000"] সূর্য ডুবে যাওয়ার আগ মুহূর্তে।[/caption]

কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ জানান, ব্যবসায়ীদের লোকসানের দিকে তাকিয়ে জেলা প্রশাসন এমন নির্দেশনা দিয়েছেন। যে সকল প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সুরক্ষা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরকারের দেওয়া শেষ প্রজ্ঞাপনে শর্তাবলি মেনে আবাসিক হোটেল খোলা রাখতে পারতো। কিন্ত কুয়াকাটার হোটেল মোটেল এতদিন বন্ধ রাখেন মালিকরা। এতে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই এর মাঝে তারা স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কর্মচারীদের ট্রেনিং দিয়েছেন। আশা করি সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে।