×

জাতীয়

রাব্বানী-সাদ্দাম চেয়ার ছাড়লেও বসে রইলেন নুর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২০, ০৪:৪১ পিএম

রাব্বানী-সাদ্দাম চেয়ার ছাড়লেও বসে রইলেন নুর

নুরুল হক নুর-গোলাম রাব্বানী-সাদ্দাম হোসেন

নির্ধারিত ৩৬৫ দিনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বর্তমান কমিটির অতিরিক্ত ৯০ দিনের মেয়াদও গতকাল সোমবার শেষ হয়েছে। ফলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, গতকালই ডাকসুর কমিটি ভেঙে গেছে। সে হিসেবে ডাকসুর বর্তমান নেতৃবৃন্দ এখন সাবেক হয়েছেন। অনেকেই তার ফেসবুকে ঘোষণা দিলেও ভিপি নুর দেননি এখনো। ডাকসুর গঠনতন্ত্রের ৬ (গ) ধারা অনুসারে, নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পদাধিকারীরা ৩৬৫ দিনের জন্য কার্যালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন না হলে তারা অতিরিক্ত ৯০ দিন দায়িত্বে থাকবেন। ওই ৯০ দিনের আগে যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন কার্যনির্বাহী পদাধিকারীরা। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাকসুর আগের কমিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেঙে যাবে। গত বছরের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে ডাকসুর জিএস, এজিএসসহ ২৫ পদের ২৩টিতে জয় পায় ছাত্রলীগ। ভিপিসহ দুটি পদে জয় পায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। এরপর ২৩ মার্চ দায়িত্ব নেন ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। সেই হিসাবে গত ২২ মার্চ নির্ধারিত ৩৬৫ দিনের মেয়াদ পূর্ণ করেছে ডাকসুর বর্তমান কমিটি। গত ২২ মার্চ নির্ধারিত ৩৬৫ দিন পূর্ণ। গতকাল ২২ জুন অতিরিক্ত ৯০ দিনও অতিক্রম করে ডাকসুর কমিটি। ফলে গতকাল স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভেঙে গেছে এই কমিটি, সাবেক হয়ে গেছেন বর্তমান নেতৃবৃন্দ। সবার আগে ফেসবুকে নিজেকে সাবেক ঘোষণা দেন ডাকসুর সহসাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের ৩৬৫ দিনের জন্য নির্বাচিত করেছেন। এরপর গঠনতন্ত্রের বিশেষ ধারায় আমরা অতিরিক্ত আরও ৯০ দিন দায়িত্ব পালন করেছি। এরপরও কেউ যদি এ পদে থাকতে চায় তবে তা হবে অগণতান্ত্রিক, গঠনতন্ত্রবিরোধী ও অনৈতিক। আর গঠনতন্ত্রের কোনো জায়গায় অস্পষ্টতা থাকলে উপাচার্য সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। এরপর ঘোষণা দেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। শুরুতে তিনি পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এ পদে থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার কথা বলেন। পরে অবশ্য মত বদলে তিনি ফেসবুকে ঘোষণা দেন ঠিক রাত বারোটায় পদত্যাগ করবেন। নিজের সে ফেসবুক স্ট্যাটাসে ডাকসুর জিএস জানান, ডাকসুর নির্ধারিত মেয়াদের অতিরিক্ত এক মিনিটও পদে থাকতে চান না তিনি। তবে যেহেতু করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল, তাই শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু কাজ করে যেতে চান তিনি। তিনি আরও বলেন, আর অবশ্যই চাই ডাকসু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ামাত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙে সচল হওয়া ডাকসুকে আর অচল দেখতে চাই না। তবে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর এখনো এ পদ ছাড়তে নারাজ। তার মতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে তারা পূর্ণ মেয়াদের কাজ করতে পারেননি। ভোরের কাগজকে তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে বিগত তিন মাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণরুপে বন্ধ ছিল। ফলে আমরা গঠনতন্ত্র অনুসারে ৩৬৫ কার্যদিবস মেয়াদে পুরোপুরি দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। তাই ডাকসুর বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমরা দায়িত্ব পালন করতে চাই। তবে ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আখতারুজ্জামান এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেন নি। তার কাছে কমিটি ভেঙে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, ডাকসুর গঠনতন্ত্রের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুসরণ করেই পরবর্তী সকল কাজ করা হবে। তবে গঠনতন্ত্র অনুসারে কমিটি বিলুপ্ত করার প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি বলে দিয়েছি। এর বাইরে কোন মন্তব্য নেই। অযথা তথ্য বিকৃতির চেষ্টা করো না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App