×

রাজধানী

চামড়া শিল্পে আগের চেয়ে দশগুণ ক্ষতির সম্ভাবনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২০, ০৪:৩৮ পিএম

চামড়া শিল্পে আগের চেয়ে দশগুণ ক্ষতির সম্ভাবনা

সালমান এফ রহমান / ফাইল ছবি

হাজারীবাগে থাকাকালীন চামড়াশিল্প অনেক ভালো অবস্থানে ছিল। ২০১৭ সালে আমরা গায়ের জোরে তাদেরকে সাভারে পাঠিয়ে দেই। এতে করে দেশিয় এ শিল্পে ধ্বস নেমেছে বলে জানিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

চামড়া শিল্পের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন টাস্কফোর্সের ২য় সভায় এসব কথা বলেন সালমান এফ রহমান। সোমবার (২২ জুন) শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনলাইনে জুমের মাধ্যমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনলাইনে আরো অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী, শিল্প প্রতিমন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং ট্যানারি মালিক ও ব্যবসায়ীরা। সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির যুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি অংশ নিতে পারেন নি।

সালমান এফ রহমান বলেন, চামড়া শিল্পের ব্যবসায়ীদের সাভারে যাওয়ার জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ চাওয়া ছিল; এর মধ্যে একটি হচ্ছে তাদের সিইটিভি তৈরি করে দিতে হবে, আরেকটি ছিল ছোট ছোট ব্যবসায়ী যারা অন্য পণ্য তৈরি করত তাদেরকে ওখানে ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু তার কোনটাই করা হয়নি।

তিনি বলেন, চামড়া শিল্পের তৃতীয় সমস্যা যেটা হচ্ছে- ব্যাংকাররা বলছেন প্রতিবছর ঈদ আসলে তাদেরকে ব্যাংক লোন দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু তারা পূর্বের লোনগুলি পরিশোধ করে না। এখানেও সমস্যা হচ্ছে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত ব্যাংকিং লেনদেন ভালো ছিল। কিন্তু সাভারে স্থানান্তরিত হওয়ার পর অর্থাৎ ২০১৭ এর পর থেকে আমরা যখন গায়ের জোরে তাদেরকে সাভারে পাঠিয়ে দিলাম, এরপর থেকে তাদের ব্যাংক লোনগুলো আর নিয়মিত নেই। তারা প্রতিনিয়ত খেলাপি হয়েছেন। এছাড়া হাজারীবাগের জমিগুলো নিয়েও আছে নানা সমস্যা। সুতরাং এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সরকারি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ চামড়াশিল্পের ব্যবসায়ীদের একত্রে নিয়ে একটা মিটিং করে সঠিক সিদ্ধান্তে আসা প্রয়োজন। তা না হলে গত বছর আমরা যে রকম চামড়া রাস্তায় ফেলে দিতে দেখেছি। এ বছর তার চেয়েও আরো দশ গুণ ক্ষতি হবে বলে মনে করেন তিনি।

মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদুল আজহায় স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করে চামড়া তোলা, সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পরিবহন একটা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

তিনি বলেছেন, চামড়া নিয়ে গতবছরের মতো পরিস্থিতি আমরা কেউ প্রত্যাশা করি না। তাই সবাই মিলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত করার আহবান জানাচ্ছি।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, চামড়াশিল্প দিন দিন শ্রমঘন হয়ে উঠেছে। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে অসংখ্য লোক। আজকের সভায় গুরুত্ব দেওয়া হবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে চামড়াশিল্প নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারি। ট্যানারি মালিক, আড়তদারসহ এ খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের কুটির ও ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প মালিকসহ শ্রমিকদের কীভাবে সহযোগিতা করা যায়।

তিনি বলেন, আমাদের সামনে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো আসন্ন ঈদুল আজহা সময়ে চামড়ার জন্য সরকারের নির্ধারিত দাম বাস্তবায়ন করা। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে দাম নির্ধারণ করে হয়, সেটা। এছাড়া সব ধরনের চামড়া সঠিকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা। বিশেষ করে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এই চেইনটা যেন ঠিক থাকে। এখানে যেন কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয়।

তিনি আরো বলেন, চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। গতবছরের মতো পরিস্থিতি আমরা কেউ প্রত্যাশা করি না। যদিও এ বছর বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করে চামড়া তোলা, সংগ্রহ, পরিবহন একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা মনে করি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িত সব ব্যবসায়ীর সঙ্গে মিলে কাজ করলে আমাদের সমস্যাগুলো থাকবে না।

মন্ত্রী বলেন, আমরা এ খাতের সমস্যা সমাধানে গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রথম সভা করেছিলাম। সে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে। তবে আমাদের প্রধান ফোকাস হবে কোভিডজনিত সমস্যা মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণ ও আগামী ঈদুল আজহার সময় চামড়ার ব্যবস্থাপনাগুলো সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App