×

জাতীয়

তিস্তায় বিপদসীমার উপর পানি, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলায় নিচে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুন ২০২০, ১০:৩৯ এএম

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণের ফলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। ফলে তিস্তার নিম্নাঞ্চল ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ও চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যা। এদিকে কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও তা এখনো জেলার সবগুলো পয়েন্টে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আকস্মিক পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা ও ধরলা নদী অববাহিকার দুই তীরের নিম্নাঞ্চলের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়ে এসব এলাকার ধান, বাদাম ও সবজি ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শামসুল ইসলাম ও মাজহারুল ইসলাম লিটন, ডিমলা (নীলফামারী) থেকে জানান, উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণের ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে তিস্তার পানি। ফলে তিস্তার নিম্নাঞ্চল ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ও চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যা। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে গ্রামের পর গ্রাম। শত শত পরিবারের হাজার মানুষ ও গবাদিপশু হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানিতে আটকা পড়েছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৭৩ মিটার) ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সব কয়েকটি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাত ১২টার পর উজানের ঢলে ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায় এবং শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী, চর খড়িবাড়ী ও টাপুর চরের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিস্তা পাড়ের মানুষজন বন্যার কারণে সতর্কাবস্থায় রয়েছেন। এদিকে চরের বাদাম ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের ঢলে ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে শনিবার তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সব কয়েকটি জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে এবং আমরা সতর্কাবস্থায় রয়েছি। তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে তা এখনো জেলার সবগুলো পয়েন্টে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে কুডিগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড নিশ্চিত করেছে। উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এসব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। আকস্মিক পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা ও ধরলা নদী অববাহিকার দুই তীরের নিম্নাঞ্চলের ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার ধান, বাদাম ও সবজি ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা তীরের ২টি গ্রামের ২১টি বাড়ি গত দুদিনের ব্যবধানে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে বাঁধের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে নিদারুণ কষ্টে আছে। নদী অববাহিকার কৃষকের ধান ও বাদাম পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় তারা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App