ধর্ষণ ও প্রতারণা মামলায় আটক চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আকিবুল ইসলাম আকিবকে এবার আইসিটি মামলায় আদালতের নির্দেশে আনোয়ারা থানায় দুইদিনের রিমাণ্ডে এনেছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফেক (নকল) আইডি খুলে নগ্ন ছবি পোস্ট করায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে আকিবুল ইসলাম আকিব, নাজমা আকতার ও ওয়াহেদুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে একটি আইসিটি মামলা করেছিলেন শামীমা আকতার।

ওই মামলা পুলিশ ৫ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করলে আদালত দুইদিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করলে শনিবার (২০ জুন) তাকে আনোয়ারা থানায় নিয়ে আসা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আনোয়ারা থানার পুলিশ পরিদর্শক আবুল ফয়েজ জুয়েল। এর আগে পুলিশ একই মামলায় আকিবুল ইসলাম আকিবের বড় বোন অভিযুক্ত নাজমা আকতারকে গত (১ জুন) রাতে উপজেলার হাইলধর ইউনিয়নের খাসখামা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

উল্লেখ্য, ছাত্রলীগের এই নেতা বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী কমিশনার (এএসপি) পরিচয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে এক ডিভোর্সি নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে নগরীর বাকলিয়ার রাহাত্তারপুল এলাকার ওই দুই বাচ্চার মাকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করেন। গত আগস্ট থেকে নগরীর বিভিন্ন হোটেল-বাসায় স্বামী স্ত্রী হয়ে সংসারও পাতেন তারা। এক সময়ে তারা নগরীর বাকলিয়া থানার ডিটি রোডের হোসেন বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় বাসাও ভাড়া নেন। এএসপি পরিচয় দিয়ে তালাকপ্রাপ্ত দুই সন্তানের জননীকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বিয়ে করলেও নানা অজুহাতে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতে থাকেন ছাত্রলীগ নেতা আকিব। এরপরও নিজের সুখের কথা ভেবে আগের স্বামীর কাছ থেকে দেনমোহরের পাওনা টাকা থেকে দুহাত ভরেই দিতে থাকেন সব অর্থকড়ি।

গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ওই নারীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ধার নেন আকিব। ২৭ অক্টোবর এক লাখ ২৮ হাজার টাকা দিয়ে তাকে একটি মোবাইল ও তিন লাখ টাকা দিয়ে একটি মোটর সাইকেলও কিনে দেন ওই নারী। বিভিন্ন সময় ডেবিট কার্ড দিয়ে তুলে নেন আরও চার লাখ টাকা। এভাবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা আকিব তার কাছ থেকে নিয়েছে বলে অভিযোগ ওই নারীর। এভাবে বারবার টাকা চাইতে থাকলে ওই নারীর সন্দেহ হয়।

একদিন মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে ওই নারী দেখেন, বিভিন্ন নামে ফেসবুক আইডি খুলে আরও বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে আকিব। নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে সেটা ভিডিও করে আবার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে টাকা দাবি করার তথ্যও পান মোবাইলে। এভাবে নানা অসঙ্গতি চোখে পড়তে থাকলে ওই নারী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তার নাম তাহসান নয়, আসল নাম আকিবুল ইসলাম আকিব। তার এএসপি পরিচয়ও ভুয়া।

আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ দুলাল মাহমুদ বলেন, গ্রেপ্তার আকিবুল ইসলাম আকিবকে একটি আইসিটি মামলা আমরা আদালতে পাঁচ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করেছিলাম। আদালত শুনানি শেষে দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।