×

সাময়িকী

মাসুদ রানা কার?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২০, ০৭:২৪ পিএম

মাসুদ রানা কার?

মাসুদ রানার মালিকানা নিয়ে কর্তৃপক্ষের মেধাস্বত্ব রায় বেশ আলোচনায় এসেছে। এই রায়ের গুণাগুণ নিয়ে কথা থাকলেও এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। গ্রন্থের উপর লেখকের মালিকানা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটি যে কাজ করে যাচ্ছে- এটি তার প্রমাণ। লেখকস্বত্ব নিয়ে সংস্থাটির অন্যতম কাজ গ্রন্থের রচয়িতাগণ কিংবা তার বৈধ উত্তরাধিকারীগণ প্রকাশক বা বাণিজ্যের নিমিত্তে ব্যবহারকারীগণের কাছ থেকে প্রাপ্য হিস্যা পাচ্ছে কিনা; কিংবা তাদের বই পাইরেসির শিকার হচ্ছে কিনা- সেসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করা। বই ছাড়া মেধাস্বত্বের আওতাভুক্ত অন্যান্য বিষয়ও তারা বিধি অনুযায়ী একইভাবে দেখভাল করে থাকেন। তবে মাসুদ রানা মামলায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি একই সঙ্গে পারিশ্রমিক এবং গ্রন্থের মালিকানা দাবি করেছেন। মামলাটি যদি পারিশ্রমিক বা মাসোহারা সংক্রান্ত হতো তাহলে পাঠক বা ভোক্তা শ্রেণির মধ্যে এতটা আলোচনার জন্ম দিত না। তাছাড়া মাসুদ রানা একটি প্রজন্মের স্মৃতির সঙ্গে যুক্ত থাকাও এর অন্যতম কারণ। তিন দশকের চার শতাধিক বই (সিরিয়াল) একাধিক লেখক-পাঠকের সম্পর্কের সঙ্গে যুক্ত। বই বলতে পাঠক যা বোঝেন এ ধরনের সিরিয়ালের ক্ষেত্রে সংখ্যা তত্তে¡র সঙ্গে স্বতন্ত্র গ্রন্থ পরিচয়ের বিরোধ আছে। গ্রন্থের স্বত্ব বিক্রি একটা পুরনো রীতি। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর একাধিক গ্রন্থের স্বত্ব বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এমনকি তাঁর ব্যবসা সফল ‘অগ্নিবীণা’র স্বত্বও বিক্রি করে দিয়েছিলেন। সর্বদা যে অভাবের তাড়নায় নজরুল ইসলাম তা করেছেন এমন নয়। যেমন ‘অগ্নিবীণা’র স্বত্ব বিক্রি করে তিনি গাড়ি কিনেছিলেন। অনেকে নজরুলের গাড়ি কেনাকে গরিবের ঘোড়া রোগ হিসেবে দেখে থাকেন। কিন্তু সারা জীবন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা এই কবির গাড়ি কেনার মধ্যে একটা কষ্টের প্রকাশ লুকিয়ে ছিল। কবির সদ্য প্রয়াত শিশুপুত্র বুলবুলের গাড়ির প্রতি ছিল দুর্বার আকর্ষণ। পিতৃ হৃদয়ে পুত্রের স্মৃতি-স্মারক হিসেবে এই গাড়ি কেনার প্রচেষ্টা। অনেকটা পুরো সমুদ্রের কালো জলে কৃষ্ণের রূপ দর্শন! তবে সে সময়ে কপিরাইট আইনের প্রয়োগ খুব সুস্পষ্ট ছিল না। যারা কপিরাইট কিনেছিলেন তারা বেশিদিন তাঁর স্বত্ব ধরে রাখতে পারেননি। কবির পরিবারের কাছে তা ফিরে এসেছে। কপিরাইট আইনে বইয়ের ক্ষেত্রে লেখকের মৃত্যুর ষাট বছর পর্যন্ত গ্রন্থের স্বত্ব বৈধ উত্তরাধিকারীদের কাছে থাকে। মাসুদ রানার লেখকগণ নিজেরা এখনো জীবিত। মাসুদ রানার মৌলিক মেধাস্বত্বের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েও আমরা প্রশ্ন করতে পারি- মাসুদ রানা কি একটি বই, নাকি একটি বইয়ের অনেক খণ্ড বা কপি? যারা মাসুদ রানার পাঠক তারা তো একজন মাসুদ রানাকে সারা জীবন পাঠ করেছেন। তাদের নায়ক পরিচালিত হয়েছে নানা রোমাঞ্চকর কার্যক্রমের দ্বারা। তার প্রত্যুৎপন্নমতি, গভীর পর্যবেক্ষণ, দুর্ধর্ষ সাহস, ঘটনার গভীরে যাওয়ার ক্ষমতা, সর্বোপরি গোয়েন্দাগিরির সফলতা পাঠকদের নায়ক রূপে ভাবতে সহায়ক হয়েছে। পাকিস্তান পর্বের শেষ পর্যায় থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশ পর্বের কয়েক দশক প্রবল দাপটের সঙ্গে মাসুদ রানা বহু তরুণ পাঠকের মাঝে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল। মাসুদ রানাকে কেন্দ্র করে বইয়ের একটি বাজার গড়ে উঠেছিল। শুধু নতুন বই নয়, পাড়ায় পাড়ায় শহর-মহল্লায় ছোট ছোট বইয়ের দোকানগুলোতে মাসুদ রানা ভাড়ায় পাওয়া যেত। প্রচলিত বইয়ের জগতের বাইরে মাসুদ রানার নিজস্ব জগৎ ছিল। সে জগতের পাঠকগণ খুব কমই মূলধারার বইয়ের জগতে বেড়াতে আসতেন। তার প্রমাণ এমন অনেক বইয়ের দোকান বা লাইব্রেরিতে যেখানে মাসুদ রানা বা সেবা সিরিজের বই ছাড়া আর কিছু পাওয়া যেত না। বইয়ের চেয়েও বলা চলে একটা চরিত্রের পরবর্তী রোমাঞ্চ দেখার জন্য এক রোমান্টিক চেতনাবোধের জন্ম হয়েছিল। সেদিক থেকে ধারণা করা যায় সেবা প্রকাশনীর এটি ছিল ব্যবসা সফল একটি প্রকল্প। মাসুদ রানার মৌলিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আর এটি এই গ্রন্থের লেখক প্রকাশকগণ স্বীকারও করেছেন। বিদেশি বইয়ে ভাব অবলম্বনে; বিশেষ করে ইয়ান ফ্লেমিংয়ের থ্রিলারধর্মী রচনা জেমস বন্ড ছিল মাসুদ রানা রচয়িতার আদর্শ। বলা হয়, প্রথম দিককার দুয়েকটি গল্পের মৌলিকতা থাকলেও পরবর্তী চার শতাধিক বইয়ের কোনো নিজস্বতা নেই। সেদিক দিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয় যে, মাসুদ রানা মৌলিক সৃষ্টির মর্যাদা পাবে কিনা; কিংবা এই অনুকার বৃত্তির কারণে তার লেখক প্রকাশকগণের বিরুদ্ধে পাইরেসির মামলা হবে। আমার মনে হয়, এ আলোচনা প্রাসঙ্গিক নয়। কারণ, গ্রন্থস্বত্ব কর্তৃপক্ষের কাছে এ ধরনের মামলার ভিত্তি হয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অভিযোগের ভিত্তিতে। যেহেতু এ ব্যাপারে তাদের মৌলিকতা নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি, সেহেতু আমরা ধরে নেব মাসুদ রানা একটি মৌলিক সৃষ্টি। তাছাড়া পাইরেসি কিংবা ছায়া অবলম্বনে রচিত সাহিত্য নিয়ে নানা মত আছে। সাহিত্যে চিন্তায় নির্মাণে রূপান্তর একটি অবিরত সৃজন প্রক্রিয়া। এ জগতে কিছুই মৌলিক নয়। ভাষা, চরিত্র, স্থান ও কার্যক্রমের ধারাক্রম পরিবর্তন কিংবা পুনরুৎপাদন হলে সেটাকে কি পাইরেসি বলা যাবে। প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন যুগ থেকে বাংলা সাহিত্য পরিপুষ্টি লাভ করেছে বিদেশি সাহিত্যের সংস্পর্শে এসে। লেখকদের মধ্যে সেই কালে বিদেশি সাহিত্য যাদের ভালো রপ্ত ছিল তাদের দ্বারা তথাকথিত নাগরিক বাংলা ভাষা-সাহিত্যের বিকাশ নিশ্চিত হয়েছে। বাংলার লোকসাহিত্যের ভাণ্ডার বাইরে রাখলে আমরা দেখি মধ্যযুগের প্রায় সব উল্লেখযোগ সৃষ্টি কর্মের উৎস- সংস্কৃত, আরবি-ফার্সি, উর্দু কিংবা হিন্দি। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ইংরেজি সাহিত্যের একনিষ্ঠ অনুগামী না হলে হোমার, ভার্জিল, পেত্রার্ক বা মিল্টনের সাহিত্যের সঙ্গে পরিচয়ও ঘটত না, আমরা ‘মেঘনাদবধ’ও পেতাম না। রবীন্দ্রনাথের বিলাত যাত্রা আর তিরিশের পঞ্চপাণ্ডবের ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যায়ন বাংলা সাহিত্যকে ঋদ্ধ করেছে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে কেবল কাজী আনোয়ার হোসেনকে দায়ী করলে ধোপে টিকবে না। খুব গর্বের সঙ্গে বলা হয়, মধুসূদনের শ্রুতিলিখন নেয়ার জন্য হাফ ডজন পণ্ডিত অপেক্ষায় থাকতেন। একই সঙ্গে বহু রকম সাহিত্যিক বিষয় তিনি নির্দেশ দিতেন বলেও জনশ্রুতি আছে। আটকে গেলে অভিধান কিংবা উপস্থিত পণ্ডিতদের সহায়তা নিতেন। এটি অবশ্য তাঁর প্রতি সাহ্যিত্যের পাঠকদের নিবিড় ভালোবাসার প্রকাশ। এই রীতি কেবল মধুসূদনের জন্য সত্য নয়; প্রাচীনকাল থেকেই এমনটি হয়ে আসছে। যাদের সামর্থ্য আছে, তিনি রাজা হোন বা লেখক প্রজা হোন- নিজের পসার বৃদ্ধির জন্য অন্যের শ্রমের শরণাপন্ন হন। এমন অনেক গ্রন্থের কথা আমরা জানি, যার লেখক অন্য কেউ; বিশেষ করে রাজা-রাজড়াদের ইতিহাস রোজনামচা জীবনীগ্রন্থ অন্য কারো দ্বারা লিখিত। মোগল বাদশাদের অধিকাংশ জীবনীগ্রন্থের লেখক অন্য কেউ। আমরা সবাই জানি মহামতি আকবর লিখতে-পড়তে জানতেন না, তাই বলে এই প্রশ্ন অবান্তর যে ‘আকবরনামা’ কে লিখেছেন। পণ্ডিত আবুল ফজলসহ অসংখ্য লেখক তাঁর দরবারে উপস্থিত থাকতেন। এখনো বিশ্বনেতাদের, পাতি নেতাদের, ধনীদের, খেলোয়াড়দের, চিত্রতারকাদের যে ধরনের জীবনী ছাপা হয়ে থাকে, তার শীর্ষভাগ শ্রমের বিনিময়ে কিংবা প্রাপ্য রয়্যালিটি ভাগাভাগির মাধ্যমে হয়ে থাকে। একজন কেউকাটা যার জীবনের ব্যাপারে জনগণের আগ্রহ আছে তার জীবনী তিনি নিজে না লিখলেও তার পেটেন্ট থেকে যায়। তখন শ্রম মেধা ও দক্ষতার সংজ্ঞা আলাদা হয়ে যায়। এটি কেবল লেখার ক্ষেত্রে নয়। একটা অনিন্দ্য শিল্পকলার অট্টালিকা নির্মাণেও তার নকশার মৌলিকতা এবং নানা রকম শ্রমশক্তির প্রয়োজন হয়। সে কারণে একজন প্রধান কারিগর তার প্রয়োজনমাফিক শ্রমশক্তি সংগ্রহ করেন। আসলে সব কিছুর মূলে রয়েছে শ্রমের ধারণা ও ব্যবহার। প্রকৃতিতে যা না হলে আমরা বাঁচতে পারি না, তার সব কিছু অবারিত স্বতঃস্ফ‚র্ত ও অমূল্য। পানি, বাতাস, সূর্যের আলো- এসবের জন্য আমাদের মূল্য দিতে হয় না। কিন্তু এসব অতিপ্রয়োজনীয় বস্তু গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও আমাদের শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়। উৎস থেকে বয়ে আনা, পাত্র নির্মাণ ও পরিবেশনে যথেষ্ট শ্রম সময়ের দরকার হয়। ফলে এ ক্ষেত্রে বলা যায়, প্রতিভা যদি মৌলিক উৎপাদন হয়, তাহলে তার জন্য মূল্য পরিশোধ প্রকৃতিবিরোধী। তবে প্রতিভা প্রকাশের জন্য যে ধরনের দক্ষতা শিক্ষা ও শ্রমের প্রয়োজন হয় তার জন্য মূল্য পরিশোধ জরুরি। বর্তমানে ‘গোস্ট রাইটার’ বলে একটি ইংরেজি শব্দবন্ধ চালু আছে। যারা অন্যের জন্য লেখেন। সেদিক থেকে গবেষক দলের সদস্য, সাংবাদিক, বানান সংশোধনকারী, লেখার মান-উন্নয়নকারী সম্পাদক, পরিসংখ্যানবিদ, বাংলা একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটির কর্তা- সবাই এই দলের অন্তর্ভুক্ত। পৃথিবীর কোনো গ্রন্থই একা একা তৈরি হয় না। লেখককে যেমন ভাষার কাছে, পূর্ববর্তী লেখকের কাছে, সমাজের অবস্থিত চরিত্রসমূহের কাছে, প্রতিবেশের কাছে ঋণী থাকতে হয়; তেমন কোনো বইয়ের একজনও যদি পাঠক না থাকে তাহলে তাকে গ্রন্থ বলে বিবেচনা করা যায় না। সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক প্রকাশনা শিল্পাঙ্গনে এজেন্ট বলে এক শ্রেণির লেখক আছেন, যাদের অনেকেই খ্যাতিমান লেখক সম্পাদক, তাদের সম্পাদনা ব্যতিরেকে কোনো বই নামি কোনো প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশ করা প্রায় অসম্ভব। একজন লেখককে উচ্চমূল্যের বিনিময়ে তাদের দ্বারস্থ হতে হয়। এসব ক্ষেত্রে শোনা যায়, কোনো কোনো সময়ে তারা পুরো বইটিই পুনর্লিখন করে দেন। এসব কাজ অবৈধ বলে কেউ যেমন প্রশ্ন তোলেনি; আবার তা প্রমাণ করাও সহজ নয়। লেখকের ক্ষেত্রে এ ধরনের সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড ঐতিহাসিক ও বাস্তবতার নিরিখে প্রমাণিত হলে মাসুদ রানার প্রলম্বিত খÐগুলোর মালিকানা কাজী সাহেব ভিন্ন অন্য কেউ কীভাবে হন- যদি তিনি তা স্বীকার না করেন। যদিও আমরা জেনেছি, শেখ আব্দুল হাকিম এবং কাজী আনোয়ার হোসেনের মধ্য চিঠিপত্র ও তার সহকর্মীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এই রায় হয়েছে। আমরা অবশ্য জানি না তাদের মধ্যে এ ব্যাপারে কী ধরনের প্রাকচুক্তি ছিল। শুধু চিঠিপত্র ও সহকর্মীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এ রকম একটা জটিল নিষ্পত্তি সম্ভব কিনা সে প্রশ্ন থেকে যায়। মাসুদ রানা কাজী আনোয়ার হোসেনের ব্রেইনচাইল্ড এ কথা তো শেখ আব্দুল হাকিমও অস্বীকার করেছেন। বলা হয়েছে এই সিরিজের প্রথম দিককার কিছু বই কাজী আনোয়ার হোসেন লিখেছিলেন। আমার মনে হয় এটিই কি যথেষ্ট নয়! তিনি যদি একটিও লিখতেন, আর পরবর্তীকালে যদি অন্য কেউ এই নামে বা কাহিনীর পারম্পর্য তৈরি করতেন, তাহলে কি তিনি পাইরেসির দায়ে পড়তেন না? সেটি তো গেল একজন স্বাধীন লেখকের কথা। যিনি সেবা প্রকাশনীর চুক্তিবদ্ধ লেখক হিসেবে এবং কাজী সাহেবের সঙ্গে প্রাক-আলোচনার ভিত্তিতে মাসুদ রানা লিখেছেন তিনি কীভাবে এই বইয়ের মেধাস্বত্বের অধিকারী হতে পারেন। একের পর এক তিনি যখন কাজী আনোয়ার হোসেনের নামে বই বের করছেন, সেটি তো তার জন্যও একটি নৈতিক অপরাধ। বরং বলা চলে, এখানে কাজী সাহেব তার মানস-পুত্র মাসুদ রানা অন্যের কাছে লালন-পালনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন; যিনি আজ পিতৃত্বের দাবি করছেন। অবশ্য এ মামলায় শেখ আব্দুল হাকিম ছাড়াও আরো দাবিদার আছেন। তবে এই মামলা যদি পারিশ্রমিক বা সাম্মানিক সংক্রান্ত হয় তাহলে শেখ আব্দুল হাকিমের প্রাপ্য ষোলআনা; সেখানে ব্যত্যয় ঘটলে বিধি অনুযায়ী সেবা প্রকাশনীর দণ্ড সর্বোচ্চটা হতে পারে। বর্তমান রায় বলবৎ থাকলে লেখক জগতে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা অমূলক হবে না। প্রথমত পত্রিকা অফিসের সম্পাদকীয় রচনা সম্পাদকের দায়িত্বশীলতার মধ্যে পড়ে; লেখক এই রচনার মালিকানা দাবি করতে পারেন না। অথচ লেখকের পক্ষে এর সব প্রমাণ উপস্থিত করা সম্ভব। কিন্তু চাকরির শর্ত ও রীতির মধ্যে তা পড়ে না। এ ধরনের অসংখ্য লেখকবৃত্তি আছে সেসব নিয়েও প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। বড় কথা এই রায়ে মাসুদ রানা তার পিতৃপরিচয় হারাবে। দেখা যাক, মাসুদ রানা কার কাছে থাকেÑ যিনি জন্ম দিয়েছিলেন অথচ ঠিকমতো লালন-পালন করতে পারেননি তার কাছে, নাকি যিনি মমত্ব ও পরিশ্রম দিয়ে অনেকটা বড় করে তুলেছেন তার কাছে! পাঠকের কাছে পালক পিতার বঞ্চনাও প্রাণে বিঁধবে!

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App