×

মুক্তচিন্তা

বিশাল ঘাটতির বিশাল বাজেট এবং বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে

Icon

nakib

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২০, ০৫:৩৯ পিএম

মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমিকে শ্যামল করায় বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন- সেটা বিবেচনায় নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসীদের জন্য কৃষিভিত্তিক নতুন কর্মসংস্থানের চেষ্টা করা যেতে পারে। শুধু কৃষির বহুমুখীকরণ নয়, আমাদের রপ্তানিরও বহুমুখীকরণ প্রয়োজন। এবার একক রপ্তানি খাত পোশাক শিল্পের মালিকদের কর্মকুশলতা খুবই হতাশাজনক ও সমন্বয়হীন ছিল। এর ওপর যদি এখন সেখানে ব্যাপক ছাঁটাই ও শ্রম অসন্তোষ দেখা দেয়- তাহলে সেটা মোটেও ভালো হবে না।

২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেটের বিশিষ্টতা হচ্ছে একটি বৈশ্বিক মহামারির সংকটের পটভূমিতে তা প্রণীত হয়েছে। স্বভাবতই বিপর্যস্ত মানুষ এই বিপর্যস্ত বিশ্বে কষ্টে আছে। অন্তত মার্চ-এপ্রিল-মে-জুন এই চার মাস বাংলাদেশে মহামারির ক্রমপ্রসারমান সংক্রমণ ও বহু অপ্রত্যাশিত মৃত্যু আমরা দেখছি। সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটা হয়েছে তা হচ্ছে মানুষে মানুষে এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হয়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় মানুষ যেন মানুষকে ভয় করছে। অবশ্য এ কথাও সত্য এত ভয়-ভীতি সংক্রমণ আশঙ্কার মধ্যেও অনেক ডাক্তার, অনেক পুলিশ, অনেক স্বেচ্ছাসেবী, গণসংগঠন কর্মী অকুতোভয়ে কাজ করেছেন এবং করছেন। ধান কাটার মৌসুমে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন, দরিদ্র মানুষকে ত্রাণসামগ্রী বণ্টন করেছেন, স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। তারপরেও পুরো ভয় এখনো কাটেনি। সংক্রমণ রেখা এখনো ঊর্ধ্বগামী। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। প্রশ্ন হচ্ছে এই ‘ভীতি’ ও ‘বিচ্ছিন্নতার’ ফলাফল অর্থনীতিতে কী হয়েছে? আমরা দেখেছি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ছাড়া অন্য সব বাজার বন্ধ হয়ে গেল। শিল্প উৎপাদনও সর্বত্র থেমে গেল। আমদানি-রপ্তানি, বন্দর, রাস্তাঘাট, অর্থনীতির শিরা-উপশিরাগুলোতে রক্ত প্রবাহ থেমে গেল। অনেক এসএমই বন্ধ হয়ে গেল। লাখ লাখ লোক বেকার হয়ে গেল। ছুটি এবং লকডাউন ঘোষিত হলো। বিপুল পরিমাণ মানুষ শহর থেকে গ্রামে চলে গেলেন। শহরের মানুষ নিজ নিজ গৃহে গৃহবন্দি হয়ে পড়লেন। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘার মতো বাইরে থেকে প্রবাসী শ্রমিকরা বেকার হয়ে দেশে ফিরতে লাগলেন। অর্থনীতিবিদরা প্রতিদিন নতুন নতুন ভয়াবহ সব পরিসংখ্যান হাজির করলেন। প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ থেকে এক শতাংশে নেমে আসবে, খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে, দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪০ শতাংশ হবে। আমাদের অর্থনীতিতে বহু লোক অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। তারা কোনো বেতন বা রোজগার এ সময় পাবেন না। তারা বেঁচে থাকবেন কী করে?

দুই. এসব আশঙ্কার কথা আমরা সবাই জানি। এই পটভূমিতেই ঘোষিত হয়েছে এবারের বিশাল ঘাটতির বিশাল বাজেট। এ সময়ে সংকট ও ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় বের করতে হবে। পৃথিবীতে যারা সাফল্যের সঙ্গে করোনা সংকট মোকাবিলা করে দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, যেমন- চীন-ভিয়েতনাম-ভারতের কেরালা-নেপাল তাদের দিকে তাকালে আমরা একটা প্রধান শিক্ষা পাই। শিক্ষাটি হচ্ছে- ‘সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ ফোঁড়’। চীন বা ভিয়েতনামের নেতৃত্ব প্রথমেই বুঝে গিয়েছিলেন- ‘বিপদের ভয়াবহতা’। নেপালও সেটা কিছুটা বুঝেছিল। আর কেরালা তা বুঝে দলমত নির্বিশেষে ‘মুখ্যমন্ত্রীর’ নেতৃত্বে মাঠে-ময়দানে জনসচেতনতা বৃদ্ধির অভিযানে প্রথম থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পক্ষান্তরে আমাদের সরকার কিন্তু এই সংকটকে প্রথম দিকে এতটা গুরুত্ব দেয়নি। যদিও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম দিকে মার্চ মাসে দেশের ভেতরে প্রথম আক্রান্ত আবিষ্কার হওয়ার পর পরই ঘোষণা করেছিলেন যে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়’ পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনাকে ঠেকাতে হবে। কিন্তু সে রকম কোনো দৃঢ় ঐক্যবদ্ধ জাতীয় উদ্যোগ গড়ে তুলতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। বিএনপির কথা বাদ দিলেও এমনকি ১৪ দল ও বামপন্থিদেরও ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামানো সম্ভব হয়নি। আমরা একদম প্রথম দিকেই বিদেশ প্রত্যাগত করোনাবাহী যাত্রীদের টেস্ট করে এবং চিহ্নিত করে বিচ্ছিন্ন করতে পারলে বর্তমানে এই প্রলম্বিত সংকটের বোঝা টানতে হতো না। তবে এত কিছুর পরও এখন পর্যন্ত আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য তিনটি রিজার্ভ শক্তি আছে। সেগুলো হচ্ছে- ক) আমাদের কৃষি উৎপাদন তেমন একটা ব্যাহত হয়নি। খ) আমাদের সংক্রমণ হার দ্রুত প্রসারিত হলেও, মৃত্যুর হার ততটা বেশি নয়। ডিসেম্বর নাগাদ করোনা টিকাও আবিষ্কার হয়ে যেতে পারে! গ) আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার এত কিছুর পরেও যথেষ্ট শক্তিশালী। যে কারণে বৈদেশিক ঋণ পাওয়া কঠিন হবে বলে মনে হয় না। তবে তার শর্তগুলো কঠিনতর হবে এবং এর কাঠিন্য নির্ভর করবে আমাদের ভূ-রাজনৈতিক কৌশল ও দর কষাকষির দক্ষতার ওপর।

বাজেটের রণকৌশল ২০২০-২১-এর প্রস্তাবিত বাজেট দলিলের চতুর্থ পৃষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এক লাখ কোটিরও বেশি টাকার এক অর্থনৈতিক প্রণোদনার প্যাকেজকে সংকট মোকাবিলার প্রধান উপায় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই প্যাকেজকে অনুসরণ করে সংকট মোকাবিলার জন্য প্রধান চারটি নীতি পরামর্শ দেয়া হয়েছে- ১। সব বিলাসী ব্যয় কমানো হবে এবং সেসব সরকারি ব্যয়কে অগ্রাধিকার দেয়া হবে, যা উৎপাদনশীল কর্ম সুযোগ সৃষ্টি করবে। ২। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ভর্তুকি সুদে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদারভাবে ঋণ দেয়া হবে। যাতে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরায় চালু করতে পারেন এবং প্রতিযোগিতাক্ষম করে তুলতে পারেন। ৩। সামাজিক সুরক্ষার যে জাল রয়েছে তার সুযোগ ও পরিধি আরো বিস্তৃত করা হবে। বিশেষ করে হতদরিদ্র এবং নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন যারা, তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে। ৪। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে সম্ভবত মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা হবে। এই ঘুরে দাঁড়ানোর ৪ দফা কৌশলটি সুবিবেচিত। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে এগুলোকে বাজেটে প্রকৃত আয়-ব্যয় প্রস্তাবে রূপান্তরিত করা হয়নি। বাজেট বাস্তবায়ন কৌশল, এলাকাভিত্তিক ম্যাপিং, সেগুলোর সম্ভাব্য ব্যষ্টিক ((Disaggregated)) ফলাফলের চিত্র, ভবিষ্যৎ অগ্রগতির তত্ত্বাবধান এবং সামগ্রিকভাবে সরকারি ব্যয়ের গুণগত মান রক্ষা ও সুশাসন সংক্রান্ত কোনো বিস্তারিত দিগদর্শন বাজেট দলিলের পরের ১০০ পৃষ্ঠার কোথাও ৪টি মূলনীতির শিরোনাম ধরে ধরে আলোচনা করা হয়নি। বরঞ্চ আমরা দেখতে পেলাম এবারো প্রস্তাবিত বাজেট কাঠামোটি শেষাবধি পরিণত হয়েছে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক চিরাচরিত নানা বরাদ্দের এক সমষ্টিতে। বলা অবশ্য হয়েছে ব্যাকিং খাত থেকে ঋণ, সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্তি ও বিদেশি সাহায্য থেকে নিয়ে বিশাল ব্যয় ঘাটতি (প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, বাজেটের ৩৩.৪৫ শতাংশ) মেটানো হবে। অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন ঘাটতি আরো বাড়বে এবং তা পূরণ করা কঠিন হবে। নানা রকম থোক ও সামষ্টিক বরাদ্দের নকশা থেকে বোঝা শক্ত কীভাবে উল্লিখিত নীতিগুলো বাস্তবায়িত হবে। এটাও বোঝা মুশকিল বাজেট প্রস্তাবিত অত রাজস্বের টাকা (গতবারের মার্চ পর্যন্ত তোলা প্রকৃত রাজস্ব এবার কীভাবে গত ৪ মাসে ১১২ শতাংশ বাড়বে আর আগামী বছর এই তথাকথিত সংশোধিত কাল্পনিক রাজস্ব আরো কীভাবে ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করবে!) কোথা থেকে আসবে। অর্থমন্ত্রী বাজেটে খাতভিত্তিক কর্মসূচির বর্ণনায় ইচ্ছামতো একেক মন্ত্রণালয়ে একেক কর্মসূচির উদ্ধৃতি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে বরাদ্দগুলো ঠিকই ওই চার নীতি বাস্তবায়নের কাজে লাগবে এবং সে জন্য টাকাও থাকবে। কিন্তু কীভাবে বুঝব যে তার অনুমান সঠিক? এখানে আরো কয়েকটি প্রশ্ন আছে যার কিছুটা উত্তর ও দিকনির্দেশনা বাজেটে থাকা উচিত ছিল। এটা মোটেও স্পষ্ট নয় যে কীভাবে দরিদ্র ও নতুন দরিদ্ররা উপকৃত হবেন এবং তাদের মোট সংখ্যা কত ধরা হয়েছে ও কীভাবে তাদের কাছে কত অর্থ বা খাদ্য প্রদান করা হবে। সামাজিক সুরক্ষা খাতের বর্ধিত বরাদ্দ তার জন্য পর্যাপ্ত হবে কিনা এবং ঠিকমতো তাদের কাছে তা পৌঁছাবে কিনা, এটাও স্পষ্ট নয়। সম্ভাব্য কয়টি পোশাক কারখানা শেষ পর্যন্ত বন্ধ হবে, কত শ্রমিক বেকার হবেন, ১০ শতাংশ না ৪৫ শতাংশ তাদের আপৎকালীন কর্মসংস্থান কোথায় কীভাবে হবে? ১ লাখ কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্রণোদনা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সঠিক লোককে দ্রুত দিতে পারবে কি? সেটা কে তদারক করবে এবং বৃহৎ ঋণ খেলাপিদের থাবা থেকে কীভাবে ব্যাংক খাতকে মুক্ত রাখা যাবে তাও স্পষ্ট নয়। তাছাড়া ব্যক্তি খাতের ব্যাংকগুলো কোনো ঋণ ঝুঁকি নিশ্চয়তা কর্মসূচি ছাড়া কোনো ঋণ আদৌ বিতরণ করবে কি? এখনো করেছে কি? সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- স্বচ্ছতা (Transparency), কণ্ঠ (Voice) ও জবাবদিহি ((Accountability)) নিশ্চিত করা না গেলে এসব বর্ধিত বরাদ্দ নয়-ছয় হয়ে কোথায় যে শেষে চলে যাবে- সেটা নিয়ে জনমনে ইতোমধ্যেই বহু শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া ঠিকমতো এই বিশাল কর সংগ্রহ না হলে, ঘাটতি যথাযথভাবে পূরণ না হলে, বাজেটের সব খাতেই ব্যয় সংকুলান নিয়ে যে টানাটানি হবে- তাতে শেষে গিয়ে বাজেট শৃঙ্খলা ঠিক থাকবে কি? ভরসা কোথায়?

তিন. অনেকে ভরসা করছেন যে করোনা সংক্রমণের হার দ্রুত কমে যাবে। অথবা স্বাস্থ্য খাতে আমাদের কর্মকুশলতা চমকপ্রদভাবে বৃদ্ধি পাবে। বর্ধিত বরাদ্দ দিয়ে আমরা সব ঠিকঠাক করে ফেলব। ফলে অর্থনীতি জুলাই মাস থেকে আবার স্বাভাবিক সুস্থ গতিধারায় ফিরে আসবে। ব্যক্তিগত বিনিয়োগও গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পাবে। সরকারি বর্ধিত বিনিয়োগ ও ব্যক্তিগত বিনিয়োগ মিলে আমরা ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হব। এ কারণেই অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বিপুল আশাবাদ ব্যক্ত করে লিখেছেন,‘However, in view of the post-Covid recovery, the growth rate is projected of 8.2 percent for FY 2020-21 in line with the long term plans. We expect that inflation will be 5.4 percent during the period.’ যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রেখে এই প্রবৃদ্ধির হার প্রক্ষেপণ করা হয়েছে তা তৈরি হয়েছিল করোনা পূর্ব কালে। তাই সেই ‘ট্রেন্ড লাইন’ তো এখন আর কার্যকর (ঠধষরফ) নেই। সুতরাং জোর করে আশা করে সেখানেই থাকার চেষ্টা করা মোটেও বাস্তবোচিত হবে না। এটা কি এক ধরনের আত্মপ্রতারণা নয়? আমার মনে হয় বরঞ্চ সরকারকে এবার কতগুলো ন্যূনতম লক্ষ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে দুর্যোগকালীন পুনরুদ্ধার কর্মসূচি তৈরি করে তা ঠিকমতো কার্যকরী করতে হতো। স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা ও কৃষি উন্নয়ন- এই তিন কেন্দ্রিক কর্তব্যকে গুরুত্ব দিতে হতো। ‘বরং কম কিন্তু ভালো’(Power but better)- এ রকম একটি নীতি নিয়ে অগ্রসর হলেই ভালো হতো। দুর্ভিক্ষ আমরা ঠেকিয়েছি, এখন গ্রামে এবং শহরে চরম দরিদ্র ও একদম কর্মহীনদের সঠিক তালিকা তৈরি করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুর্নীতিহীনভাবে নগদ অর্থ পৌঁছে দেয়ার একটি লক্ষ্য নিয়ে এগোলে ভবিষ্যতেও আর কেউ না খেয়ে মরবেন না। সবার জন্য স্বাস্থ্য ও খাদ্যের অধিকার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন যে বিশ্বমন্দা সহসা দূর নাও হতে পারে। সুতরাং আমাদের ভরসা করতে হবে ‘অভ্যন্তরীণ বাজার’ভিত্তিক প্রবৃদ্ধির ওপর। তাই কৃষি, গ্রামীণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। ইতোমধ্যে শাইখ সিরাজ প্রস্তাব দিয়েছেন যে মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমিকে শ্যামল করায় বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন- সেটা বিবেচনায় নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসীদের জন্য কৃষিভিত্তিক নতুন কর্মসংস্থানের চেষ্টা করা যেতে পারে। শুধু কৃষির বহুমুখীকরণ নয়, আমাদের রপ্তানিরও বহুমুখীকরণ প্রয়োজন। এবার একক রপ্তানি খাত পোশাক শিল্পের মালিকদের কর্মকুশলতা খুবই হতাশাজনক ও সমন্বয়হীন ছিল। এর ওপর যদি এখন সেখানে ব্যাপক ছাঁটাই ও শ্রম অসন্তোষ দেখা দেয়- তাহলে সেটা মোটেও ভালো হবে না। তাই আমাদের চামড়া, পাট, কৃষিজাত পণ্য ইত্যাদি অন্য রপ্তানিগুলোর দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

এম এম আকাশ : অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App