×

সম্পাদকীয়

হাইকোর্টের ১০ দফা নির্দেশনা মানতে হবে

Icon

nakib

প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২০, ০৮:৫৯ পিএম

সংবিধানে চিকিৎসাসেবাকে একটি মৌলিক চাহিদা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সংবিধানকে কতটুকু মানছেন চিকিৎসক সমাজ, তা আজ বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে দেশে মহাসংকট চলছে। বিশেষ করে চিকিৎসাসেবা নিয়ে নানা অভিযোগ আমরা দেখছি। খোদ প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে কথা বলছেন বারবার। করোনাকালে রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় দায়ের হওয়া রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সব হাসপাতাল-ক্লিনিকের জন্য ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে চাই আমরা। হাইকোর্টের উল্লেখযোগ্য নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হাসপাতাল-ক্লিনিকে আসা রোগীদের ফেরত না পাঠানো সংক্রান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা; ৫০ শয্যার বেশি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে সাধারণ রোগী বা করোনা রোগীদের কতজনকে কীভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তার প্রতিবেদন দাখিল করা; গুরুতর অসুস্থ রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেলে তা অবহেলাজনিত মৃত্যু বলে বিবেচিত হবে। অবহেলাজনিত মৃত্যু ফৌজদারি অপরাধ। তাই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা; দেশে আইসিইউ বেড কতটি খালি আছে এবং কতটিতে রোগী ভর্তি রয়েছে তা প্রতিদিন জানাতে বলা হয়েছে। আইসিইউর অতিরিক্ত চার্জ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেখছি, চলমান পরিস্থিতিতে সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে। রোগীর কাছে আসছেন না চিকিৎসক, ফিরিয়ে দিচ্ছে হাসপাতাল। করোনা ভাইরাসের উপসর্গের সঙ্গে মিল না থাকলেও রোগী ভর্তি অথবা চিকিৎসাসেবা দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা করাতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। হৃদরোগ কিংবা কিডনি রোগে ভুগলেও মিলছে না চিকিৎসা। এমন পরিস্থিতিতে অনেক রোগী এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করতেই প্রাণ হারাচ্ছেন। প্রশ্ন হলো সাধারণ রোগীরা কোথায় যাবে? কোথায় মিলবে তাদের চিকিৎসাসেবা? এর আগে সাধারণ (নন-কোভিড) রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। দেশের সব হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি অন্যান্য রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তিনটি নির্দেশনা দিয়েছিল। নির্দেশনা অমান্য করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধান অনুসারে লাইসেন্স বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপরও তাদের টনক নড়ছে না- এটা দুঃখজনক ব্যাপার। চিকিৎসা পেশাটি রাষ্ট্রের অন্যান্য পেশার তুলনায় অনেক বেশি সম্মানের। এটা পেশা হলেও চিকিৎসকরা মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করেন বলে এটি মানবসেবার একটি অংশও বটে। চিকিৎসকদের মাঝে নীতিনিষ্ঠা, মানবিকতা, সদাচার, কর্তব্যপরায়ণতা- এসব গুণের বেশি জারি হওয়ার কথা। এ দেশের অনেক চিকিৎসক এমনটাই। ডেঙ্গু সমস্যায় গত বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাত-দিন কাজ করে শত শত মানুষের জীবন রক্ষা করে কত না বাহবা পেয়েছিলেন। এজন্য অবশ্য কয়েকজন চিকিৎসকে জীবনও দিতে হয়েছে। দেশের করোনা সংকটে নিশ্চয় আপনারা রোগীদের পাশে থাকবেন। দেশের পাশে থাকবেন- এমনটাই প্রত্যাশা রাখছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App