×

সারাদেশ

কপোতাক্ষ সেতুর সংযোগ সড়কে ফাঁটল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২০, ০৯:৪৪ পিএম

কপোতাক্ষ সেতুর সংযোগ সড়কে ফাঁটল

ধস

যশোরের চৌগাছার নারায়নপুরে কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মিত সেতুর সংযোগস্থ সড়কে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ঘুর্ণিঝড় আম্ফান ও সম্প্রতি অতিবর্ষণের ফলে সেতুর সংযোগ সড়কের কিছু অংশে ফাঁটল ধরে ধসে পড়ছে। নিরাপত্তাহীনতায় চলাচল করছে যানবাহনসহ জনসাধারণ।

জানা গেছে ২০১৫ সালে সেতুটির সংযোগ সড়কসহ নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে ২ বছর না যেতেই দুই পাশের সংযোগ সড়কে এই ফাঁটল দেখা দেয়। কোন কোন স্থানে সড়কের অংশবিশেষ ভেঙে নদীতে পড়েছে। যে কোন সময় দুই পাশের মাটি ধসে সংযোগ সড়কটি কপোতাক্ষে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

সংযোগ সড়কের ফাঁটলের ফলে সেতুটিতে হালকা যানবাহন চলাচল করলেও ভারী যানবাহন বন্ধ রয়েছে।

সেতুটিতে চলাচল কারি দেবীপুর বাজারের ব্যাবসায়ী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানিয়েছেন, সেতুটি নির্মাণ শেষে দুই পাশের সংযোগ সড়কটি অন্য এলাকা থেকে মাটি এনে সারি রাস্তা করার কথা ছিল।

নারায়ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, সড়ক ও জনপথের টেন্ডারের মাধ্যমে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি করেছেন। তবে কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান করেছেন তা আমার জানা নেই। সড়কে ফাঁটলের ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলি অফিসে ও সওজকে জনানো হয়েছে। কিন্তু কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সড়কটি অবিলম্বে সংস্কার করা হলে জনদূর্ভোগ বাড়বে।

জানা গেছে, ২০০১ সালে ২৬মে প্রথম বৌদ্ধধ কৃতকাজ এর শুভ উদ্বোধন করেন তৎকালীন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। প্রথম দফায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শাওন কন্সট্রাশন প্রথম বরাদ্দকৃত অর্থের কাজ শেষ করলে জোট সরকারের সময় সেতুটির নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যাই। পরে ২০১২ সালে এলাকাবাসীর পক্ষে ঢাকা ট্যাকসেসবার সমিতির বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ বি এম আহাসানুল হক আহসান সেতুটি নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন করেন। আবেদনটি আমলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সেতুটির অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য পুনরায় অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেতুটির নির্মান কাজ শেষ করার ৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

পরর্তীতে প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের সরাসরি নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয় সরকার উন্নয়ন মন্ত্রণালয় (এলজিডি) চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের দেবীপুর থেকে নারায়নপুর ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটি পাকাকরনে ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। এ ব্যাপারে কথা হয় ঢাকা ট্যাক্সেস বার সমিতির বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আহসানুল হক আহসানের সাথে। তিনি বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্যই আজ এ অঞ্চলের মানুষ এই সেতুটি পেয়েছেন। সেতুটি নির্মাণ হওয়ার ফলে নারায়নপুর, পেটভরা, বকশিপুর, সুইতলা, ইলেশমারী, ভগমানপুর, গুয়াতলি, চাঁদপাড়াসহ পার্শবর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার একাংশের মানুষের চলাচলে ব্যাপক সুবিধা হয়েছে। প্রসঙ্গত চৌগাছা উপজেলার দেবীপুর, হাকিমপুর, পাতিবিলা, নিয়ামতপুর, মুক্তদাহ, মাঠচাকলাসহ কালীগঞ্জ উপজেলার মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রেও এ সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ন।

স্থানীয়রা জানান, সেতুটি নদ ও মূল সড়ক থেকে অনেক উঁচুতে। সে কারণে সেতুর সংযোগ সড়কও উঁচু করা হয়েছে। তা ছাড়া সেতু সংলগ্ন সড়কের দুপাশেই রয়েছে বড় বড় পুকুর।

নারায়ণপুর বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম, আমিনুর রহমান, তুহিনুর রহমানসহ অনেকে সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করেছেন।

এলাকাবাসী আরো জানিয়েছেন, সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষে উদ্বোধন করার জন্য যে নামফলকটি তৈরি করা হয়েছিল সেটিও উদ্বোধনের আগেই নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়।

চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বলেন, সেতুর সংযোগ সড়কটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের ছিল। যার ফলে কি কারণে ফাঁটল দেখা দিয়েছে তা তারাই বলতে পারবেন। বর্তমানে এলজিডির নিকট হস্থান্তর করা করা হয়েছে। তাই অতিদ্রুত কি ভাবে সংস্কার করা যায় সেই চেষ্টা করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App