নিরাপত্তা কম ও শ্রমিকদের নগদ বেতন হয় এমন পোশাক কারখানাই টার্গেট করে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় ৪-৫ মাস আগেই ইনক্রেডিবল ফ্যাশনস্ পোশাক কারখানাটির অর্থ ডাকাতির পরিকল্পনা করে তারা। তবে কারখানাটির কর্তৃপক্ষ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বেতন পরিশোধ ও মানি এসকট করে টাকা আনায় দুবার তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। কিন্তু গত ৭ জুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপ্রতুলতার সুযোগে প্রতিষ্ঠানটির অর্ধকোটি টাকার বেশী ডাকাতি করে নিতে সফল হয় চক্রটি।

রবিবার (১৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্ণেল সারওয়ার বিন কাশেম।

সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, গাজীপুর কালিয়াকৈরে মাইক্রোবাসে গুলি করে ইনক্রেডিবল ফ্যাশনস্ লি: গার্মেন্টস এর প্রায় ৮০ লাখ ২২ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় মামলা হলে তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। গত শনিবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে রবিবার বেলা ১১ টা পর্যন্ত র‌্যাব-১ এর একটি দল রাজধানীর মগবাজার, ডেমরা, কড়াইল বস্তি ও ঢাকার সাভার এবং আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির মূলহোতা মো. জলিলসহ (৪০) তার সহযোগী মো. রিয়াজ (৩৬), মাহমুদ (৪০), মোঃ ইসমাইল হোসেন ওরফে মামুন (৪৫) ও মনোরঞ্জন মন্ডল ওরফে বাবুকে (৪১) আটক করে।

তিনি বলেন, এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির নগদ ৩০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, ১ হাজার ১০০ ইউএস ডলার, ১টি প্রিমিও প্রাইভেট কার, ৩টি মোটর সাইকেল, ১টি বিদেশী রিভলবার, ১টি বিদেশী পিস্তল, ২১ রাউন্ড গোলাবারুদ, ২টি ম্যাগজিন, ৩টি পাসপোর্ট ও ৩৮টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, মনোরঞ্জন মন্ডল ওরফে বাবু ডাকাতির ঘটনারদিন বেলা সোয় ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে মোবাইলে জলিলকে জানায় পোশাক কারখানা থেকে টাকা আনতে মাইক্রোবাস ব্যাংকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছে। গাড়িটি সফিপুর পৌঁছালে সেখানে অপেক্ষমান তিনটি মোটরসাইকেল নিরাপদ দূরে থেকে অনুসরণ করতে থাকে। কালিয়াকৈর থানাধীন খাড়াজোড়া এলাকায় নির্মানাধীন উড়ালসড়কের দক্ষিণ পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়িটি পৌঁছানো মাত্রই জলিল ও সাগর মাহমুদকে বহনকারী মটর সাইকেল মাইক্রোবাসের সামনে গিয়ে গতি রোধ করে। ফলে বেতন বহণকারী মাইক্রোবাসটি সম্পূর্ণ থেমে যায়।

সারওয়ার বলেন, দ্রুত ডাকাত দলের সদস্যরা লোহার হাতুড়ী দিয়ে বেতনবাহী গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে দেয় ও পিস্তলসহ অতর্কিতভাবে মাইক্রোবাসের সামনে গ্লাস লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে একটি গুলি ফ্যক্টরীর সহকারী মার্চেন্ডার রাজীব মজুমদার শুভর গলায় লাগে ও গুরুতর জখম হয়। পরবর্তীতে তারা মাইক্রোবাসের ভিতরে থাকা ফ্যাক্টরীর লোকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক টাকা ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত চলে যায়। এলোপাতারি গোলাগুলির ফলে দূঘটনাক্রমে তাদের দলের মূল হোতা জলিল হাতে গুলিবিদ্ধ হয়। ঢাকায় আসার পথেই টাকা ভাগ করে নেয় তারা।

তিনি বলেন, মূলত ৮-১০ জনের একটি সিন্ডিকেটে এই ডাকাতির ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এরা সবাই পেশাদার অপরাধী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। পলাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুতই তাদের আটক করা হবে।