×

অর্থনীতি

রাজস্বের বিশাল লক্ষ্যমাত্রায় নতুন কৌশলই ভরসা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২০, ১০:০৮ এএম

প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বিশাল রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নতুন কৌশলেই ভরসা করতে হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)। রাজস্ব বাড়াতে নতুন অর্থবছরে অনলাইন রিটার্নে কর রেয়াত, কালো টাকার বিনিয়োগ সুবিধা, গার্মেন্টসের উৎসে কর বাড়ানো, অর্থপাচার রোধে ৫০ শতাংশ জরিমানাসহ কর হার কমিয়ে বেশকিছু কৌশল নেয়া হয়েছে করোনাকালীন বাজেটে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় বাড়ানোর কৌশল হিসেবে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে কালো টাকা অর্থনীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসতে ঢালাও বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিলে উৎসাহ ও রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে কর রেয়াতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এছাড়া রাজস্ব বাড়ানোর কৌশল হিসেবে নন-লিস্টেট প্রতিষ্ঠানের করপোরেট ট্যাক্স আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৩২ শতাংশ করা হয়েছে। রাজস্ব আয়ের আরেক বড় খাত গার্মেন্টসের উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। সার্কুলার অনুযায়ী বর্তমানে দশমিক ২৫ শতাংশ বিদ্যমান আছে। কর হার কমিয়ে নতুন অর্থবছরে ৫ লাখ করদাতা তৈরির পরিকল্পনার কথাও প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে। এনবিআরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নতুন কৌশলের বিষয়ে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য বেশকিছু কৌশল নেয়ার কথা প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে। এর মধ্যে কালো টাকার বিনিয়োগ, গার্মেন্টসের উৎসে কর, অর্থপাচার রোধে ৫০ শতাংশ জরিমানা, কর রেয়াত প্রদান, করহার কমানোসহ বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে করোনাকালীন সময়ে এসব কৌশলের ওপর নির্ভর করে এই বিশাল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে এনবিআরের আয়কর খাতকে রাজস্ব আদায় করতে হবে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। করোনা সংকট চলমান থাকলে বা নিয়ন্ত্রণে না আসলে তা অত্যন্ত দুরূহ। প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি খাতের করহার ৫ শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সংস্থার জরিপ বলছে, করোনার কারণে প্রায় ৬ কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছে। তারা কর দেবে কীভাবে। মূল কথা করোনা ভাইরাস যত তাড়াতাড়ি বশে আসবে তত তাড়াতাড়ি অর্থনৈতিক কর্মকাÐ সচল হবে। এই মুহূর্তে দেশে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধগামী। কতদিন এই সংকট চলবে নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছে না। তাই এসব কৌশল কতটা কাজে লাগবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অর্থনীতিবিদদের। সূত্র জানায়, রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের তিনটি খাতের মধ্য ভ্যাটকে প্রধান খাত হিসেবে ধরা হয়েছে। ভ্যাট থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলেও এক বছরেও ইএফডি সরবরাহ করতে পারেনি এনবিআর। বাজেট বক্তৃতায় আগামী অর্থবছরে পর্যায়ক্রমে সরবরাহের কথা বলা হয়েছে। ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর আসে মূলত গ্রাহক থেকে। একজন গ্রাহক যেসব পণ্য কিনেন তার থেকে দোকানিরা ভ্যাট কেটে সরকারের কোষাগারে জমা দেন। কিন্তু দেশে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনো নিবন্ধনহীন রয়েছে। এছাড়া করোনা সংকটে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। তাই এর প্রভাব পড়বে ভ্যাট আদায়ে। আর করোনার কারণে আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে শুধু অর্থপাচার রোধে জরিমানার বিধান সংযোজন করা হয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশকিছু পণ্যে আগাম কর থাকলেও নতুন বাজেটে প্রত্যাহার করা হয়েছে। স্বর্ণ আমদানিতে আগাম কর কমানো হয়েছে। এ ছাড়কে আয় বাড়ানোর কৌশল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এসব কৌশল অবলম্বন করে কাস্টমস খাতকে রাজস্ব আদায় করতে হবে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App