×

মুক্তচিন্তা

প্লিজ, কিছু একটা করুন

Icon

nakib

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২০, ০৯:৩২ পিএম

পত্রিকার শিরোনামে আইসিইউর জন্য হাহাকার বিষয়ক সংবাদ দেখে হৃদয় বেদনায় ভরে যায়, শঙ্কায় ভয় আরো তীব্র হয়! ‘আইসিইউ নিয়ে এত হাহাকার’! সর্বশেষ চট্টগ্রামে স্ত্রী নিজের স্বামীকে নিয়ে চমেকের সামনে যেভাবে অসহায়ের মতো বসে ছিল তা দেখে পুরো বাংলাদেশ কেঁদেছে! প্রতিদিনই এমন দেখতে দেখতে আমাদের মতো মানুষগুলো সামান্য বেঁচে থাকার আশাও হারিয়ে ফেলছে! পত্রিকার ছবির দিকে চেয়ে চেয়ে কল্পনা করলাম স্বজনের মৃত্যু দেখে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর যখন কিছুই করার থাকে না তখনকার অনুভূতি! কোথাও আইসিইউ নেই! চারদিকে হাহাকার আর হাহাকার! ইত্তেফাকের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতি আইসিইউর বিপরীতে এখনই ১৫ জন করে অপেক্ষারত। ডাক্তাররাও আছেন সিরিয়ালে। কিছু বরাদ্দ আছে ভিআইপিদের জন্য। বাবার সামনে ছেলে, বোনের সামনে ভাই মৃত্যুর এ মিছিল কীভাবে আমাদের সহ্য হবে! অক্সিজেনের অভাব বারবার করে চিনিয়ে দিচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের চরম দৈন্যতা! কিন্তু এখন এগুলো নিয়ে ভাবার সময় নেই। যতদ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা করতে হবে অক্সিজেনের আর আইসিইউ বেডের। মানুষকে বাঁচাতে মরিয়া স্বজনের আর্তনাদের চিৎকার পুরো ভালোবাসার জাতিকে এক ভয়ানক কূপের মধ্যে ফেলে দেবে। র‌্যাবের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অক্সিজেন সরবরাহ প্রক্রিয়া দারুণ সফলতা দেখিয়েছে। সে প্রক্রিয়া রাষ্ট্র নিতে পারে। হাইফ্লো অক্সিজেনের নিশ্চয়তা করার জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা কারখানা তাদের নিজেদের প্রয়োজনে অক্সিজেন উৎপাদন করে। সরকার তাদের কাছ থেকে অক্সিজেন নেয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। প্রয়োজনে এ বিষয়টি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে একটি টিম গঠন করে কাজ করানো যেতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব কোনো জায়গায় কেউ মানছে না বা মানার চেষ্টা করেও পারছে না অনেক ক্ষেত্রেই। সামনের দিনগুলোতে যাতে আহাজারি শুনতে না হয় সে প্রয়োজনেই একটি নিয়মের মধ্যে আনা হোক সব কিছু। প্রয়োজনে কারফিউ দিয়ে কিছু দিন সব বন্ধ রাখা হোক। রোগ ছড়ানো কমানো না গেলে কোনো কিছুরই সুফল আসবে না। আমাদের দেশ জনবহুল দেশ। সরকার একা কিছুই এখানে করতে পারবে না। প্রয়োজন সব ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। সরকারি দলসহ প্রত্যেকটি দলের ছাত্র সংগঠন রয়েছে প্রয়োজন তাদের এগিয়ে আসা। স্বেচ্ছাসেবা বৃদ্ধি না করতে পারলে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি প্রচণ্ড রকমভাবে ব্যাহত হবে। তার সঙ্গে খুঁজে বের করতে হবে এমন মানুষকে যারা বিভিন্নভাবে মানুষকে অসচেতন করে এবং মাস্ক পরতে অনুৎসাহিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নিয়মের মধ্যে থেকে বাংলাদেশকে এগোতে না পারলে নিশ্চিত অন্ধকার সময় অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। করোনা ভাইরাসের পুরো ভিন্নধর্মী আচরণ প্রদর্শন করছে আমাদের দেশে। একদিকে টেস্ট কম অন্যদিকে আমাদের বিভিন্ন ধরনের অসচেতনতা বাড়িয়ে দিচ্ছে ভীতি আর অমানবিকতার দৃষ্টান্ত। আর যেন এমন কান্না দেখতে না হয়। কোনো রোগী কেন একটি রাষ্ট্রে হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরবে? কী হলো বসুন্ধরার অনেক বেডের সে করোনা হাসপাতালের? আকিজের হাসপাতালের কাজই বা কতদূর? কেন প্রতিটি উপজেলার প্রতিটি ক্লিনিক তাদের সেবা দিতে কার্পণ্য করছে? এসব বিষয় দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে রাষ্ট্রেরই। নইলে এমন দুর্দশা প্রতিদিন আমাদের কুরে কুরে খাবে। দয়া করুন। অনেক কিছু শেষ হওয়ার আগেই কিছু একটা করুন। শ্রীপুর, গাজীপুর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App