×

রাজনীতি

প্রস্তাবিত বাজেট দুর্নীতি সহায়ক বৈষম্যমূলক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২০, ০৫:২৬ পিএম

প্রস্তাবিত বাজেট দুর্নীতি সহায়ক বৈষম্যমূলক

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে দুনীতি সহায়ক বৈষম্যমূলক বাজেট বলেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনাকালীন বাজেট কেমন হওয়া দরকার তা-ই অনুধাবন করতে পারেনি সরকার। তাই প্রত্যাশিত ‘অসাধারণ বাজেটের’ বদলে নিতান্তই একটি 'সাধারণ বাজেট' এর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। যেখানে জনগণের জীবন জীবিকাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ জুন) বিকেলে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানাতে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, মানুষের জীবন ও অর্থনীতিকে এ মহাসংকট থেকে উদ্ধারের জন্য যেখানে প্রয়োজন ছিল গতানুগতিক বাজেট কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে একটি বিশেষ করোনা বাজেট, তা না করে অর্থমন্ত্রী ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার একটি গতানুগতিক অবাস্তবায়নযোগ্য বাজেট ঘোষণা করেছেন। এ বাজেট জাতিকে হতাশ করেছে। বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, এই বাজেটে করোনা কাটিয়ে একটি টেকসই অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে তোলার কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নেই। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য প্রত্যাশিত অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। বাজেটে বর্তমানে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে কার্যকর সুশাসন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বস্তরে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে উপেক্ষা করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ খাতের উন্নয়নের জন্য বাজটে সংস্কারমূলক কোনো বরাদ্দ নেই। স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৩ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেন। এছাড়া করোনা মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করা হলেও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ দেয়া হলো জিডিপির ১.৩% মাত্র। মির্জা ফখরুল বলেন, বাজেটে যেসব প্রকল্প নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে সেসব প্রকল্পগুলোকেই সরকারের বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অথচ পরিবহন খাত ও বিদ্যুৎ খাতসহ এমন অনেক খাতে অনেক বেশি পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা এ মুহূর্তে প্রয়োজন ছিল না। বাজেটের আয় ও ব্যয়ের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফখরুল বলেন, বাজেটে কেবল সংখ্যার হিসাব মিলানো হয়েছে যেখানে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৮২ হাজার ১১ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরকেই আয় করতে হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা (অর্থাৎ ৫০% এর অধিক প্রবৃদ্ধি) যা বাস্তবতা বিবর্জিত। ব্যাংকগুলোর পক্ষে প্রস্তাবিত ৮৫ হাজার কোটি টাকা যোগান দেয় সম্ভব হবে না। এত বিপুল রাজস্ব আহরণে ব্যর্থতা ও বাংকগুলোর পক্ষে ঘাটতি অর্থায়নে অক্ষমতার কারণে বাজেট মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। বাজেটে ব্যাংকিং খাতসহ অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের কোনো সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাব নেই উল্লেখ করে বিএনপির পক্ষে বলা হয়, শীর্ষ ঋণ খেলাপিদের ঋণ পরিশোধে আরও সময় বৃদ্ধি করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এটা তো কোনো সংস্কার নয়। যা ব্যাংকিং খাতকে আরো সংকটের দিকে ঠেলে দিবে। আর্থিক শৃঙ্খলা আরো ভেঙে পড়বে। তাছাড়া জিডিপি ও রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা দৃশ্যমানভাবেই প্রতারণার শামিল। ফখরুল বলেন, এ বাজেটে করোনাকালীন মানবেতর জীবন যাপন করছে দিন আনে দিন খায়- এ শ্রেণির মানুষের জন্য এবং বেকারত্ব মোকাবেলায় কোনো গঠনমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সীমিত আয়ের বৃহৎ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বার্থকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বাজেটে কিছু প্রণোদনার কথা উল্লেখ করলেও ঐসব আর্থিক প্রণোদনা নিতান্তই ব্যাংক লোন। রুগ্ন ব্যাংকিং খাত এ অর্থ বহন করতে না পারলে প্রস্তাবিত আর্থিক প্রণোদনা মিলবে না। কর্মহীন প্রবাসীদের দেশে পুনর্বাসন ও আত্মনির্ভরশীল করে তোলার কোনো সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা বাজটে নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাজেটে পোশাক খাতের অস্থিরতা কাটানোর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অর্থনীতিকে ডাইভার্সিফাই করার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা প্রস্তাবিত বাজেটে নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App